সফল ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মিজানুর রহমান সততা এবং দৃঢ় মনোবলই তার শক্তি

কে.এ.সাদাত : পেশীশক্তি, অবৈধ অর্থের দাপট, রাজনৈতিক প্রভাব, হামলা, মামলা কোনো কিছুই দাবিয়ে রাখতে পারেনি তাকে। দৃঢ় মনোবল এবং সততাকে পুঁজি করে এলাকার জনগণের পূর্ণ সহযোগিতা ও ভালোবাসা নিয়ে সকল প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে আজ সে সফলতার শীর্ষে। পিরোজপুরের নেসারাবাদ (স্বরুপকাঠী) উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী মিজানুর রহমান। বিগত ২০২৪ সালের ০৫ আগস্টের পট পরিবর্তন পরবর্তী সময়ে সারা দেশের ন্যায় স্বরুপকাঠী উপজেলার বেশির ভাগ ইউপি চেয়ারম্যান এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। দু -একজন ইউপি চেয়ারম্যান বর্তমানে এলাকায় উকি ঝুঁকি মারলেও তারা নাকি কথিত ক্ষমতাধরদের মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে নিয়েছে বলে জনশ্রুতি আছে। কিন্তু গাজী মিজানুর রহমানকে পালাতেও হয়নি এবং কাউকে ম্যানেজ করারও প্রয়োজন হয় নি। এলাকা এবং এলাকার বাহিরে আত্মগোপনে থাকা ঐ সকল চেয়ারম্যানরা সকলেই ছিলো আওয়ামী লীগের অপকর্মের দোষর। তারা সকলেই ইউনিয়ন পরিষদকে তাদের ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করেছিল। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপটে তারা নিজ এলাকার ভিন্ন মতের লোকজনের নিকট ছিলো মুর্তিমান আতংক। ইউনিয়ন পরিষদের সকল প্রকার বরাদ্দের উপর ছিল তাদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ। বরাদ্দকৃত অর্থ ও মালামাল উপজেলায় বসেই ভাগবাটোয়ারা করত। ইউপি সদস্যগন ও সাধারণ জনগন তা জানতই না। কিন্তু গাজী মিজানুর রহমান কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হননি। তাই তার কর্মকান্ড সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম।
২০২৩ সালের ১৭ জুলাই গুয়ারেখা ইউনিয়নের উপ- নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে এই ইউনিয়নের অবস্থা ছিল শোচনীয়। তথ্যসূত্রে জানা যায় ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে রাজউক ইন্জিনিয়ার পলাশ শিকদারের পিতা আব্দুর রব শিকদার গুয়ারেখা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।পলাশ শিকদার তার অবৈধ টাকার জোরে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে এলাকায় তান্ডব চালিয়ে তার পিতাকে বিজয়ী করান। ইউনিয়ন বাসীর কপালে নেমে আসে দুর্ভোগ। পুত্রের প্রত্যক্ষ ইন্ধন ও পলাশ বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে একের পর এক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, হাট বাজার সহ সর্বত্র আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে। ইউপি সদস্যরাও কোনঠাসা হয়ে পড়েন। কিন্তু বিধি বাম। মাত্র দেড় বছরের মাথায় আব্দুর রব শিকদারের আকস্মিক মৃত্যু হয়। কিন্তু রাজউক ইন্জিনিয়ার পলাশ শিকদার তার টাকার জোরে তার গৃহিণী স্ত্রীকে ছাত্র লীগ নেত্রী সাজিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার সব আয়োজন সম্পন্ন করে। ইউনিয়নবাসী ঐ দানব পরিবারের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও রপ্তানিমূখী গার্মেন্টস ব্যাবসায়ী গাজী মিজানুর রহমানকে জনগণের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে অবতীর্ণ করান। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন না। জনগণের প্রার্থী হিসেবে গুয়ারেখা ইউনিয়নের জনসাধারণকে দানবীয় পরিবারের শোষণ শাসনের হাত থেকে রক্ষা করতে মাঠে নামেন। জনগণের সমর্থন ও ভালোবাসা নিয়ে সফলকামও হয়েছেন তিনি।
প্রতিপক্ষের সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রম, হামলা, মামলা, অপপ্রচার সবকিছুই তিনি সামলিয়েছেন ঠান্ডা মাথায় ও বুদ্ধিমত্তার সাথে। নির্বাচনে বিজয়ী হয়েও তিনি সঠিক সময়ে শপথ নিতে পারেন নি। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অজুহাতে উচ্চ আদালতে রিট করে তার শপথ গ্রহন বিলম্বিত করায়। শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে বিজয়ীর বেশে তিনি দায়িত্বভার গ্রহন করেন। ইউপি সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে ইউনিয়ন পরিষদের সকল বরাদ্ধই এখন সঠিকভাবে বন্টন হচ্ছে। প্রয়োজনে নিজের পকেট থেকে ব্যায় নির্বাহ করেন চেয়ারম্যান । এলাকার সাধারণ জনগণের সাথে আলাপ করে জানা যায় গাজী মিজানুর রহমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আমরা পূর্বের চেয়ে শান্তিতে আছি। তার কোনো চামচা ও ক্যাডার বাহিনী নেই। আমরা সরাসরি তার সাথে কথা বলতে পারছি। তিনি নিয়মিত আমাদের খোঁজ খবর রাখেন। আমরা আবারও ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবে তাকেই দেখতে চাই। সার্বিক বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে গাজী মিজানুর রহমান বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়নি। আমাকে জনগণ নির্বাচিত করেছে। আল্লাহ যতদিন আমাকে সুযোগ দিবে ততদিনই সততার সাথে জনগণের খেদমত করে যাব ইনশাআল্লাহ।