ইউপি নির্বাচনের হাওয়া (০৩)
কে.এ.সাদাতঃ আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে পিরোজপুর জেলার নেসারাবাদ উপজেলার সমূদয়কাঠী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ নাজমুল ইসলাম (সাইদ) জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। সংসদ নির্বাচনের আগেই স্হানীয় নির্বাচন হতে পারে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনার প্রেক্ষিতে ইউপি নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা উঁকিঝুঁকি মারছে। সমূদয়কাঠী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম সাইদ গত বছরের ০৫ আগস্টে আওয়ামী দুঃশাসনের অবসানের পর এলাকায় জানান দিয়েছেন আল্লাহ যদি সুস্থ শরীরে বাচিয়ে রাখেন তবে আবারও নির্বাচিত হয়ে ইউনিয়নবাসীর পাশে থাকতে চাই। তিনি আরো বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের দানবীয় আচরণে শিক্ষিত ও ভালো মানুষ স্হানীয় সরকার নির্বাচনে অনীহা প্রকাশ করে দূরে সরে যায়। ফলে অশিক্ষিত, অবৈধ টাকার মালিক, সরকার দলীয় মাস্তানরাই স্হানীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ কর্তা ছিল। তার ঘনিষ্ঠজনদের মাধ্যমে জানা গেছে এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহনের মাধ্যমে তিনি জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগের একচেটিয়া নির্বাচনের ফলে এলাকার মানুষ ভোট প্রদান করা ভুলতে বসেছিল। বর্তমান অন্তরবর্তীকালীন সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ এবং পেশীশক্তি মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নাজমুল ইসলাম সাইদ এ প্রতিবেদককে আরো বলেন, আমি ২০০৩ সালে বিএনপি এবং আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে জনগণের ভোটে সমূদয়কাঠী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিন্তু একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ১/১১ এর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমাকে কারাবাস করতে হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের জমানায় আমি দুইটি নির্বাচনে অংশ গ্রহন করি। প্রতিবারই হাইব্রিড আওয়ামী লীগ খ্যাত সবুর তালুকদার বাংলার কসাই হিসেবে পরিচিত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের ক্ষমতাকে ব্যাবহার করে আমার কর্মী সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করে। ভোটের দিন দলীয় ক্যাডারদের ব্যাবহার করে ভোটারদের জনসম্মুখে টেবিলে ভোট দিতে বাধ্য করে আমার বিজয় ছিনিয়ে নেয়।
নাজমুল ইসলাম সাইদ সম্পর্কে এলাকার সাধারণ জনগণের সাথে আলাপ করে যায় তিনি মানুষকে দিতে জানেন, নিতে জানেন না। সমূদয়কাঠী ইউপির সাবেক এক সদস্য জানান সাইদ চেয়ারম্যানের আমলে ইউপির সকল বরাদ্দই ইউপি সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হত। এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানা গেছে তিনি চেয়ারম্যান না থাকলেও বিগত দিনগুলোতে এলাকায় তিনি এলাকায় যোগাযোগ অব্যাহত রেখে চলেছেন। মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। এলাকায় এবং ঢাকায় তার পরিচিত কেউ বিপদে পড়লে তিনি পাশে দাঁড়িয়েছেন সর্বদা। তিনি রাজনৈতিক অংগনে জনাব আনোয়ার হোসেন (মঞ্জু),র নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি জেপি,র সাথে সম্পৃক্ত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সমূদয়কাঠী ইউনিয়নে তার একটি ব্যাক্তিগত ভোট ব্যাংক রয়েছে। বিগত বছরগুলোতে ঐ ভোট ব্যাংকে হানা দিতে পারেনি কেউ। তার সাথে যুক্ত হয়েছে যুব ভোটাররা। তারা সাইদ ভক্ত হলেও ভোটার হওয়ার পর থেকে ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি। এবার তারাও আটঘাট বেধে মাঠে নামার সুযোগ পেলে ভোটের হিসাবে নাজমুল ইসলাম সাইদ এর পাল্লা ভাড়ী হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগ তাদের অতীত কর্ম কান্ডের জন্য নির্বাচনী মাঠে নামার দুঃসাহস দেখাবে না। বিএনপির একাধিক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে থাকবে। হিন্দু মুসলমান সমান জনসংখ্যা অধ্যুসিত এই ইউনিয়নের ভোটাররা বিএনপির প্রার্থীদের এড়িয়ে চলবে। আওয়ামী লীগ ও হিন্দু কমিউনিটির লোকজন একটি তৃতীয় মাধ্যমের দিকে ধাবিত হবে। সেক্ষেত্রে নাজমুল ইসলাম সাইদ রয়েছেন সুবিধাজনক অবস্থানে।