কে.এ.সাদাত : দক্ষিণের জেলা পিরোজপুর ০২ আসন থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী আবদুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত। ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেসারাবাদ উপজেলা নিয়ে এ আসনটি গঠিত। ভোটার সংখ্যার দিক দিয়ে অন্য দুটি উপজেলার সমন্বিত ভোটারের চেয়ে অধিক ভোটার সম্বলিত উপজেলা নেসারাবাদ । আর এ উপজেলারই বিএনপির সদস্য সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন আবদুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত। উচ্চ শিক্ষিত এ নেতার মেধা এবং সাংগঠনিক দক্ষতা নেসারাবাদ উপজেলা বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে এসেছে। রাজনৈতিক এবং সামাজিক কোনো বিতর্ক কখনোই তাকে স্পর্শ করতে পারে নি। বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে বিভাগ ও জেলা নেতৃ বৃন্দের সাথে সাংগঠনিকভাবে তার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। প্রতিটি কর্মসূচীতেই তৃনমুল নেতা কর্মীদের নিয়ে তার রয়েছে সরব উপস্থিতি। বিগত স্বৈর শাসনের সময় নিজ উপজেলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের সংগঠিত রাখতে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন তিনি। স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার বিরোধী আন্দোলনের মাঠের লড়াকু সৈনিক তিনি। বিএনপির ঘাঁটি হিসাবে খ্যাত বৃহৎ জনগোষ্ঠী অধ্যুসিত নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন তিনি। তিনি একজন সফল ব্যাবসায়ী এবং সনামধন্য স্বরুপকাঠী কলেজিয়েট একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। আধুনিক মন মানসিকতা সম্পন্ন এ নেতা আগামী সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর ০২ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসাবে এলাকায় ব্যাপক জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকাবাসীও আগামী সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের কান্ডারী হিসাবে আবদুল্লাহ আল বেরুনী সৈকতকেই দেখতে চায়।
এ প্রতিবেদকের সাথে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন আমার রক্ত মাংসে বিএনপির রাজনীতি জড়িত। আমার পিতা অধ্যক্ষ এম.এ. হাকিম ছিলেন নেসারাবাদ উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। সকল বিতর্কের উর্ধে থেকে রাজনীতিতে আমি আমার পিতার আদর্শকেই লালন করে চলেছি।
উপজেলার শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কোনো নেতাকে আওয়ামী লীগের দালাল বলা হয় কেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের আমলে কারো কারো বিতর্কিত ভুমিকার জন্য তাদেরকে দালাল বলা হতে পারে। এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রী ও স্হানীয় নেতৃ বৃন্দের সাথে তাদের সখ্যতা ছিল এবং আছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের সেই সখ্যতার একাধিক স্ব -চিত্র প্রতিবেদনই তার প্রমান।
নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপি নাকি আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে? উত্তরে তিনি বলেন বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়ে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করিনি। তাই আমাকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হতে হয়। নেসারাবাদ উপজেলার বিএনপির অনেক নেতা কর্মীকে কারাবরণ করতে হয়। কিন্তু তখন যে সব নেতা আওয়ামী লীগের সাথে একই মঞ্চে উঠে সেখ হাসিনা ও তার সরকারের উন্নয়নের গুণগান গেয়েছেন তারাই এখন আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন করছে। তিনি আরো বলেন নেসারাবাদ উপজেলা বিএনপির একটি শক্ত ঘাটি। এখানে বিএনপি নেতাকর্মীতে খরা লাগেনি যে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন করে দল ভারী করতে হবে। তবে কেউ যদি করে থাকে তবে তা বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে তাদের ছত্র ছায়ায় থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার প্রতিদান দিচ্ছে। এটা কেউ তার ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য করতে পারে। এর সাথে নেসারাবাদ উপজেলা বিএনপির কোনো সম্পর্ক নাই।
নেসারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপি এবং এর অংগ সংগঠনে আওয়ামী লীগ, মহারাজ লীগ, সন্ত্রাসী, এবং সেখ হাসিনার সাথে গনহত্যা মামলার আসামীদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের ক্ষোভ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হিসাবে বিষয়গুলির উপর নজর রাখছি। আমাদের কাছে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে তালিকা আসার পর আমরা যাছাই বাছাই করে প্রকৃত নেতা কর্মীদেরই দলের যোগ্য পদে স্থান দিব। এ বিষয়ে দলের হাইকমান্ড থেকে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। আর গনহত্যা মামলার আসামীদের দলে স্থান দেয়ার প্রশ্নই আসে না। তারা তো স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের দোসর।
বিগত ০৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আপনার উপজেলায় বিএনপি নেতা কর্তৃক মাহফিল বন্ধ করা, সেনা সদস্যের সাথে অপ্রীতিকর ঘটনা, আলকির হাট এবং চাঁদকাঠীতে মারামারির ঘটনা, পাটিকেলবাড়ী গ্রামে চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রদলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা এই বিষয়গুলিকে আপনি কিভাবে দেখছেন? উত্তরে তিনি বলেন, যতটুকু তথ্য পেয়েছি নান্দুহার গ্রামের মাহফিল বন্ধের নেপথ্যে ইন্ধন রয়েছে পুনর্বাসিত আওয়ামী লীগের। তাদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়েছে বিএনপির এক উপজেলা শীর্ষ নেতা। আলকিরহাট ও চাঁদকাঠীতে মারামারিতে মূখ্য ভূমিকা পালন করে বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীরা। পাটিকেলবাড়ী গ্রামে ছাত্রদলের নেতা কর্মীদের অতি উৎসাহী আচরণের সুযোগ নিয়েছে স্হানীয় একটি বিরোধী মহল। তিনি বলেন পলাতক আওয়ামী লীগ গর্ত থেকে উকি দিয়ে পরস্হিতি অশান্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান।
আগামী সংসদ নির্বাচনে নেসারাবাদ উপজেলা থেকেই বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার জন্য জনসাধারণের মধ্য থেকে জোর দাবি উঠছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন এটা নৈতিক দাবি। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নেসারাবাদ উপজেলাকে পিরোজপুর ০১ আসনের সাথে সংযুক্ত করা হয়। দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেসারাবাদ উপজেলা থেকে কোনো দলই প্রার্থী মনোনয়ন দেয়নি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন করেনি। কিন্তু ঐ নির্বাচনে আওয়ামী সরকার নেসারাবাদকে পিরোজপুর ০২ আসনের সাথে সংযুক্ত করে। তাদের ঐ পাতানো নির্বাচনেও জোটের শরীক প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী উভয়ই ছিল ভান্ডারিয়া উপজেলার। সুতরাং আগামী সংসদ নির্বাচনে নেসারাবাদ উপজেলা থেকে প্রার্থী মনোনয়ন পাওয়া যৌক্তিক দাবি।
যদি চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং আপনি যদি পিরোজপুর ০২ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়ে যান তাহলে আপনার প্রস্তুতি কেমন? জবাবে আবদুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত বলেন, দলীয় হাইকমান্ড মনোনয়ন দিলে আমার দিক থেকে আমি সার্বিকভাবে প্রস্থুত।
এই মূহুর্তে পিরোজপুর ০২ আসনের বিএনপির নেতাকর্মী তথা আপামর জনসাধারণের উদ্দেশ্য আপনার বানী কি? উত্তরে তিনি বলেন পবিত্র মাহে রমজানের শেষদিকের সিয়াম সাধনায় মুসলিম জাতী ব্যাস্ত। কয়েক দিন পরেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই নেসারাবাদ, কাউখালি এবং ভান্ডারিয়া উপজেলার সর্ব স্তরের জনসাধারণকে জানাচ্ছি পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগাম শুভেচ্ছা। ঈদ মুবারক। তিনি বলেন, বিএনপির নেতা কর্মীদের নিয়ে দুঃসময়ে মাঠে ছিলাম এখনো আছি এবং থাকব ইনশাআল্লাহ।