লংগদুতে ফুল বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শুরু বিজু উৎসব।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
লংগদুতে কাপ্তাই লেকে ফুল বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান উৎসব বৈসাবি। এ সময় শত শত চাকমা ও তংঞ্চগ্যা তরুণ-তরুণী নদীর তীরে এসে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে প্রার্থনা করে এবং ফুল নিবেদন করে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে রাঙামাটি জেলাধীন লংগদু কাপ্তাই লেকের নদীর তীরে ফুল বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিজু উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। ফুল বিজু অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাঘাইছড়ি সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান, অন্যান্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লংগদু ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিক্রম বলি চাকমা, তিনটিলা বনবিহার আহ্বায়ক চম্পা চাকমা, সদস্য সচিব দীনেশ চাকমা সহ বৌদ্ধ সম্প্রাদায়ের সকল ধর্মালম্বীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন৷

এ ফুল বিজুর মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ আয়োজনে চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যা শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে পানিতে ফুল ভাসানোয় অংশ নেয়। এই ফুল বিজুর মাধ্যমে গঙ্গাদেবীর মঙ্গল কামনায় ও পুরনো বছরের সব দুঃখ, গ্লানি ধুয়ে মুছে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় তারা। এর মাধ্যমে বান্দরবানে শুরু হলো চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের বর্ষবরণের আয়োজন।

এই দিনে সাধারণত অনেকে বৌদ্ধ বিহারে ভিক্ষুদের বুদ্ধ মূর্তি দান, অষ্ট পরিষ্কার দান, সংঘ দান ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিন্ডু দানসহ নানান ধর্মীয় কাজ করেন থাকেন। চাকমা বিজু উৎসবে ঐতিহ্যবাহী খাবার অনুষ্ঠান ‘পাঁজন তোন’ রান্না। বিজুর দিনে পাহাড়ি বাড়িগুলোতে অতিথি আপ্যায়নের তালিকায় প্রথম দিকে থাকে এই খাবার। ১১টি পদ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪১টি পদ দিয়ে রান্না করা হয় ‘পাঁজন’। অনেকে আবার এর চেয়ে বেশি পদও ব্যবহার করেন। ফুলবিজু শেষে মূল বিজুর দিনে কমপক্ষে সাতটি বাড়িতে পাঁজন খাওয়া আবশ্যক।

আজ সকাল থেকে লংগদুতে ইয়াছিন মার্কেট এলাকায় কাপ্তাই নদীর পাড়ে বিভিন্ন বয়সের হাজারো মানুষ ফুল ভাসাতে আসেন। এবার প্রথম প্রহরে কাপ্তাই লেকে ফুল ভাসিয়ে সুস্থ থাকার প্রার্থনা করেছেন তাঁরা।