পিরোজপুর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি চান মাঝির বিরুদ্ধে হত্যা প্রচেষ্টা ও চাঁদাবাজির মামলা

বিশেষ প্রতিনিধি : পতিত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের দোসর হিসাবে পরিচিত পিরোজপুর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও দূর্গাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ চান মিয়া মাঝির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী ও হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। পিরোজপুর সদর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের চুংগাপাশা গ্রামের মৃত সামছুল হকের পুত্র সাংবাদিক মোঃ জহিরুল ইসলাম কলিম বাদী হয়ে পিরোজপুর সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। পিরোজপুর সদর থানার মামলা নং ০৪/৬২ তারিখ ০৭/০৪/২০২৫ ইং। ধারা ৩৪১/৩০৭/৪২৭/৩৮০/৩৮৫/৫০৬ দঃবিঃ। উক্ত মামলায় চান মিয়া মাঝিসহ ১০ জনের নামোল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও ২৫-৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। মামলার অন্য আসামিরা হল ০২. নাসির উদ্দীন হাওলাদার ০৩.মুরাদ হোসেন মাঝি ০৪.হারুনার রশীদ বাদশা ০৫.মাসুদ মাঝি ০৬. রশিদ শাহরিয়ার রেশাদ মাঝি ০৭.লোকমান হোসেন হাওলাদার ০৮. মহিউদ্দিন হাওলাদার ঝন্টু ০৯. সামশুদ্দিন কালু ১০. মোঃ সাখাওয়াত হোসেন মোল্লা।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর ০১ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শামীম বিন সাইদীর পক্ষে নির্বাচন করার জন্য বাদী ঢাকা থেকে বাড়িতে যান। ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা আনুমানিক ৭ ঘটিকায় ১,২,৩ ও ৪ নম্বর আসামিদ্বয় তাদের বাড়ির সামনে বাদীর গাড়ি আটকিয়ে তাকে ঢাকা চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয় অন্যথায় তাকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি প্রদান করে এবং তার সাথে থাকা পোস্টার ও লিফলেট কেড়ে নিয়ে পানিতে ফেলে দেয়। বাদী ভীতু হয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান এবং বিষয়টি এলাকার বিভিন্ন লোকজনকে অবহিত করেন। পরের দিন ২৯ ডিসেম্বর পিরোজপুর জেলা সদরে গিয়ে বাদী জহিরুল ইসলাম কলিম নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে বিকেলে বাড়িতে চলে যান। পিরোজপুর থেকে বাড়ি আসার খবর পেয়ে ১,২,৩ ও ৪ নং আসামির নেতৃত্বে অন্যান্য এজাহার নামীয় আসামি ও অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা বাদীকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে বন্দুক, পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিকাল ৫ টার দিকে তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বোমা ফাটিয়ে আতংকের সৃষ্টি করে। বাদী ঘরের পিছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন।

মামলা সূত্রে ও বাদী সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম কলিমের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাকে না পেয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তার ঘরে প্রবেশ করে মালামাল ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা যাওয়ার সময় তার বৃদ্ধ মা এবং স্ত্রীকে এ বলে শাসিয়ে যায় যে, কলিম বিএনপি করে এবং দেশে থাকতে হলে আমাদেরকে ২০ লক্ষ টাকা দিতে হবে অন্যথায় তাকে জানে মেরে ফেলব। সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম কলিম আরো জানান তিনি ঢাকায় চলে গেলেও এজাহার নামীয় আসামিরা তার বাড়িতে থাকা বৃদ্ধ মা এবং স্ত্রীকে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। তার ৮ বছরের শিশু সন্তানকে অপহরণ করার হুমকি দিতে থাকে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চাঁদা দাবি ও পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য ২০২১ সালে পরিবারের সদস্যের ঢাকায় নিয়ে আসতে বাধ্য হই।

তিনি আরো জানান আসামিরা সকলেই পতিত স্বৈরাচারের জেলা ও স্হানীয় পর্যায়ের নেতা কর্মী। ০৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সময়ে এলাকায় তাদের মুখের কথাই ছিল আইন। ১নং আসামি চান মিয়া মাঝি সব সময় সশস্ত্র অবস্থায় চলাফেরা করত। ০২ নং আসামি সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য, যুবলীগ নেতা এবং মাফিয়া সম্রাট সাবেক সাংসদ মহিউদ্দিন মহারাজের দোসর। তারা সকলেই বিগত স্বৈর শাসনের জমানায় এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তাদের ভয়ে এলাকার মানুষ মুখ বুঝে সকল অত্যাচার সহ্য করতে বাধ্য ছিল। তিনি আরো বলেন আমি ঢাকায় সাংবাদিকতা করি তারপরেও এলাকায় তাদের সন্ত্রাসী দাপটের নিকট ছিলাম অসহায়। এখন আইনের সহায়তায় বিচার পাব বলে মামলা দায়ের করতে সাহস পেয়েছি।