নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মোহাম্মদপুর এলাকার মুর্তি মান আতঙ্ক আওয়ামী লীগের অর্থদাতা সৈয়দ আরাফা রহমান ।
হত্যা,সন্ত্রাস, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি যার নিত্যদিনের কাজ । তথ্য সূত্রে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলন সৈয়দ আরাফা রহমান আন্দোলনকারীদের উপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করার ঘটনা এখন এলাকায় চাউর। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাকওয়া ট্যূরস এন্ড ট্রাভেলস এর মালিক ব্যবসা চাঙ্গা রাখতে বিগত সতের বছর আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক,সাদেক খান এমপির সাথে তার সবচেয়ে বেশি দহরম মহরম গড়ে তোলেন। বড় নেতাদের সাথে গভীর সম্পর্ক থাকার কারণে আদাবর ও মোহাম্মদপুর এলাকায় ছাত্রলীগের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেন।
তথ্য সুত্রে আরো জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে আরাফা রহমান বাড্ডা এলাকায় আজিজুল হক নামের এক লোকের দুচোখে গুলি করে নষ্ট করে দেন।
আজীজুল হকের দায়ের করা মামলায় ৬৪ নং আসামি যার নং সি আর ৬৩/২৫ থানার এফ আই আর নং ০৬/২৫।
তথ্য সূত্রে আরো জানা যায়,আরাফার বাবা সৈয়দ ওবায়দুর রহমান ১৯৯৫ সালে পুরানা পল্টনে তাকওয়া ট্যূরস এন্ড ট্রাভেলসের মাধ্যমে হজ্জ ও উমরাহ’র কাজ শুরু করেন। তখন তাদের অফিস ছিল পুরানা পল্টন সাব্বির টাওয়ারে। বর্তমানে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট কমপ্লেক্স টাওয়ারের তৃতীয় তলায়। সেখান থেকে আরাফা চালিয়ে যাচ্ছে তার প্রতারণার কার্যক্রম। মানুষের কষ্টের টাকা লোপাট করে ঢাকা শহরে ঘরে তোলে অট্টালিকা। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ক্রয় করেন শত কোটি টাকার জমি। দিনাজপুর ও ঢাকায় কয়েকটি বিলাস বহুল বাড়ি তৈরি করেন। স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য মোহাম্মদপুর শেখের টেক এলাকার পিছিকালচার হাউজিং আদাবরে সাত তলা ভবন নির্মাণ করে। বিদেশে লোক পাঠানোর নাম করে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ঢাকায় আলীশান বাড়ি তৈরি করেন। নিজের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগের সখ্যতা ছেড়ে এখন বিএনপির দূর্গে পাড়ি জমান। জুলাই আগস্টের ছাত্র জনতার আন্দোলনে ১৭ জুলাই মোহাম্মদপুর টাউনহল এলাকায় সাধারণ ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে থেকে নিজে গুলি করে মানুষ হত্যা করেছেন। তার গ্ৰামের বাড়ি নিরসা পলাশ বাড়ি শালখুরিয়া ইউনিয়ন হাসেম হত্যার অন্যতম আসামি। তা তার এলাকার অনেকেই আমাদের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়,তার কাছে কোনো লোক টাকা চাইতে আসলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালাতে থাকেন। বিদেশে মেয়ে লোক পাঠানোর নাম করে সৌদি আরবে তাদেরকে বিক্রি করে দেন। সৌদি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ব্যবসা করেন কোটি কোটি টাকা।
হজ্বের লোক পাঠানোর সময় বেশি টাকা নিয়ে হজ্জ পালনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেবা দিতেন না। হজ্জ যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী হোটেলের খাবারের বিল নেয়া হয় এবং নিম্ন মানের খাবার পরিবেশন করতেন। মক্কা শরীফের কাছাকাছি থাকার জন্য হোটেল বরাদ্দ দেয়ার কথা থাকলেও রাখতেন বিশ কিলোমিটার দূরে। হজ্বের কার্যক্রম শেষে কুরবানী করার জন্য টাকা নেওয়া হলেও একজনের টাকা দিয়ে দশ জনের কুরবানী সম্পূর্ণ করে থাকেন। হাজীরা কোনো প্রতিবাদ করলে তাদের উপর চালান অত্যাচারের ষ্ট্রিম রোলার।
এইভাবেই চলে আরাফার কোম্পানির হজ্বের ব্যবসা। এব্যাপারে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার শাকখুড়িয়া ইউনিয়নের জামাল সাহেব জানান, আমি তাকওয়া ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের মাধ্যমে ২০১০ সালে হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় যাই। তাদের চাহিদা অনুযায়ী সকল টাকা পরিশোধ করি সেখানে গিয়ে তাদের খারাপ আচরণে আমরা হতবাক হয়ে যাই,থাকা, খাওয়া ও কুরবানীর অব্যবস্থাপনায় আমরা অতিষ্ট হয়ে পরি। আমরা কয়েকজন হাজী প্রতিবাদ করলে তাদেরকে বিভিন্নভাবে নাজেহাল করে অপমান করে।
২০২৩ সালে প্রায় ৫০ জন হাজীর সাথে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো খারাপ ব্যবহার করেন। হজ্ব শেষে দেশে ফিরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করলেও মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আঁতাত করে বিষয়টি মাটি করে দেয়।
আরাফার সাথে বিয়ের আগে সানজিদা নামের এক মেয়ের সাথে দীর্ঘদিন প্রেম চলে আসছিল। ঐ মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে একাধিক বার দুবাই লিভটুগেদার করার খবর তার পরিবারের সদস্যরা অনেকেই জানেন। বিয়ের দাবিতে সানজিদা আত্মহত্যা করতে গেলে
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাহায্য বিষয়টি মোটা অংকের জরিমানার মাধ্যমে রফাদফা করেন। আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপি নেতাদের সাথে বোল পাল্টিয়ে মোটা অংকের ডোনেশন দিয়ে নিজের আত্ম প্রকাশ ঘটিয়ে এখন তিনি একজন বড় নেতা।
এসকল বিষয়ে আরাফা রহমানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যা শুনেছেন তা সত্যি নয়।আমি ব্যবসা করি আর খাই। আমার বিরুদ্ধে অনেক শত্রু দাঁড়িয়ে আছে। আমি কোনদিন রাজনীতি করিনি। কোন মেয়ের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল না। আপনারা তদন্ত করে দেখেন আমার কোনো দোষ আছে কিনা। যদি আপনারা তদন্ত করে কিছু পান, তাহলে যে শাস্তি দিবেন তা মাথা পেতে নেব। ভুক্তভোগী অনেক হজ্জ যাত্রী সরকারের উচ্চ মহলের কাছে দাবি জানান প্রতারক আরাফার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তদন্ত পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।
