নবজাগরণ ডেস্ক : পতিত স্বৈরাচারের দোসররা কেউই রেহাই পাবে না। তাদের কৃতকর্মের জন্য অবশ্যই তাদেরকে শাস্তির মুখোমুখি দাড়াতে হবে। পিরোজপুর ০২ আসনের বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল্ বেরুনী সৈকত একথা বলেছেন। গত ৩ মে নবজাগরণ অনলাইন সংস্করণে ” মহারাজের দোসর আব্দুল হকের গোপন মিশনে সংগঠিত হচ্ছে নেছারাবাদ আওয়ামী লীগ, নিরব দর্শকের ভূমিকায় বিএনপি ” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন জাতীয় পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত স্বৈরাচারের দোসররা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে অনেকে গ্রেফতার হয়েছে। অনেকে দেশের বাইরে এবং ভিতরে আত্মগোপনে রয়েছে। তাদের সকলকেই আইনের আওতায় আসতে হবে এবং বিচারের সম্মূখীন হতে হবে।
তিনি পিরোজপুরের মাফিয়া সম্রাট খ্যাত সাবেক সাংসদ মোঃ মহিউদ্দিন মহারাজ সম্পর্কে বলেন, পারিবারিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেট গড়ে তুলে হাজার কোটি টাকা লোপাট করে মামলার জালে জড়িয়ে আজ সে পলাতক। লোপাটের টাকার জোরে পিরোজপুর জেলা তথা নেছারাবাদ উপজেলায় মহারাজ এবং তার ভাইয়েরা মিলে রামরাজত্ব সৃষ্টি করেছিল। এ অঞ্চলের সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি নষ্ট করেছে মহারাজ ও তার পরিবার। তাদের পরিবারের অপকর্মের এলাকা ভান্ডারিয়া ও কাউখালী উপজেলা পর্যন্ত ব্যাপ্তি থাকলেও বিগত সংসদ নির্বাচনে তা নেছারাবাদ উপজেলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়। তিনি বলেন নেছারাবাদ উপজেলা আওয়ামী লীগের একদল অর্থলিপ্সু নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা সামিল হয় মহারাজের মহা অপকর্মের সাথে। ০৫ আগস্টের পট পরিবর্তনে মহারাজের দোসর হিসাবে পরিচিত উপজেলা পর্যায় থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের একটি বিরাট অংশ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। কারো কারো বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মামলাও হয়েছে।
মহারাজের দোসর হিসাবে খ্যাত এবং বিএনপির জন্য ক্ষতিকর প্রানী আব্দুল হক সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে আবদুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত বলেন সে আওয়ামী লীগের লোক তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বিগত দুটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ৫ ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সে কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রশাসন ম্যানেজ করে সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও নেসারাবাদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহিদুল ইসলাম মুহিতকে পরাজিত করে বলে এলাকাবাসী জানে। ৬ ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও মহারাজ এম পির প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ খরচ করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি অংশ আব্দুল হকের পক্ষে নির্বাচন করেছে বলে বিএনপির ত্যাগী নেতা কর্মীদের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল্ বেরুনী সৈকত বলেন, বিগত দুটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় নির্দেশ মেনে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহন করেনি। এটা ছিলো তাদের নিজেদের মধ্যে পাতানো খেলা। তাদের ঐ খেলায় আমরা দর্শক ছিলাম মাত্র। বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আব্দুল হকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারনা চালানো ও ভোট দানের যে অভিযোগ রয়েছে তার সঠিক প্রমান নাই। কারণ কাস্টিং ভোট হিসাব করলেই দেখা যায় বিএনপির নেতাকর্মীরা ভোট কেন্দ্রে যায় নি।
আব্দুল হককে নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপি অর্থের বিনিময়ে পুনর্বাসন করছে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে আব্দুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত বলেন, অসম্ভব। আমরা কোনো স্বৈরাচারের দোসরকে পুনর্বাসন করি না। যদি কারো বিরুদ্ধে পুনর্বাসন করার অভিযোগ উঠে থাকে তবে তার সাথে উপজেলা বিএনপির কোনো সম্পর্ক নাই। এটা কারো ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য করতে পারে। যেহেতু বিগত দুটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন করেনি। আব্দুল হক ঐ নির্বাচনে অংশগ্রহন করে স্বৈরাচারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে। সে আওয়ামী লীগের পিরোজপুর জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজেরও নির্বাচনকালীন অর্থ বন্টনের দায়িত্বে ছিল। তাই সে একজন আপাদমস্তক আওয়ামী লীগ। তার বিরুদ্ধে বিগত দুটি নির্বাচনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ের সকল কর্ম কান্ডের তদন্ত হবে।
আব্দুল হক নেছারাবাদ আওয়ামী লীগকে গোপনে সংগঠিত করছে এবং বিএনপি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে এলাকায় আলোচনা হচ্ছে, এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে আবদুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত বলেন, আব্দুল হক নেছারাবাদ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো দায়িত্বশীল লোক নয়। তারপরও দুইবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থাকায় এবং সাবেক এম পি মহিউদ্দিন মহারাজের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে তার পরিচিতি আছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সে তা করছে কিনা তার উপর উপজেলা বিএনপি থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা সজাগ দৃষ্টি রাখছে। যে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ একবার গর্তে ঢুকে গেছে তাদেরকে আর মাথা বের করে ফোঁস ফাঁস করতে দেয়া হবে না।