কাউখালী উপজেলায় রাজনীতির হালচাল বিএনপির নেই কোনো প্রার্থী , শক্ত অবস্থানে জেপি, নিরব আওয়ামী লীগ , দল গোছাচ্ছে জামায়াত

.এ. সাদাত : দক্ষিণের জেলা পিরোজপুরের সংসদীয় আসন পিরোজপুর ০২ এর সবচেয়ে ছোট উপজেলা কাউখালী। নেছারাবাদ উপজেলা ১০ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এবং ভান্ডারিয়া উপজেলা ৭ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। সেখানে কাউখালী উপজেলা মাত্র ৫ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ভোটার সংখ্যার দিক দিয়েও এ উপজেলাটি রয়েছে সর্ব নিম্ন পর্যায়ে। যেখানে নেছারাবাদ উপজেলার ভোটার সংখ্যা ১,৯২,০০০ এবং ভান্ডারিয়া উপজেলার ভোটার সংখ্যা ১,৩৬,০০০ সেখানে কাউখালী উপজেলায় ভোটার সংখ্যা মাত্র ৬৫,৪০০ জন। সর্বাধিক ভোটার অধ্যুসিত নেছারাবাদ উপজেলাটি কখনো পিরোজপুর ০২ আবার কখনো পিরোজপুর ০১ আসনের সাথে সংযুক্ত হলেও কাউখালী উপজেলার অবস্থান কখনো নড়চড় হয়নি।

কাউখালী উপজেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেসারাবাদ উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো শাহ আলম পিরোজপুর ০২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভান্ডারিয়া উপজেলা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিউদ্দিন মহারাজ সংসদ সদস্য হন। এ ছাড়া বিগত ৩৮ বছর বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু কাউখালী উপজেলা থেকে কেউই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নি। একটি সূত্র জানায় আয়তন এবং জনসংখ্যা কম হওয়ার কারণ বিবেচনায় দলীয় মনোনয়নও পাচ্ছে না এ উপজেলা থেকে।

আগামী সংসদ নির্বাচনে এ উপজেলা থেকে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে কেউ নেই। এ ক্ষেত্রে নেছারাবাদ ও ভান্ডারিয়া উপজেলা থেকে বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে। তারা ইতিমধ্যে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে কাউখালী উপজেলা বিএনপি অন্য দুটি উপজেলা থেকে মনোনীত প্রার্থীর উপর নির্ভর করে আছে। মুলত দীর্ঘ দিন পিরোজপুর ০২ আসন থেকে জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় এ উপজেলা থেকে সংসদ নির্বাচন করার মতো সাংগঠনিক অবস্থান কোনো দলই গড়ে তুলতে পারে নি।

কাউখালীতে এখনো আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, র নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি জেপি রয়েছে শক্ত অবস্থানে। এ দলের স্হানীয় নেতৃবৃন্দ ও মঞ্জু ভক্ত সাধারণ জনগণ মনে করছে আগামী সংসদ নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুই পিরোজপুর ০২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন। তাই তারা ওনার পথ চেয়ে অপেক্ষা করছেন। দীর্ঘ দিন এমপি ও মন্ত্রী থাকার কারণে কাউখালী উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন তিনি। তাই এলাকার জনসাধারণের তিন প্রজন্মের কাছেই রয়েছে তার ব্যাপক পরিচিতি ও গ্রহনযোগ্যতা।

কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ করে মহারাজ লীগের অনুসারীরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছে। মূল ধারার আওয়ামী লীগ যারা এলাকায় অবস্থান করছে তাঁরাও নিরব ভুমিকায় রয়েছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আগামী সংসদ নির্বাচনে হয়তোবা আওয়ামী লীগ অংশ গ্রহন করবে না। যদি অবস্থা তাই হয় এবং জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু যদি নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন তাহলে আওয়ামী লীগ নিরবে তাকেই ভোট দিয়ে যাবে।

ইতিমধ্যে পিরোজপুর ০২ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামী শামীম সাইদীকে তাদের দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। কাউখালী উপজেলায় জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক অবস্থান এখন পর্যন্ত খুবই দূর্বল। তাই তাদের প্রার্থী মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ায় তারা আটঘাট বেধে মাঠে নেমেছেন। ইতিমধ্যে ঘরে ঘরে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। সে তুলনায় অন্য রাজনৈতিক দলের কর্মসূচী গতানুগতিক। এলাকাবাসীদের মতে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত চড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।