যুদ্ধ শুরু করেছে ভারত, শেষ করবে পাকিস্তান”-উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢাললেন সিরাজ-উল-হক

নবজাগরণ বিশ্লেষণ প্রতিবেদন-
দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধের আশঙ্কা যখন ঘনীভূত, তখন পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির সিরাজ-উল-হক দিলেন আগুনে ঘি ঢালার মতো এক বক্তব্য। তার স্পষ্ট উচ্চারণ—“যুদ্ধ শুরু করেছে ভারত, শেষ করবে পাকিস্তান।” এ বক্তব্য কেবল উত্তেজনা বাড়ায়নি, বরং দ্ব্যর্থহীন বার্তা দিয়েছে যে পাকিস্তানের রাজনীতিতে উগ্র জাতীয়তাবাদী মনোভাব কতটা জোরালো হচ্ছে।

এই বক্তব্য কেবল কি জাতীয়তাবাদ, না কি কৌশলগত হুমকি?

সিরাজ-উল-হকের এই মন্তব্যে দু’টি দিক স্পষ্ট: ১. ভারতকে আগ্রাসী শক্তি হিসেবে তুলে ধরা। ২. পাকিস্তানকে প্রতিক্রিয়াশীল নয়, বরং যুদ্ধের পরিণতি নির্ধারণকারী হিসেবে উপস্থাপন।

এমন বক্তব্য সাধারণ রাজনৈতিক ভাষণ মনে হলেও এর ভেতর লুকিয়ে থাকতে পারে আন্তর্জাতিক বার্তা। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বর্তমানে অস্থির। অর্থনৈতিক সংকট, ক্ষমতাকেন্দ্রের দ্বন্দ্ব, এবং প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর চাপের মুখে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে জাতীয়তাবাদের আশ্রয় নিচ্ছে। সিরাজ-উল-হক সেই রাজনৈতিক ন্যারেটিভের প্রতিচ্ছবি।

ভারতের অবস্থান ও পাকিস্তানের প্রেক্ষাপট

ভারতের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সম্পর্কে পাকিস্তানের দাবিকে এখনো আন্তর্জাতিকভাবে পূর্ণ সত্যতা মেলেনি। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করছে, এটি সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষার্থে ‘প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা’ হিসেবে নেওয়া পদক্ষেপ। এই প্রেক্ষাপটে সিরাজ-উল-হকের বক্তব্য আরও বেশি উস্কানিমূলক এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পাকিস্তানের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।

বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে এই উত্তেজনার তাৎপর্য

বাংলাদেশ সরাসরি এই সংঘাতে না থাকলেও ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানগত কারণে প্রভাবিত না হয়ে পারবে না। একদিকে ভারত, অন্যদিকে মুসলিম বিশ্বের একটি প্রভাবশালী অংশ পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে চাই সচেতন কূটনীতি ও নিরাপত্তার উচ্চ প্রস্তুতি।

শেষ কথা: বক্তব্য নয়, বরং বাস্তবতা নির্ধারণ করবে ভবিষ্যৎ যুদ্ধের রেখা

সিরাজ-উল-হকের বক্তব্য রাজনীতিক উদ্দেশ্যে প্রদত্ত হোক বা জাতীয় আবেগ জাগানোর উপায়—আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার পক্ষে তা নয়। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ মানে শুধু সীমান্ত সংঘর্ষ নয়; এর ছায়া পড়ে পুরো দক্ষিণ এশিয়ায়। এখন সময়, উত্তেজনার আগুনে ঘি নয়, বরং শান্তির জল ঢালার।