নবজাগরণ প্রতিবেদন :
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত এক সময় নিজেকে গণতন্ত্রের বাতিঘর হিসেবে পরিচয় দিলেও, সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির ভেতরের ও বাইরের কার্যক্রম বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়-এখন এটি একটি চরম হিন্দুত্ববাদী, সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। ভেতরে চলছে মুসলিম নিধন, বাইরে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর ওপর আগ্রাসন।
সীমান্তে আগ্রাসন- বাংলাদেশের প্রতি এক সূক্ষ্ম যুদ্ধনীতি
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF) নিয়মিতভাবে বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি চালাচ্ছে, নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এ নিয়ে প্রতিবাদ জানালেও ভারতের মধ্যে কোনো মানবিক জবাবদিহিতা নেই। শুধু তাই নয়, প্রতিবছর শীত মৌসুমে পুশ-ইন বাড়ে, যখন শত শত অনুপ্রবেশকারী মুসলিম বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়, যাতে ভারতের ভেতরের ‘ডেমোগ্রাফিক পলিসি’ বাস্তবায়ন হয়।
কাশ্মীর ও পাকিস্তান বিরোধী নীতি
২০১৯ সালে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয় মোদী সরকার। এরপর হাজার হাজার কাশ্মীরিকে কারাবন্দী করা হয়, ইন্টারনেট বন্ধ করা হয় দীর্ঘদিন, মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। সীমান্তে পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টি করে বিজেপি সরকার জাতীয়তাবাদী আবেগ উসকে দিয়ে নির্বাচনেও সুবিধা নিচ্ছে।
নেপাল-চীন ইস্যু: ভূরাজনৈতিক দখলচেষ্টা
ভারত একদিকে নেপালের কালাপানি, লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরা এলাকার উপর দাবি জানিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করছে; অপরদিকে, চীনের সঙ্গে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এসব ঘটনা প্রমাণ করে-ভারত এখন একটি আগ্রাসী রাষ্ট্রের মতো আচরণ করছে।
ভারতের মুসলিমদের অবস্থা: গণহত্যার আশঙ্কা
ভারতের মুসলমানরা এখন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। দিল্লি দাঙ্গা, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA), NRC প্রক্রিয়া, মসজিদ ধ্বংস, হিজাব নিষেধাজ্ঞা-এসব মিলিয়ে মুসলমানদের জীবনে এক নিঃশব্দ গণহত্যা চলছে। মোদী সরকারের নীরব সমর্থনে চরম হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো মুসলমানদের লক্ষ্য করে সহিংসতা চালাচ্ছে।
মুসলিম বিশ্বের করণীয়?
আজ সময় এসেছে বিশ্ব মুসলিমদের এক হওয়ার। প্রতিবাদ, কূটনৈতিক চাপ, মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে সক্রিয় করা, ভারতীয় পণ্য বয়কট ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের চিত্র উন্মোচন-এসব পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। ধর্মীয় ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়ানো এক মহান দায়িত্ব।
বিশ্ব আজ এক সংকটের মুখে। যদি এখন নীরব থাকা হয়, তাহলে ইতিহাসে আমাদের অবস্থান হবে কাপুরুষের দলে। ভারতের সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে-সাংবাদিকতা, কূটনীতি ও জনগণের শক্তিকে অস্ত্র করে