বিশেষ প্রতিনিধি : নিজেদের মধ্যে কোনো গ্রুপিং নয়, আমরা সকলে একই পরিবারের সদস্য। যারা নির্যাতিত এবং ত্যাগী তাদেরকে বিএনপির নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। আমরা সকলেই জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী। শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা কখনোই আদর্শ বিসর্জন দেয় না। তারা স্বৈরাচারের দোষর হতে পারে না। আমাদের ঐক্য বিনষ্ট হতে দেব না। গতকাল শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে পিরোজপুর ০২ আসনের বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ও নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত একথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন সাম্য ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মানে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সদস্য সংগ্রহের জন্য ফরম বিতরণ ২০২৫ উপলক্ষ্যে এক বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির মিয়ারহাট কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে আব্দুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত সঞ্চালকের দায়িত্বও পালন করেন। বক্তব্য উপস্থাপনে তিনি আরো বলেন, আমরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে ছিলাম। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দীর্ঘ সতের বছর অনেক কষ্ট ভোগ করেছেন। নেছারাবাদ উপজেলার অনেক নেতা কর্মীকে হামলা, মামলা, আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশি নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এর পরেও যারা স্বৈরাচারের সাথে আতাত করেনি তাদেরকেই নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। তিনি আরো বলেন দানবীয় সরকার বিদায় নিয়েছে। সামনে বিএনপির সু- সময় আসবে ইনশাআল্লাহ। এ সময় অনেক দুধের মাছিকে দেখা যাবে। তাদের বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তিনি বলেন স্বৈরাচারের রাঘব বোয়ালরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। কিন্তু তাদের দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তাদেরকে পূনর্বাসন করে নিজেদের পায়ে কুড়াল মারা যাবে না। তিনি আরো বলেন ০৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে গুটিকয়েক নেতাকর্মীর অতি উৎসাহী আচরণ ও বিতর্কিত কর্ম কান্ডের জন্য বিএনপির অর্জন ম্লান হতে পারে না। হাতে গোনা কিছু লোক চাঁদাবাজি, সালিশ বানিজ্য ও দখল বানিজ্যের সাথে জড়িত। তারা বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সাথে থেকে এ কাজ করেছে এখন বিএনপির নাম ভাংগিয়ে অপকর্মে লিপ্ত। তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন এদের অতীত ইতিহাস খুঁজে দেখুন। এদের কোনো দল নাই। তাই তাদের চিহ্নিত করুন এবং প্রতিহত করুন।
আব্দুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে বিএনপির নিরংকুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করতে হবে। সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সংগঠিত থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে কোনো কাদা ছোড়াছুড়ি করা যাবে না। তাহলে বিরোধীরা এ সুযোগটি গ্রহন করবে। আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে যাতে সদস্য হওয়ার সুযোগ নিয়ে স্বৈরাচার পুনর্বাসিত হতে না পারে। ত্যাগী ও নির্যাতিতদের কাউন্সিলে ভোটার হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। সদস্য ফরম পূরণ করার পর যাচাই বাছাই হবে। তাই ফরম পূরণের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি বলেন কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু ভাইকে পিরোজপুর জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই আমাদের সকলকেই ওনার কাজ বাস্তবায়ন করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন ০৫ আগস্টের পর দেশে ৩০ টিরও অধিক রাজনৈতিক দল আত্ম প্রকাশ করেছে। জামায়াতে ইসলামী হিন্দু শাখা চালু করেছে। সকল দল বিএনপির ঐক্য বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন ঐক্যের কোনো বিকল্প নাই। ঐক্যবদ্ধ হয়েই দানব হটিয়েছি। স্বৈরাচার আমাদের ঐক্য বিনষ্ট করতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না। তিনি আরো বলে যেহেতু আমরা জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বলিয়ান। বেগম খালেদা জিয়া ও আমাদের নেতা তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করে একটি সুন্দর দেশ বিনির্মান করতে আমরা দৃঢ় প্রত্যয়ী।
নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ওয়াহিদুজ্জামান অহিদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা সন্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সমন্বায়ক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন। উক্ত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এলিজা জামান, পিরোজপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ রিয়াজ উদ্দীন রানা। এছাড়া নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন তালুকদারসহ নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।