নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫ দুপুরে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল চত্বরে স্বেচ্ছাসেবী ছাত্র-ছাত্রীদের একটি দল “পরিচ্ছন্নতা ও শৃঙ্খলা সপ্তাহ” উপলক্ষে পেশাগত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে হাসপাতালের পরিবেশ-পরিদর্শনে নামে।
তারা ওয়ার্ড-ঘুরে নোংরা রোগীকে অকার্যকর বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য ডাম্পিং, হ্যান্ড-স্যানিটাইজার খালি ডিসপেনসার ও পোকামাকড়ে ছেয়ে থাকা খাবার পরিবেশনের দৃশ্য নথিবদ্ধ করে।
শিক্ষার্থীরা দায়িত্বপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক রতন কুমার রায়-এর নিকট লিখিত প্রস্তাবনা ও ছবি-ভিডিও হস্তান্তর করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানায়।
হাসপাতালের ছাদ ভেঙে পড়া ছবিটি হাতে পেতেই রতন কুমার রায় ক্ষিপ্ত হন। অভিযোগপত্র ছুড়ে ফেলে তিনি অকথ্য গালাগাল শুরু করেন, শেষে নিজের প্যান্টের জিপার খুলে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে “কি করতে পারিস?” বলে হুমকি ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করেন। হতভম্ব শিক্ষার্থীরা মোবাইলে ঘটনা ধারণ করলে তিনি তা মুছে ফেলার নির্দেশ দেন এবং “ক্যারিয়ার শেষ করে দেব” মর্মে হুমকি দেন।
কেন এটি কেবল ‘অশালীনতা’ নয়, রাষ্ট্রবিরোধী মানসিকতা
১. সংবিধানের ৭(১) অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার মালিক জনগণ; সেই জনগণের প্রতিনিধি এবং কর-ভর্তুকি-নিবৃত হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক যখন জনস্বার্থ অবজ্ঞা করে, তখন তা সরাসরি সাংবিধানিক স্বেচ্ছাচারিতা।
২. দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ধারা ১৫ অনুযায়ী সরকারি পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
৩. নারী-পুরুষ নির্বিশেষে লাঞ্ছনার ঘটনাটি পেনাল কোড ১৮৬০-এর ধারা ৫০৯-এ (শ্লীলতাহানি) স্পষ্টভাবে দণ্ডনীয়।
চাই চার স্তরের প্রতিবিপ্লবী পদক্ষেপ
১ আইনি ব্যবস্থা-হুমকি ও অশালীনতার ভিডিওসহ ৫০৯ ধারায় মামলা ভুক্তভোগী বা সহায়ক মানবাধিকার সংগঠন
২ প্রশাসনিক তদন্ত-স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটি’ গঠন, ৭ কর্মদিবসে রিপোর্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
৩ জনতার নজরদারি-সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে #হাসপাতালহোকজনতার ক্যাম্পেইন; ভিডিও-প্রমাণ ছড়িয়ে দেওয়া নাগরিক সমাজ ও শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক
৪ ব্যবস্থাগত সংস্কার-বর্জ্যব্যবস্থাপনা, সিসিটিভি কভারেজ, হেল্পলাইন নম্বর দৃশ্যমান করা হাসপাতাল পরিচালনা বোর্ড
কীভাবে আপনি অংশ নেবেন
জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে জনগণের নিকট। হাসপাতালের করিডোরে আজ সেই ক্ষমতা ফেরানোর লড়াই শুরু হয়েছে-একদল শিক্ষার্থীর ঐকান্তিক সাহসে। রতন কুমার রায়-এর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি আমাদের লজ্জা নয়; বরং প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী-ব্যবস্থার পচন ধরা ছবি। এই পচন যদি আমরা এখনই সারাতে না পারি, তাহলে পরেরবার আমাদেরই সন্তানের মুখোমুখি হবে আরেক ‘রতন কুমার’।
অপরাধীর ক্ষমার নেই-হাসপাতাল হোক জনগণের নিরাপদ আশ্রয়, ক্ষমতার প্রদর্শনী মঞ্চ নয়।