গাজার আর্তনাদ, মানবতার করুণ পরাজয়

মো: আবু তাহের পাটোয়ারী :
গাজা এখন আগুনে ঝলসে যাওয়া এক শিশুর নাম, যে কাঁদে না-কারণ তার আর কাঁদার শক্তি নেই। তার চোখ পুড়ে গেছে, বুক চেপে ধরা মা রক্তাক্ত। রাতজেগে বোমার আওয়াজে ভেঙে পড়া ঘরের নিচে শুয়ে আছে ভবিষ্যৎ।

আরবের রাজারা চুপ মেরে রয়েছে রাজত্ব রক্ষায়। তাদের দরবারে এখনো উৎসব চলে, সোনার থালায় খাবার উঠে- অথচ গাজার শিশুরা মায়ের দুধের বদলে বোমার গন্ধে ঘুমিয়ে পড়ে। তারা মুখ ঘুরিয়ে নেয়, কারণ গাজার দিকে তাকালে রাজ্যভ্রষ্ট হওয়ার ভয় জাগে।

মোড়লরা সাজেগুজে আসছে-কখনো শান্তির দূত হয়ে, কখনো মানবাধিকার বাঁচানোর নামে। কিন্তু তাদের পদক্ষেপ নয়, মুখভরা বিবৃতিই তাদের আসল অস্ত্র। ঘরে বসেই সভ্যতা রক্ষা করছে তারা, আর ধ্বংস হচ্ছে গাজার মাটি, মানুষ, মর্যাদা।

এই কি সভ্যতা? এই কি ইসলামি উম্মাহর সংহতি? এই কি মানবাধিকারের জয়গান?

প্রতিদিন গড়ায় নতুন মৃত্যুতে, প্রতিদিন গুনতে হয় শিশুর নিথর দেহ। গাজার কবরস্থানগুলোতে জায়গা ফুরিয়েছে, তবু বিশ্ব বিবেক এখনো নিস্তব্ধ। ফিলিস্তিনি শিশুদের আর কী দিলে তোমরা মানুষ ভাববে তাদের?

আজ তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত- ঘরে, পথে, মঞ্চে, অনলাইনে, কলমে ও কণ্ঠে গাজার পক্ষে দাঁড়ানো। কারণ এই যুদ্ধ কেবল ফিলিস্তিনের নয়, এটি মানবতার অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধ।

চলো, ঘর থেকে প্রতিবাদ করি। গাজার কান্না যেন আমাদের ঘুম না দেয়। আজ যদি আমরা না জাগি, কাল ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।
—-
গাজা!
আজ আর কোনো ভূখণ্ডের নাম নয়।
এটা এক রক্তাক্ত কান্না… এক নিঃশেষ হওয়া শিশু।
একজন মায়ের বুকভাঙা আর্তনাদ।

রোজ গড়িয়ে যায়,
আরবের রাজারা চুপ করে থাকে।
রাজত্ব রক্ষায় মুখ বন্ধ,
গাজার দিকে তাকানোর সাহস নেই।

বিশ্বের মোড়লরা আসে,
সাজেগুজে সভা করে, বিবৃতি দেয়।
মানবতা রক্ষা করবে বলে…
কিন্তু গাজার শিশুর গায়ে পড়ে কফিনের কাপড়।

শিশুরা আজ আর কাঁদে না,
তারা ক্লান্ত… ক্ষুধায়, ভয় আর মৃত্যুর গন্ধে।
একটা শিশুর মুখ পুড়ে গেছে,
তার মায়ের হাতে আর কোনো শব্দ নেই।
শুধু পাথরচোখে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে।

৫৩ হাজার প্রাণ ঝরেছে…
কিন্তু পৃথিবী নীরব।
জাতিসংঘ চুপ,
বিশ্ব বিবেক কোথায়?

আর কত মৃত্যু হলে বিবেক জাগবে?

দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশুরা।
হাসপাতালে নেই চিকিৎসা, নেই ওষুধ, নেই পানি।
আছে শুধু ছিন্নভিন্ন দেহ আর কষ্টের হাহাকার।
কুকুর খাচ্ছে মানুষের দেহ
তবুও বিবেক নাড়া দেয় না
এটা যুদ্ধ নয়,
এটা গণহত্যা।
এটা সভ্যতার মুখে থুথু ছুঁড়ে মারা।

হে মানুষ , এখনো কি আমরা চুপ থাকবো?

আজ যদি তুমি-আমি না জাগি,
কাল গাজার রক্তে আমাদেরই মুখ ধুয়ে যাবে।

ঘর থেকে আওয়াজ তোলো,
কলম ধরো, কণ্ঠে আগুন ধরাও।
এই পৃথিবী শুধু ক্ষমতাবানদের না,
এই পৃথিবী গাজার শিশুদেরও।

আজ আমরা বলবো-
দখলদার ইসরায়েল মানবতার শত্রু।
আর যারা চুপ করে,
তারা এই গণহত্যার নীরব সহযাত্রী।

চলো, জেগে উঠি…
চলো, গাজার পাশে দাঁড়াই…
কারণ মানবতা রক্তাক্ত, আর আমরা যদি না জাগি-ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।