মো:আবু তাহের পাটোয়ারী।।
সরকার সম্প্রতি ‘সরকারি চাকরি (সংশোধিত) অধ্যাদেশ-২০২৫ বাস্তবায়নের পথে এগিয়েছে। এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা আর আগের মতো ক্ষমতার অলঙ্ঘনীয় দূর্গে বসে থাকতে পারবেন না। বরং জনগণের প্রতি জবাবদিহির একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। এটাই তো গণতন্ত্রের মূল চেতনা-জনগণের টাকায় বেতনভোগী সরকারি কর্মচারীদের জনগণের সামনে জবাবদিহি করতে হবে।
এই সংস্কার অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো আমলার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, কিংবা শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ থাকলে কঠোর তদন্ত ও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার চাকরিচ্যুতি নিশ্চিত করা যাবে। এই প্রস্তাব শুনে সাধারণ নাগরিকরা যখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে, তখনই আশ্চর্যজনকভাবে দেশের সচিবালয় কার্যত অচল করে দিয়েছেন একদল নির্লজ্জ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তারা এই জনমুখী সংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন, যা সরাসরি প্রশাসনিক দায়িত্বে অবহেলা এবং রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান।
প্রশ্ন ওঠেছে-কারা এই আন্দোলনের পেছনে ইন্ধন দিচ্ছে? কাদের ভয় বা স্বার্থে আঘাত লাগছে এই জবাবদিহিমূলক সংস্কারে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানানো এখন শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, বরং গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে বিস্তারিত তদন্ত শেষে তা জনগণের সামনে আনাও জরুরি। আমলাতন্ত্রের দুর্নীতিবাজ অংশ যদি এই সংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তবে এটাই প্রমাণ হয় যে, এতদিন তারা দায়বদ্ধতার বাইরে থেকে নিজেদের ক্ষমতা ব্যবহার করতেন শুধুমাত্র ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষায়।
এই অবস্থায় সরকারের উচিত-যেসব আমলা এই সংস্কার বিরোধী ভুমিকায় আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের এই অধ্যাদেশ অনুযায়ীই বরখাস্ত করে জনমুখী, দক্ষ ও স্বচ্ছ প্রশাসনিক নতুন নিয়োগ দেওয়া। একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশে আর চলবে না ‘আমলাতন্ত্রই সর্বেসর্বা’ নীতিতে। এখন সময় এসেছে ‘জনগণই মালিক’ বাস্তবায়নের।
এই সংস্কারের মধ্য দিয়েই একটি নতুন অধ্যায় রচিত হতে পারে-যেখানে আমলা নয়, জনগণের স্বার্থ হবে শাসনের কেন্দ্রবিন্দু।