নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ডমুরুয়া ইউনিয়ন
আজ সকাল ৮:৩০ মিনিট। নিঃশব্দে নিভে গেল এক প্রজ্জ্বলিত আলোর শিখা- ৩নং ডমুরুয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও বিশিষ্ট সমাজসেবক জনাব অহিদুর রহমান (মইশাই মস্তান বাড়ি) আর আমাদের মাঝে নেই।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজ বাড়িতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন- রেখে গেলেন জনসেবার ইতিহাস, মানুষের হৃদয়ে স্থায়ী ছাপ, আর এক অনুচ্চারিত সংগ্রামের অধ্যায়।
এক জীবন, যিনি ছিলেন নিঃশব্দ বিপ্লবী
অহিদুর রহমান ছিলেন না কোনো বড় রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র, ছিলেন না শিল্পপতির বড় ভাই। তিনি ছিলেন এক জননন্দিত ‘জন প্রতিনিধি’ -যিনি জনপ্রতিনিধিত্বকে পদ বা প্রভাবের জন্য নয়, মানুষের জন্য ব্যবহার করতেন। যখন মাইক-টেলিভিশনের রাজনীতি চারদিকে স্লোগান তুলে মানুষ ভুলিয়ে রাখছে, তখন এই মানুষটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুনতেন কারো সংসারের খবর, কারো ছেলের স্কুলে ভর্তি হওয়া নিয়ে সমস্যার কথা।
এখানে রাজনীতির সংজ্ঞা ছিল অন্যরকম। এখানে মেম্বার মানে ছিল ‘মানুষের মানুষ’- যা আজকের দিনে বড় একটা রাজনৈতিক বিপ্লবের ইঙ্গিত।
ইতিহাসে লেখা না হলেও হৃদয়ে লেখা থাকবে
আমরা অনেক সময় ‘নেতা’ বলতে চিনি যারা ক্যামেরার সামনে দাঁড়ায়, প্রেস ব্রিফিং করে, মিডিয়ায় লাইভে আসে। অথচ এই সমাজসেবক ছিলেন একদম নেপথ্যের কণ্ঠস্বর। তিনি মুখে যত না বলতেন, কাজে তত বেশি প্রমাণ রাখতেন।
সেই প্রমাণ আজ গ্রামের প্রতিটি দরিদ্র ঘরে, সেই মেহনতী মানুষদের হৃদয়ে – যারা তার খোঁজে এখন কাঁদছে আমিও প্রিয় শ্রদ্ধেয় এ চাচার একজন আদরের সন্তান বিপদের সাথী।
বিদায়ের মুহূর্ত
আজ বিকেল ৪ ঘটিকায় মস্তান বাড়ি জামে মসজিদের সামনে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে;এসময় এলাকার সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তার জন্য এখন কেবল একটি প্রার্থনাই যথেষ্ট নয় -তার মতো প্রতিনিধি ও সমাজকর্মী তৈরির পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানাই।
আল্লাহ পাক, অহিদুর রহমান মেম্বারের জীবনের সকল গুনাহ মাফ করে দিন। তাকে জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করুন। শোকসন্তপ্ত পরিবার ও এলাকাবাসীকে দিন সবরে জামিল।
যাদের জন্য কাজ করেছেন, তারাই সাক্ষী হয়ে থাকবে
আজ এই সমাজের আসল বিপ্লবীর শোক সংবাদ যেন শুধুই হারানোর বেদনা নয়- হোক এক নতুন সামাজিক নবজাগরণের ডাক। যেখানে জনপ্রতিনিধিত্ব মানে হবে ‘জনগণের পাশে থাকা’। অহিদুর রহমান মেম্বার সেই পথ দেখিয়ে গেলেন।
শোক কামনায় মো: আবু তাহের পাটোয়ারী।