মো:আবু তাহের পাটোয়ারী:নবজাগরণ ডেস্ক:-
রাজনৈতিক বিভাজন, অবিশ্বাস ও দিশেহারার আবর্তে যখন পুরো জাতি, ঠিক তখনই আশার আলোকবর্তিকা হয়ে পুনরায় জাতির সামনে হাজির হয়েছেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস-একজন সফল অর্থনীতিবিদ, শান্তির দূত এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে বাঙালির মুখপাত্র।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার বৈঠক শুরু হয়েছে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে। এই বৈঠকের নেতৃত্বে আছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। এই মুহূর্তে তাঁর উপর শুধু একটি কমিশনের দায়িত্বই নয়-বরং জাতির আশা, ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনার ভার অর্পিত হয়েছে।
🕊️ একজন মানুষ, একটি দর্শন
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সেই নাম, যিনি শুধু অর্থনীতির পাঠ্যপুস্তকে নন-গরিব কৃষকের কাঁধে ভর দিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি আত্মনির্ভরশীল বিকল্প অর্থনৈতিক দর্শন। গ্রামীণ ব্যাংক মডেল শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি ছিল একটি প্রতিরোধ, একটি বিপ্লব। ঠিক তেমনি আজ, রাজনীতির মাঠে তাঁর উপস্থিতিও আবার এক নতুন বিপ্লবের আলামত।
জুলাই বিপ্লবের পটভূমি ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব
এই দ্বিতীয় দফার বৈঠক ঠিক এমন এক সময়েই শুরু হলো, যখন জুলাই বিপ্লব তাঁর এক বছর পূর্ণ করতে চলেছে-এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যখন জনগণ রাজনৈতিক স্ট্যাটাস কু-কে চ্যালেঞ্জ করে রাস্তায় নামে। সেই বিপ্লবের প্রেক্ষাপটেই আজকের এই উদ্যোগ-যেখানে পরিবর্তনের লক্ষ্য শুধু সরকার বদল নয়, বরং রাজনীতির কাঠামোগত সংস্কার।
বিপ্লবীরা তাই ড. ইউনূসকে তাদের এবং দেশ-জাতির অভিভাবক হিসেবে বরণ করেছে-যিনি ন্যায়, শান্তি ও নৈতিক সাহস নিয়ে এই দুর্বিষহ সময়ের পথপ্রদর্শক হতে পারেন।
ঐকমত্য: আত্মসমর্পণ নয়, আত্মমর্যাদার ভিত্তিতে ঐক্য
জাতীয় ঐকমত্য মানে যদি হয় শাসকগোষ্ঠীর দায়হীন ক্ষমতা বাঁচানোর ফাঁদ, তবে তা ব্যর্থ হবে। কিন্তু যদি এই ঐকমত্য হয় জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে মৌলিক পরিবর্তনের রূপরেখা-তবে সেটিই হবে একটি বিজয়ী ঐক্য। ড. ইউনূসের অভিজ্ঞতা, আন্তরিকতা ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা এই প্রক্রিয়াকে সঠিক পথে নিয়ে যেতে পারে বলেই আমরা আশাবাদী।
🌱 প্রত্যাশা: একজন পথপ্রদর্শকের নেতৃত্বে নতুন ভোর
এই মুহূর্তে জাতি অপেক্ষা করছে সেই মুহূর্তের, যখন বিভক্ত রাজনীতি নয়, বরং ঐক্যবদ্ধ নীতি দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশের ভিত রচনা হবে। ড. ইউনূস সে কাজটিই শুরু করেছেন। আমরা আশা করি, তাঁর এই ঐতিহাসিক উদ্যোগ সফল হবে।
জাতির সামনে আজ যে সন্ধিক্ষণ, তা শুধুই একটি বৈঠক নয়-বরং এটি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গঠনের ভিত্তিপ্রস্তর।
তার সাম্প্রতিক বক্তব্যের ভিডিও দেখে সবাই যেন উপলব্ধি করতে পারে-এই মানুষটি কেবল আলোচনার ধারক নন, তিনি এই সময়ের প্রয়োজনে আগত এক দূত।
বাংলাদেশের ৩০টি রাজনৈতিক দলের সাথে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। সভাপতিত্ব করছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘এমন কোনো সংস্কার নেই, যা এক মাসের মধ্যে করা সম্ভব নয়।’ ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের দাবিতে অনড় আছে দলটি।
অন্যদিকে, জুলাই মাসের মধ্যেই জুলাই সনদ ঘোষণা ও এর আগে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করতে প্রধান উপদেষ্টা এবং ঐকমত্য কমিশনের কাছে আহবান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।