পোশাক বদলায়, বিচার পাল্টায় না- ওসি প্রদীপের ফাঁসি বহাল-আমাদের জন্য কী বার্তা?

পোশাক বদলায়, বিচার পাল্টায় না- ওসি প্রদীপের ফাঁসি বহাল-আমাদের জন্য কী বার্তা?

মো:আবু তাহের পাটোয়ারী:
তিনি ছিলেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একজন ক্ষমতাধর কর্মকর্তা। গায়ে রাষ্ট্রের পোশাক, হাতে অস্ত্র ও আদেশের অধিকার-তার এক নির্দেশেই থমকে যেত জনপদের নিঃশ্বাস। সেই ব্যক্তি-সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ-আজ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক কয়েদি। সর্বোচ্চ আদালত তার ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে। এটি শুধু একটি ব্যক্তির বিচার নয়, বরং রাষ্ট্রব্যবস্থার গভীর এক বার্তা: এই দেশে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

প্রদীপ কুমার দাশ একসময় “ক্রসফায়ারের নায়ক” হিসেবে আলোচিত ছিলেন। একের পর এক কথিত বন্দুকযুদ্ধে তার উর্ধ্বতন মহলের প্রশ্রয় ছিলো, রাজনৈতিক ছত্রছায়াও কম ছিলো না। অথচ ২০২০ সালে টেকনাফে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে নিজেই ফেঁসে যান নিজের পাতানো ফাঁদে। আদালত এই হত্যাকাণ্ডকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার নগ্ন অপব্যবহার বলে রায় দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট তার ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে-এ যেন প্রতীকি রূপে একটি নতুন বার্তা দিচ্ছে রাষ্ট্র:
অপরাধী যেই হোক না কেন, ক্ষমতার আসনে বসে থাকলেই সে দায়মুক্ত নয়।
রাষ্ট্রীয় অস্ত্র কেবল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে, অন্যায় করলে সেটাই হয়ে ওঠে বিচারের হাতিয়ার।

এই রায়ের পেছনে সবচেয়ে বড় বার্তাটি হলো-আস্থা ফিরিয়ে আনার প্রয়াস। বহুদিন ধরেই এই দেশে আইন ও বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যখন একজন পুলিশ কর্মকর্তা, যিনি নিজেই অন্যদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতেন, আজ নিজেই সেই কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে দিন গুনছেন-তা নিঃসন্দেহে আইনের শাসনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।

কিন্তু এই ঘটনায় আমাদের শিক্ষা কী?
প্রথমত, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়।
আজ যারা রাষ্ট্রের সম্পদ আত্মসাৎ করছে, ঘুষের টাকায় প্রাসাদ গড়ছে, রাজনৈতিক পরিচয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠছে-তাদের সবাইকে প্রদীপের পরিণতি থেকে শিখতে হবে। সময়ের চাকায় উপরে উঠা যেমন সম্ভব, তেমনি ধপাস করে পড়ে যাওয়াও নিশ্চিত।

দ্বিতীয়ত, পোশাক একমাত্র পরিচয় নয়।

প্রদীপ একসময় যে পোশাক গায়ে দিতেন, তা ছিলো সম্মানের। কিন্তু সেই পোশাককেই কলঙ্কিত করেছেন তিনি নিজের লোভ, নিষ্ঠুরতা ও বেআইনি কর্মকাণ্ড দিয়ে। আজ তার গায়ে কয়েদির পোশাক—যেটিও রাষ্ট্রেরই আরেক রূপ। এই দুই পোশাকের পার্থক্য আসলে নীতির, বিবেকের, এবং দায়িত্ববোধের।

তৃতীয়ত, আইনের চোখে সবাই সমান-এটি শুধু বক্তৃতার কথা নয়, বাস্তব রূপও আছে।

প্রদীপের বিরুদ্ধে রায় এই দেশের মানুষের মধ্যে যে আস্থা জাগাতে পারে, সেটিকে কাজে লাগাতে হবে। দুর্নীতিপরায়ণ, অপরাধপ্রবণ এবং অবিচারনির্ভর যে প্রশাসনিক চর্চা-তার অবসান জরুরি। রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত না করলে ‘প্রদীপ’ নাম পাল্টে অন্য কেউ একই পথেই

তিনি ছিলেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একজন ক্ষমতাধর কর্মকর্তা। গায়ে রাষ্ট্রের পোশাক, হাতে অস্ত্র ও আদেশের অধিকার-তার এক নির্দেশেই থমকে যেত জনপদের নিঃশ্বাস। সেই ব্যক্তি-সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ-আজ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক কয়েদি। সর্বোচ্চ আদালত তার ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে। এটি শুধু একটি ব্যক্তির বিচার নয়, বরং রাষ্ট্রব্যবস্থার গভীর এক বার্তা: এই দেশে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

প্রদীপ কুমার দাশ একসময় “ক্রসফায়ারের নায়ক” হিসেবে আলোচিত ছিলেন। একের পর এক কথিত বন্দুকযুদ্ধে তার উর্ধ্বতন মহলের প্রশ্রয় ছিলো, রাজনৈতিক ছত্রছায়াও কম ছিলো না। অথচ ২০২০ সালে টেকনাফে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে নিজেই ফেঁসে যান নিজের পাতানো ফাঁদে। আদালত এই হত্যাকাণ্ডকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার নগ্ন অপব্যবহার বলে রায় দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট তার ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে-এ যেন প্রতীকি রূপে একটি নতুন বার্তা দিচ্ছে রাষ্ট্র:
অপরাধী যেই হোক না কেন, ক্ষমতার আসনে বসে থাকলেই সে দায়মুক্ত নয়।
রাষ্ট্রীয় অস্ত্র কেবল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে, অন্যায় করলে সেটাই হয়ে ওঠে বিচারের হাতিয়ার।

এই রায়ের পেছনে সবচেয়ে বড় বার্তাটি হলো-আস্থা ফিরিয়ে আনার প্রয়াস। বহুদিন ধরেই এই দেশে আইন ও বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যখন একজন পুলিশ কর্মকর্তা, যিনি নিজেই অন্যদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতেন, আজ নিজেই সেই কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে দিন গুনছেন-তা নিঃসন্দেহে আইনের শাসনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।

কিন্তু এই ঘটনায় আমাদের শিক্ষা কী?
প্রথমত, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়।
আজ যারা রাষ্ট্রের সম্পদ আত্মসাৎ করছে, ঘুষের টাকায় প্রাসাদ গড়ছে, রাজনৈতিক পরিচয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠছে-তাদের সবাইকে প্রদীপের পরিণতি থেকে শিখতে হবে। সময়ের চাকায় উপরে উঠা যেমন সম্ভব, তেমনি ধপাস করে পড়ে যাওয়াও নিশ্চিত।

🔹 দ্বিতীয়ত, পোশাক একমাত্র পরিচয় নয়।

প্রদীপ একসময় যে পোশাক গায়ে দিতেন, তা ছিলো সম্মানের। কিন্তু সেই পোশাককেই কলঙ্কিত করেছেন তিনি নিজের লোভ, নিষ্ঠুরতা ও বেআইনি কর্মকাণ্ড দিয়ে। আজ তার গায়ে কয়েদির পোশাক—যেটিও রাষ্ট্রেরই আরেক রূপ। এই দুই পোশাকের পার্থক্য আসলে নীতির, বিবেকের, এবং দায়িত্ববোধের।

তৃতীয়ত, আইনের চোখে সবাই সমান-এটি শুধু বক্তৃতার কথা নয়, বাস্তব রূপও আছে।

প্রদীপের বিরুদ্ধে রায় এই দেশের মানুষের মধ্যে যে আস্থা জাগাতে পারে, সেটিকে কাজে লাগাতে হবে। দুর্নীতিপরায়ণ, অপরাধপ্রবণ এবং অবিচারনির্ভর যে প্রশাসনিক চর্চা-তার অবসান জরুরি। রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত না করলে ‘প্রদীপ’ নাম পাল্টে অন্য কেউ একই পথেই হাঁটবে।

এখনো সময় আছে!
এই দেশ আমাদের। আইন, প্রশাসন, ক্ষমতা-সবই জনগণের কল্যাণে ব্যবহারের জন্য। যদি আমরা ন্যায়ের পথে ফিরি, সততার ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করি-তাহলেই এই দেশ বদলাবে। অন্যায়ের ক্ষমতা ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু ন্যায়ের হাত দীর্ঘ।

প্রদীপের মতো কেউ যেন আর তৈরি না হয়-এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
মানুষ হোন, নেতৃস্থানীয় হলে আরও বেশি মানুষ হোন।