দালালেরা একপাশে, জনতার ভালোবাসা অন্যপাশে: জাতীয় ঈদগাহে ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে ঘিরে জনঅভ্যুত্থানের পূর্বাভাস?

 

মো: আবু তাহের পাটোয়ারী :
ঈদের সকালে জাতীয় ঈদগাহে ঘটে গেল এক অনন্য, এক গভীর তাৎপর্যময় মুহূর্ত। হাজারো মানুষের কণ্ঠে এক অভিন্ন আহ্বান-
“স্যার, দালালদের কথা শুনবেন না!”
এই একটি বাক্য যেন শুধু একজন ব্যক্তিকে নয়, পুরো একটি রাষ্ট্রীয় চক্রান্তের মুখোশ খুলে দিল। আর যাকে ঘিরে এই ভালবাসার বিস্ফোরণ, তিনি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মুখ, নোবেলজয়ী, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা, জনবান্ধব অর্থনীতির রূপকার-ড. মুহাম্মদ ইউনুস।

ঐ মুহূর্তের শক্তি: রাজনৈতিক ভাষার নতুন দিগন্ত

জাতীয় ঈদগাহে এমন দৃশ্য অভূতপূর্ব। ঈদের নামাজে সাধারণত মানুষ নিরপেক্ষ থাকেন, কেবল ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে মগ্ন থাকেন। কিন্তু এবার ঈদের মাঠে জনতার হৃদয়ের কণ্ঠ ফেটে বলছে,
“স্যার, দালালদের কথা শুনবেন না!”
এ বক্তব্য কেবল একটি জনসমর্থনের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং এটি এক গভীর রাজনৈতিক ভাষ্য। এটি স্পষ্ট বার্তা:
এই জনগণ দুর্নীতিবাজ, ক্ষমতালোভী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা ইউনুস স্যারের পাশে দাঁড়িয়েছে-অন্ধভক্তি থেকে নয়, বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থানের অভিজ্ঞতালব্ধ চেতনা থেকে।

রাষ্ট্রযন্ত্র বনাম নাগরিক নৈতিকতা

বর্তমান সরকার দীর্ঘদিন ধরে ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা চাপিয়ে যাচ্ছে-শ্রম আইন লঙ্ঘন, ট্যাক্স ফাঁকি, এমনকি দারিদ্র্যবিরোধী ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিপক্ষে অপপ্রচার। অথচ এই সরকারই এক সময় তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল।
তাহলে হঠাৎ এই বৈরিতা কেন?
কারণ একটাই-ড. ইউনুস আজ ‘রাষ্ট্রায়িত দুর্নীতির’ বিকল্প ভাবনা তুলে ধরছেন। তাঁর নৈতিক অবস্থান আজ ভয় দেখাচ্ছে ক্ষমতাসীনদের। তাই তাঁকে নিঃস্ব করার ষড়যন্ত্র চলছে, কিন্তু ব্যর্থ হচ্ছে।

ঈদগাহের সেই মুহূর্ত দেখিয়ে দিল-রাষ্ট্রযন্ত্রের আইন নয়, জনগণের ভালোবাসাই শেষ কথা।

“দালাল” শব্দটির রাজনৈতিক অভিধান

এই প্রসঙ্গে “দালাল” শব্দের ব্যবহারে কিছু প্রশ্ন আসতেই পারে। কারা এই দালাল?
সামাজিকভাবে “দালাল” বলতে সাধারণত বোঝানো হয়-জনগণের স্বার্থ বিক্রি করে যারা নিজের পদ-পদবি রক্ষা করে। এরা বিচারব্যবস্থায় থাকে, প্রশাসনে থাকে, সংবাদমাধ্যমে থাকে-তাদের লক্ষ্য একটাই, সত্যের বিরুদ্ধে কাজ করা।

ঈদের দিনে সেই ঈদগাহের মাঠে সাধারণ মানুষ আর “দালালদের” ভেদরেখা স্পষ্ট করে দিল। যাঁরা নীরবে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁরা দেখলেন, মানুষের কণ্ঠে সত্য উচ্চারিত হলো-স্বতঃস্ফূর্তভাবে, নির্ভয়ে।

ড. ইউনুস: এক নিরস্ত্র বিপ্লবের প্রতীক

ড. মুহাম্মদ ইউনুস এখন আর কেবল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ নন। তিনি এখন এক নৈতিক প্রতিরোধের প্রতীক। তাঁর বিরুদ্ধে যে যড়যন্ত্র চলছে, সেটির মূল উদ্দেশ্য একটাই-তাঁকে জনমানসে হেয় করা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তাঁর গ্রহণযোগ্যতা আরও বেড়েছে।

ঈদগাহে এই হৃদয়স্পর্শী দৃশ্য শুধু আবেগ নয়, এটি রাজনৈতিক গণচেতনাতেও এক মোড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত।

ভিডিওটি দেখুন, শেয়ার করুন, ছড়িয়ে দিন সত্যের বার্তা:

ঈদের নামাজের শেষে উপস্থিত মুসল্লীরা কি বুঝাতে চেয়েছিলেন নির্বিশেষে আমাদের করণীয়
ঈদের মাঠে যারা বলেছিলেন,
“স্যার, দালালদের কথা শুনবেন না”-
তারা আসলে বলছিলেন,
“আমরা আপনার পক্ষে আছি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আছি।”
এটাই এই সময়ের সবচেয়ে বড় বার্তা। তাই প্রশ্ন নয়, এখন সময় জবাব দেওয়ার-“কারা জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধি?”

#ডমুহাম্মদইউনুস #জাতীয়ঈদগাহ #দালালেরবিরুদ্ধেজনতা #Nobojagoron #OpEd #Eid2025