নবজাগরণ রিপোর্ট :
ঈদের কোরবানির দিনে যখন শহরের আলো ঝলমলে দৃষ্টিতে হারিয়ে যাওয়া সহজ, তখন কিছু মানুষ নীরবে ইতিহাসকে মনে করিয়ে দেয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP), দেবিদ্বার শাখার তরফ থেকে এমনই এক মানবিক ও বিপ্লবী উদ্যোগ দেখা গেলো, যেখানে ‘জুলাই বিপ্লব’-এ শহীদ ১৪ জন মুক্তিযোদ্ধা ও আহত ৬০ জন পরিবারের পাশে দাঁড়ানো হলো কোরবানির আনন্দ নিয়ে।
এই পরিবারগুলো হয়তো আর খবরের শিরোনাম হয় না, রাজনীতির মঞ্চেও তাদের জন্য সংরক্ষিত থাকে না কোনো চেয়ার, তবুও তাঁদের বুকে বহন করা ইতিহাস ভুলে গেলে জাতির আত্মা লজ্জিত হয়।
NCP-এর কর্মীরা এই লজ্জা ঢাকার দায় নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন-এ যেন কেবল কোরবানির গোশত দেওয়া নয়, শহীদদের রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো, তাঁদের আদর্শিক উত্তরাধিকার টিকিয়ে রাখার প্রতিজ্ঞা।
হাসনাত আবদুল্লা: এক নাম, এক মানসিকতা
এই উদ্যোগের প্রাণপুরুষ হাসনাত আবদুল্লা-যিনি ঈদের দিন বৃষ্টি মাথায় নিয়ে একের পর এক শহীদ ও আহত পরিবারের দরজায় পৌঁছে দিয়েছেন কোরবানির মাংস। মুখে বিনয়ের হাসি, হাতে ত্যাগের উপহার-এই মানুষটি যেন এক চলমান বার্তা: বিপ্লব শুধু স্লোগানে নয়, বিপ্লব মানুষকে ভালোবাসার মধ্যেও প্রকাশ পায়।
আদর্শের প্রশ্নে কোনো আপস নেই
জুলাই বিপ্লবের শহীদরা কেন প্রাণ দিলেন? উত্তর সহজ নয়, কিন্তু স্পষ্ট-একটি সমাজ যেখানে গণতন্ত্র থাকবে, ন্যায়ের জায়গা থাকবে, সাধারণ মানুষ থাকবে রাজনীতির কেন্দ্রে। সেই সমাজের নির্মাণ আজও অসম্পূর্ণ, এবং সেই অসম্পূর্ণ বিপ্লবের উত্তরাধিকার বহন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টির মতো সংগঠন।
রাজনীতি মানে জনসম্পৃক্ততা
আজ যখন দেশের মূলধারার রাজনীতিতে ব্যস্ততা কেবল ক্ষমতার পালাবদলে, তখন NCP-এর এই কর্মসূচি নতুন বার্তা দেয়-রাজনীতি মানেই জনসম্পৃক্ততা, শহীদ পরিবার মানেই একদিনের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নয়, বরং বছরের পর বছর পাশে থাকা। এটি কেবল দান নয়, এটি নৈতিক দায়িত্ব।
,আমাদের কথা:
ঈদের দিন কেবল খুশির নয়, ত্যাগেরও দিন। আর এই ত্যাগকে যদি ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত করা যায়, তবে সেটি হয়ে ওঠে বিপ্লবের পথচলা। NCP দেবিদ্বার সেই পথেই হাঁটছে। শহীদের রক্ত ভুলে গেলে আমরা মানুষ নই-এ কথা যতবার মনে পড়বে, ততবার হাসনাত আবদুল্লাদের মতো যোদ্ধারা আমাদের মাথা তুলে দাঁড়াতে সাহস দেবেন।