ঐতিহ্যের ছায়ায় উন্নয়নের দীপ্তি- মানিকপুর ঈদগাহ ও সৈয়দ হারুনের সাহসী পদক্ষেপ

 

উপসম্পাদকীয়-নবজাগরণ ডেস্ক-
মো: আবু তাহের পাটোয়ারী :

দুই শতাব্দীর ইতিহাসের সাক্ষী, নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার মানিকপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ-শুধু একটি ধর্মীয় উপাসনাস্থল নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক-বাহক, এক সামাজিক সংহতির চেতনার কেন্দ্রবিন্দু। এই ঈদগাহ প্রাঙ্গণেই প্রতি বছর দশ হাজার মানুষের মিলন ঘটে ঈদের জামাতে, এখানে ধর্মীয় অনুষ্ঠান গড়ে তোলে ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন। অথচ এই বিশাল ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহ দীর্ঘদিন ধরে পড়ে ছিল অবহেলিত, আধুনিক নাগরিক সুবিধা ছিল না, ছিল না স্থায়ী অবকাঠামো।

এতদিন কেউ এগিয়ে আসেনি সাহস নিয়ে, দায়িত্ব নিয়ে। অবশেষে এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন লায়ন সৈয়দ হারুন এমজেএফ-একজন সফল শিল্পোদ্যোক্তা, সমাজসেবী ও মানবিক নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি। তাঁর নিজস্ব ফাউন্ডেশন ‘সৈয়দ হারুন ফাউন্ডেশন’ থেকে ঈদগাহ পূর্ণনির্মাণের জন্য ঘোষণা দিলেন বিশাল অঙ্কের ২০ লক্ষ টাকা অনুদান।

এই সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন উন্নয়নের বাস্তব সূচনা, অন্যদিকে তেমনি এক প্রতীকী বিদ্রোহ-অবহেলার, বঞ্চনার এবং কেন্দ্রীভিত্তিক উন্নয়নের একচোখা নীতির বিরুদ্ধে। তিনি দেখিয়ে দিলেন, রাজধানীর চৌহদ্দির বাইরেও উন্নয়ন সম্ভব, প্রয়োজন শুধু সদিচ্ছা আর দায়বদ্ধতার।

লায়ন সৈয়দ হারুন এমজেএফ শুধু টাকা দিচ্ছেন না-তিনি দিচ্ছেন ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সমাজ-চেতনাকে নবজাগরণের বাতিঘর বানিয়ে তোলার এক সাহসী ডাক। তাঁর এই অনুদান শুধুই একবারের উন্নয়নমূলক ঘোষণা নয়, এটি ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য একটি স্থায়ী আদর্শ, একটি আত্মমর্যাদাপূর্ণ বার্তা-আমরাও পারি, আমরাও গড়ি।

উল্লেখযোগ্য যে, মানিকপুর ঈদগাহ শুধু মানিকপুরই নয়, চরবাতানিয়া, গোরকাটা, বাতাকান্দি, তুলাপুকুরিয়া, উত্তর-দক্ষিণ মানিকপুর সহ আশপাশের ৭-৮টি গ্রামের মানুষের ঈমানি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়ের কেন্দ্র। এখানকার ঈদ জামাত মানেই একটি প্রাণের উৎসব, মিলনমেলা, গ্রাম্য ঐক্যের উচ্ছ্বাস।

এই ঐতিহাসিক ঘোষণার মাধ্যমে সৈয়দ হারুন যেন এই জনপদের বুকে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলেন-যেখানে উন্নয়ন হবে সম্মানজনক, ধর্মীয় ঐতিহ্য থাকবে মর্যাদায়, এবং সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ অনুভব করবে: এই গ্রাম, এই ঈদগাহ, এই ইতিহাস-আমাদেরই।

এখন সময়, আমরা এই কাজকে শুধু প্রশংসা নয়, নিজেদের দায় হিসেবে নিয়ে এগিয়ে যাই। ঈদগাহ উন্নয়ন কমিটির পাশে দাঁড়াই সকলে, গড়ে তুলি এমন একটি মডেল যেখানে ঐতিহ্য ও আধুনিকতা মিলেমিশে তৈরি হয় এক নতুন বাংলাদেশ।

মানিকপুর থেকে শুরু হোক নতুন দৃষ্টান্তের বিপ্লব।