ঐতিহাসিক সুযোগের দ্বারপ্রান্তে- ইউনূস-তারেক বৈঠক কি পাল্টে দিতে পারে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ?

 

মো: আবু তাহের পাটোয়ারী :
এক ঐতিহাসিক সম্ভাবনার সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। বহু বছর ধরে দুই ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তারেক রহমানের সম্ভাব্য মুখোমুখি বৈঠক দেশব্যাপী জাগিয়েছে আলোড়ন। এই বৈঠক কি হতে পারে বহুল কাঙ্ক্ষিত একটি জাতীয় পুনর্জাগরণের সূচনা? নাকি আবারও দলীয় সংকীর্ণতা ও রাজনৈতিক অপসংস্কৃতির জালে হারিয়ে যাবে সম্ভাবনার আলো?

প্রশ্ন তুলতেই হয়-বাংলাদেশের গণতন্ত্র কি শুধু ক্ষমতার পালাবদলেই সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি এবার সত্যিকারের সংস্কার ও সহাবস্থানের পথে হাঁটবে? এই প্রশ্নের জবাব হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে এই বৈঠকের মধ্যে।

বিএনপি ও রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি: ইতিহাসের বোঝা না ভবিষ্যতের দিশা?

বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে জনগণের স্বার্থের বদলে নিজ দলীয় ঐতিহ্য ও নেতৃত্ব রক্ষায়ই ব্যস্ত থেকেছে। খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল নতুন পথ খুঁজছে বটে, কিন্তু এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর ঝুলে আছে। তারেক রহমানের সামনে তাই এ বৈঠক এক ঐতিহাসিক সুযোগ-তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, রাষ্ট্রচিন্তা ও ভবিষ্যতের রূপরেখা তুলে ধরার মঞ্চ।

কিন্তু যদি বিএনপি এখনও পুরনো কৌশল, দলীয় সংকীর্ণতা আর অপরিণত আগ্রাসনেই আস্থা রাখে, তবে রাজনৈতিক সংস্কারের আশা ধূলিসাৎ হবে।

ড. ইউনূস: একজন নাগরিক-বিশ্বাসের নাম

ড. ইউনূস কোনো দলীয় রাজনীতিক নন। তিনি প্রতিনিধি একজন নাগরিক সমাজের, যার কাছে দেশের সম্মান, শান্তি ও উন্নয়ন সবকিছুর ঊর্ধ্বে। তাঁর মতো একজন নিরপেক্ষ, সম্মানিত ব্যক্তি যখন কোনো রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে মুখোমুখি হন, তখন তা কেবল ব্যক্তিগত আলোচনায় সীমাবদ্ধ থাকে না-তা হয়ে ওঠে জাতীয় ঐক্যের প্রতীকী সম্ভাবনা।

এখনই সময়-ভেদাভেদ ভুলে দেশের পক্ষে দাঁড়ানোর

এই বৈঠকে রাজনৈতিক সমঝোতা, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও অর্থনৈতিক নীতিমালার ভবিষ্যৎ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু তার চেয়েও জরুরি-বিরোধী মতকে সম্মান করা, একে অপরকে শত্রু নয়, ভিন্নমতধারী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।

জন আকাঙ্ক্ষা ও রাজনীতির ভবিষ্যৎ :

জাতির জন্য এ এক টার্নিং পয়েন্ট। ব্যর্থ হলে এটি হবে আরেকটি সুযোগহানির গল্প, যেখানে দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি পারলেন না ব্যক্তিগত দ্বিধা-অহং কাটিয়ে জাতির জন্য একসাথে দাঁড়াতে।
কিন্তু সফল হলে? বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ইতিহাসে এই বৈঠকই হয়ে উঠতে পারে গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণের সূচনা বিন্দু।

আমরা চাই, তারা দল বা ব্যক্তি স্বার্থ নয়, দেশ ও জনগণের স্বার্থে এগিয়ে আসুন।

(লেখক: একজন সচেতন নাগরিক। এই লেখাটি কোনো রাজনৈতিক পক্ষপাত নয়, একটি স্বপ্নময় ভবিষ্যতের পক্ষে একটি নাগরিক আকাঙ্ক্ষা মাত্র।)