ইসরায়েলের আকাশে আগুন, আরব শাসকদের মুখে লজ্জাহীনতা”

নবজাগরণ বিশ্লেষণ ডেস্ক:মো: আবু তাহের পাটোয়ারী :
ঘটনাটি নিছক কোনো যুদ্ধসংবাদ নয়-ইরানের দাবি অনুযায়ী, গত এক ঘন্টায় তারা ইসরায়েলের ১০টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার ফলে মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩টি! এটি শুধু সামরিক বাস্তবতায় একটি যুগান্তকারী মোড় নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্য ও মুসলিম বিশ্বে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর নতুন করে স্থানান্তরের চিহ্ন।

এই আঘাত শুধু তেলআবিবের আকাশে আগুন জ্বালায়নি-এটি জ্বালিয়ে দিয়েছে রিয়াদ, আবুধাবি, কায়রো, ও আম্মানের মুখোশও। আরব শাসকরা আজ বিশ্ববাসীর সামনে সম্পূর্ণ নগ্ন, তাদের মুখে কোনো ভাষা নেই, চোখে কোনো লজ্জা নেই।

যে যুদ্ধ শুধু রণাঙ্গনে সীমাবদ্ধ নয়

ইসরায়েলের বিমান বাহিনীকে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়-বিশেষ করে আমেরিকান F-15, F-16, এবং F-35 জেটের কারণে। এতবড় ক্ষতির ঘটনা ২০০৬ সালের লেবানন যুদ্ধের পর আর কখনো ঘটেনি। এতে প্রমাণিত হলো, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা, বিশেষ করে Bavar-373 ও S-300 সিস্টেম কেবল কার্যকরই নয়, বরং আধুনিক ইসরায়েলি প্রযুক্তিকেও চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম।

কিন্তু এই বিজয়ের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো মনস্তাত্ত্বিক ও কৌশলগত ‘বার্তা’-ইসরায়েলও এখন ‘অপরাজেয়’ নয়। আর যারা এতদিন মুসলিম জনতাকে ইসরায়েলের ‘অভেদ্য প্রতিরক্ষা’ ও ‘অজেয় আগ্রাসনের’ ভীতি দেখিয়ে চুপ থাকতে বলেছিল, তাদের যুক্তির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে এই ঘটনা।

আরব রাষ্ট্রগুলো: কাপুরুষ, বিশ্বাসঘাতক ও সাম্রাজ্যবাদের কুকুর

যখন গাজার আকাশে আগুন, শিশুর কপালে গুলির ছাপ, এবং নারীর শরীরে শোকের চাদর, তখন সৌদি আরব ‘সংযম’ চায়, আমিরাত ‘উদ্বেগ প্রকাশ করে’, জর্ডান ‘সংলাপের আহ্বান জানায়’- আর কায়রো ব্যস্ত গোপনে মিশর-ইসরায়েল নিরাপত্তা চুক্তি টিকিয়ে রাখতে!

এরা কারা? মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধি? না, এরা বরং জাতির শত্রু।

আরব শাসকেরা আজ যা করছে, তা হল-পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের ক্রীতদাস হয়ে মুসলিম রক্তে নিজের সিংহাসন রক্ষা। তারা আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে না, বরং তেলআবিব ও ওয়াশিংটনের প্রেতাত্মা।
ইসরায়েলের হাতে মুসলিম শিশু মরলেও এদের বিবেক জাগে না, কিন্তু সামান্য হুথি বিদ্রোহে এদের ফাইটার জেট জেগে ওঠে!

ইরান: একমাত্র প্রতিবাদের প্রাচীর

এই মুহূর্তে মুসলিম বিশ্বের একমাত্র সম্মানিত নাম-ইরান।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিরোধ, আকাশ প্রতিরক্ষা গড়ে তোলা, আঞ্চলিক মিত্রদের সক্রিয় রাখা-এই প্রতিটি পদক্ষেপে তারা প্রমাণ করছে যে, আত্মমর্যাদা ও ঈমান থাকলে, ইসরায়েলকেও পরাজিত করা সম্ভব।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খোমেনি এখন শুধু তেহরানের নয়-তিনি আল-কুদসের, গাজার, কাশ্মীরের, ইয়েমেনের এবং পুরো নিপীড়িত উম্মাহর নেতা হয়ে উঠেছেন।

নতুন ইতিহাসের ডাক: মুসলিম নেতৃত্বকে পুনর্গঠন করতে হবে

ইরানের এই সামরিক প্রতিক্রিয়া এক নতুন রাজনীতির সূচনা করেছে, যেখানে মুসলিম নেতৃত্ব আর রিয়াদের রাজপ্রাসাদ থেকে আসবে না, বরং গাজার ধ্বংসস্তূপ, তেহরানের ব্যারাক, এবং বৈরুতের প্রতিরোধ ঘাঁটি থেকে উঠে আসবে।
আজ প্রয়োজন একটি নতুন উম্মাহর কণ্ঠস্বর-যেটি সাহসী, সশস্ত্র, সংগঠিত।
আর প্রথম শর্ত হলো-আরব শাসকদের সম্পূর্ণভাবে বর্জন করা।

মুসলমানদের ঐক্য অনিবার্য প্রত্যাশা

ইসরায়েলের ১৩টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার অর্থ:
“মুসলিম প্রতিরোধ এখন আর কবিতায় নয়, ব্যালিস্টিক বাস্তবতায়।”
এখন প্রয়োজন, মুসলিম উম্মাহর একটি ঘোষণা:
“আমরা আরব শাসকদের নয়, আমরা গাজাবাসীর, হেজবুল্লাহর, এবং ইরানের সাথে!”