নবজাগরণ ডেস্ক : গত ১২ জুন জাতীয় সাপ্তাহিক নবজাগরণ পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ” আধিপত্য বিস্তারের নেশায় সারেংকাঠী ইউনিয়নে চলছে রামরাজত্ব, বিএনপির শেল্টারে মহারাজের দোসর ও গনহত্যা মামলার আসামী এখন প্রকাশ্যে ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনে সংক্ষুব্ধ হয়ে সারেংকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ গতকাল ১৪ জুন পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার করফা বাজারে একটি সংবাদ সন্মেলন করেন। যাহা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নবজাগরণের গোচরীভূত হয়। সংবাদ সন্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্যের বিশ্লেষণ করে পোস্টমর্টেম প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো।
প্রকাশিত সংবাদে মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ এর রাজনৈতক ক্যারিয়ার নিয়ে কোনো কটাক্ষ করা হয়নি। অতি সম্প্রতি তার কিছু বিতর্কিত কর্মকান্ড যাহা জননিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং জনমনে আতংকের সৃষ্টি করেছে ঐ সকল ঘটনা উল্লেখে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গত ২৬ মে আঃ আলিমের দোকান ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার সাথে যারা জড়িত এবং ১০ জুন একই দোকানে হামলা ও সার্টার ভাংগার সাথে জড়িত তারা একই গ্রুপের সদস্য। শতাধিক লোকের সামনে এবং তারই উপস্থিতিতে তান্ডব চালালেও তিনি নির্বিকার থেকে তার অনুসারীদের শক্তি মত্তা দর্শন করেন। আসাদের সাথে মোটরসাইকেল মহড়ায় অংশ গ্রহনকারী এবং উত্তর করফা গ্রামের আবুল কালামের বাড়িতে রাতের বেলা হানা দেয়া সকলেই ঐ গ্রুপের সদস্য। যার প্রমান নবজাগরণের কাছে রয়েছে।
জনাব আসাদ বলেছেন, মহারাজের দোসর এবং গনহত্যায় জড়িত কাউকেই তিনি আশ্রয় দেন নি। কিন্তু ভিডিও ফুটেজ ও স্থীর চিত্রে আসাদের সাথে তাদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। গনহত্যাসহ একাধিক মামলার আসামী এবং সারেংকাঠী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমীরণ হালদারের ঘনিষ্ঠ সহচর এবং বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহারাজের দোসর খ্যাত আব্দুল হকের নির্বাচনে মূখ্য ভূমিকা পালন করা মোঃ সোহেল শিকদার এখন আসাদের সহচর। আসাদের সাথে মিলে আলকির হাটের একটি মারামারি মামলায় তারা দুজনেই আসামি হন। তার ডকুমেন্টস রয়েছে নবজাগরণের হাতে। উল্লেখ্য সোহেল শিকদার নামে গনহত্যা মামলার আসামী বিএনপির কেউ নয় বলে নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত একটি লিখিত প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেন। উপজেলা সদস্য সচিবের দেয়া প্রত্যায়নত্রকে উপেক্ষা করে সারেংকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব তাকে আশ্রয় দেয়। তারপরও কি তিনি বলবেন গনহত্যা মামলার আসামীকে আশ্রয় দেননি। বিএনপির ত্যাগী নেতা মো: আসাদুজ্জামান আসাদ এর আওয়ামী লীগের জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে আওয়ামী নেতাদের সাথে একই মঞ্চে অবস্থানের তথ্য চিত্রও রয়েছে আমাদের সংগ্রহে।
সংবাদ সন্মেলনে নবজাগরণ পত্রিকাকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেয়া জনাব আসাদের পাশে উপবিষ্ট সারেংকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক পরিচয়দানকারী মোঃ জায়েদুল করিম নোমান এর আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতার প্রমানও রয়েছে নবজাগরণের কাছে। প্রয়োজনে তার স্ব-চিত্র প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হবে।
শৃঙ্খলা ভংগের দায়ে সারেংকাঠী ইউনিয়ন তাতী দলের বহিষ্কৃত সভাপতি ও মাফিয়া সম্রাট মহিউদ্দিন মহারাজের দোসর হিসাবে পরিচিত মোঃ মহসিন সরদার এখন জনাব আসাদের ঘনিষ্ট সহচর।
নবজাগরণ পত্রিকাকে গালিগালাজ ও হুমকি দিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট করা এবং পত্রিকাকে আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকা হিসাবে কটাক্ষ করে সাক্ষাৎকার দেয়া আসাদের অন্যতম ক্যাডার গোলাম মোস্তফা। স্কুলের চৌকাঠ না পেরোনো বিএনপি কর্মী পরিচয়দানকারী এ ব্যক্তির রয়েছে বৈচিত্র্য পূর্ণ পারিবারিক পরিচয়। পুলিশের হাতে নিহত কুখ্যাত মজিবর ডাকাতের ভাইয়ের ছেলে সে। তাঁর মৃত পিতা সম্পর্কেও রয়েছে নেতিবাচক পরিচয়। সে তার বক্তব্যে বলেন, ১৬- ১৭ বছর ধরে সে আসাদের সাথে রাজনীতি করেছে। তার সম্পর্কে এলাকাবাসী জানান পিতা কাদের হাওলাদারের মৃত্যুর পর সে এলাকায় ছিল না। ২০১৩ /১৪ সালে সে এলাকায় আসে। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে সে ধানের শীষ প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করে। গভীর রাতে নির্বাচনী প্রচারে গেলে প্রতিপক্ষ পিটিয়ে তার পা ভেঙে দেয়। এ বিএনপি বিদ্বেশী লোক এলাকার এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে বিগত সংসদ নির্বাচনে মহিউদ্দিন মহারাজের নির্বাচন করে এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নেসারাবাদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহিদুল ইসলাম মুহিতের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আসাদের হাত ধরে সে এখন বিএনপির ক্যাডার।
আসাদের সাথে রয়েছে আরেক নব্য বিএনপি মোঃ পলাশ সেখ। পত্রিকায় প্রকাশিত নিউজকে উদ্দেশ্য করে গালাগালিতেও সে কম যায় নি। সারেংকাঠী ইউনিয়নের নৌকা মার্কার বিজয়ী চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে মালা পড়িয়ে দেয়ার দৃশ্যের ছবি রয়েছে নবজাগরণের হাতে। এছাড়াও নজরুল চেয়ারম্যানের সাথে পলাশের একটি অর্থ নৈতিক লেনদেনের ভিডিও ফুটেজও রয়েছে নবজাগরণের হাতে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাকে দেখা গেছে এক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে। নিজেদের ঘরে আওয়ামী লীগের অফিস ভাড়া দেয়া এবং ০৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তা বিএনপি অফিসে পরিনত করে সে আসাদ পন্থী বিএনপি বনে যায়।
সংবাদ সন্মেলনে সাক্ষাৎকার দেয়া সাবেক নেছারাবাদ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হকের আরেক দোসর গিয়াস উদ্দিন কাঞ্চন। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী ঐ প্রার্থীর পক্ষে ছিলো তার জোড়ালো অবস্থান। আসাদের পিতা অনেক দিন আগেই ডাকাতের গুলিতে মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু বরন করেন। এলাকাবাসী জানান তিনি জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ইতিহাস না জানা এ নব্য বিএনপি আসাদের পক্ষে ছাফাই গেয়ে তার পিতাকেও বিএনপি বানিয়েছেন।
২০১৫ সালে ছাত্র দল ছেড়ে ছাত্র লীগে যোগদান করা মো: স্বপন সেখ এখন আসাদের পূনর্বাসনের ফসল। এ ছাড়াও সংবাদ সন্মেলনে আসাদের সাথে একই সারিতে বসা আওয়ামী লীগের দোসর নৌকার নির্বাচন করা হরষিত ও তপন হালদারও এখন আসাদের হাত ধরে বিএনপিতে পূনর্বাসিত হয়েছে। এ ছাড়াও সারেংকাঠীর ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বর ও আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতির সাথেও রয়েছে তার দহরম মহরম সম্পর্ক। যার চিত্রও রয়েছে আমাদের হাতে। এত কিছুর পরও উনি কি বলবেন আওয়ামী লীগকে তিনি আশ্রয় দেন না।
তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন তিনি মানুষের মংগলের জন্য তাদের পাশে ছিলেন,আছেন এবং থাকবেন। তবে কি আব্দুল আলিম দোকানদার তাঁর চোখে মানুষ নয়। তার দোকানে ভাংচুর ও লুটপাট হলো। তারপরও আসাদ বাহিনীর ভয়ে সে দোকান খুলতে পারছে না। ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, গতকাল আসাদ তাদের সার্টার মেরামত করার জন্য বলে। মেরামত করার পর বিকেলে সাংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করা হয়। যাতে গণমাধ্যম কর্মীরা কোনো ক্ষতচিহ্ন দেখতে না পায়। ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে আসাদের নির্দেশ ছাড়া নাকি দোকান খোলা যাবে না। দোকান ভাংচুর ও লুটপাট যারা করল তাদের নির্দশ ছাড়া নাকি দোকান খোলা যাবে না। এটা কি রামরাজত্ব নয়?
মো: আসাদুজ্জামান এর বক্তব্যের সূত্র ধরে এবং পত্রিকা অফিসে প্রেরিত তার এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের তথ্য ও চিত্রের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন।
( এ বিষয়ে আরো জানতে আমাদের সাথে থাকুন)