পিরোজপুর ০২ আসনের কান্ডারী হিসাবে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকেই চায় সাধারণ মানুষ

কে.এ. সাদাত : আধুনিক বাংলাদেশের অন্যতম রুপকার জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর ০২ আসনের এমপি হিসাবে চায় সাধারণ জনগণ। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পূর্ব সময়ে এ আসনটি ছিলো ভান্ডারিয়া ও কাউখালী উপজেলা নিয়ে গঠিত। আসন পূনর্বিন্যাসের কারনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভান্ডারিয়া-কাউখালীর সাথে নেছারাবাদ উপজেলাকে সংযুক্ত করা হয়। ঐ নির্বাচনে জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আইনী জটিলতার কারণে অংশ গ্রহন করতে পারেননি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় সীমানা পরিবর্তন হলে নেছারাবাদ উপজেলাকে বাদ দিয়ে জিয়ানগর উপজেলাকে সংযুক্ত করে পিরোজপুর ০২ আসন গঠিত হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আসন পূনর্বিন্যাস হয়ে নেছারাবাদ – কাউখালী -ভান্ডারিয়া উপজেলাকে নিয়ে পিরোজপুর ০২ আসন গঠিত হয়। যাহা বর্তমান রয়েছে।

বর্ষীয়ান এ নেতা এই আসনে ৩৮ বছর সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি দীর্ঘ ১৮ বছর গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন করেন। যোগাযোগ খাতের উন্নয়নের সূচনা তার হাতেই শুরু হয়। বুড়িগঙ্গা ০১ সেতু তৈরির মাধ্যমেই তিনি দেশবাসীকে তাক লাগিয়ে দেন। তখন বুড়িগঙ্গা সেতুই ছিল বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সড়ক সেতু। মেঘনা সেতু, লালন সেতু, গাবখান সেতু, রূপসা সেতু, আড়িয়াল খাঁ ও ধলেশ্বরী সেতু তার পরিকল্পনায় বাস্তবায়িত হয়।

তিনি দীর্ঘ দিন এমপি ও মন্ত্রী থাকায় তার নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের জীবন মান বদলে ফেলেন। রাস্তা ঘাট, পুল কালভার্ট, স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা ও তার অবকাঠামো নির্মাণসহ অন্যান্য উন্নয়নের মাধ্যমে কাউখালী ও ভান্ডারিয়া উপজেলার সমূদয় চিত্র বদলে ফেলেন। জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর উন্নয়ন কর্ম কান্ড দেখে আশেপাশের উপজেলাবাসী তার মতো একজন সৃষ্টিশীল ব্যক্তিকে তাদের জনপ্রতিনিধি হিসাবে পাওয়ার আশা করছিল। এর কিছুটা সুফল জিয়ানগর উপজেলাবাসী ভোগ করেছে। তার আমলে নির্বাচনী এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় তার ছিলো জিরো টলারেন্স অবস্থান। কোনো দূর্নীতি ও অন্যায় আবদারের সাথে তিনি কখনোই আপোষ করেন নি। তার জমানায় সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ছিলেন নিরাপদ। কারো দলীয় কর্ম কান্ডে তিনি এবং তার নেতাকর্মীরা কখনোই হস্তক্ষেপ করেন নি। তার আমলে পরিবারের সদস্য এবং দলীয় নেতা কর্মীদের রেখেছেন কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে।

কিন্তু পিরোজপুর ০২ আসনের সার্বিক
চিত্র পাল্টে যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে। মাফিয়া সম্রাট হিসেবে খ্যাত সেখ পরিবারের দোসর মোঃ মহিউদ্দিন মহারাজ। শুরু হয় প্রতিপক্ষ দমনে হামলা মামলা। তার ভাই ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পলাতক মিরাজুল ইসলামকে এ কাজে সেনাপতির দায়িত্ব দেন। মিরাজ ভান্ডারিয়া উপজেলাকে নরক পুরিতে পরিনত করে। কাউখালী উপজেলায়ও তাদের তান্ডব শুরু করে। নেছারাবাদ উপজেলার একদল অর্থ লিপ্সু নেতাকে হাত করে সেখানেও তাদের পারিবারিক সাম্রাজ্য সম্প্রসারিত করতে শুরু করে। মাদকের কারবার ছড়িয়ে দেয় সর্বত্র। কিন্তু বিধি বাম। গত বছরের ০৫ আগস্টের পট পরিবর্তনে আত্মগোপনে চলে যায় তারা। ইতিমধ্যে দেড় হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে তারা। দূর্নীতির মামলা মাথায় নিয়ে স্ব-পরিবারে আত্মগোপনে চলে যায় মহারাজ। উন্নয়নের নামে এলাকার রাস্তা ঘাট ধ্বংসস্তুপে পরিনত করে যায়। যার কুফল জনসাধারণকে ভোগ করতে হচ্ছে।

ভান্ডারিয়া এবং কাউখালী উপজেলায় জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর এখনো রয়েছে শক্ত অবস্থান। সবগুলো ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে রয়েছে জেপির কমিটি। সাধারণ জনগণও অধির আগ্রহে অপেক্ষায় আছে তার জন্য। কোনো প্রলোভনেও মানুষ আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে ছেড়ে যেতে রাজী নয়। তাদের কান্ডারী হিসাবে জনাব মঞ্জুকেই তারা চায়।

নেছারাবাদ উপজেলায় দীর্ঘ ১০ বছর জেপি’র কোনো রাজনৈতিক কর্ম কান্ড না থাকায় উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে কোনো কমিটিই সচল ছিল না। কিন্তু বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোট কেন্দ্র ভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। যাহা এখনো বিদ্যমান রয়েছে। হাসিনার বিগত বেইমানী নির্বাচনেও জেপি চেয়ারম্যান নেছারাবাদ উপজেলা থেকে ৩৬ হাজার ভোট পান। নেছারাবাদ উপজেলা জেপির সাবেক সভাপতি মোঃ নাজমুল ইসলাম সাইদ বলেন, নেছারাবাদ উপজেলায় আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ভক্ত অনেক লোক রয়েছে। যারা উন্নয়ন ও নিরাপত্তার স্বার্থে তাকেই ভোট দিবে। তিনি বলেন, জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এ আসনের এমপি হলে প্রথমেই গাবখান নদীতে দ্বিতীয় ব্রীজ নির্মান করে নেছারাবাদের সাথে কাউখালী হয়ে পিরোজপুরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্হাপন করবেন। বিগত সংসদ নির্বাচনে এ পরিশ্রুতি তিনি নেছারাবাদ উপজেলা বাসীকে তিনি দিয়েছিলেন। তাই নেছারাবাদের জনগণ তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

আগামী সংসদ নির্বাচনে জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু’র অংশ গ্রহন বিষয়ে জাতীয় পার্টি জেপি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মাহিবুল হোসেন মাহিম বলেন, বিগত সংসদ নির্বাচনের পর ভান্ডারিয়া উপজেলায় আইন শৃঙ্খলার যে অবনতি ঘটেছে তা এখনো বিদ্যমান। পিরোজপুর ০২ আাসনের সবকটি উপজেলায়ই এর প্রভাব পড়েছে। বিগত ৪০ বছরে এরকম পরিস্থিতি কেউ দেখেনি। চাঁদাবাজি,ঘুষ, সালিশ বানিজ্য,মাদকের কারবার এখন অহরহ চলছে। মহারাজ, মিরাজের মতো দানব জনগনের টাকা মেরে পালিয়েছে। কিন্তু তাদের দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। ঐ দানবের কারণে উন্নয়ন থমকে গেছে। সুস্থ ধারার রাজনীতিকে নষ্ট করে দিয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রানের জন্য এখন জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু’র মতো বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের বিকল্প নাই। তিনি সকলকে আগামী সংসদ নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে বিজয়ী করতে প্রস্তুুতি নেয়ার জন্য আহ্বান জানান।

আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহন বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, সকলে ধৈর্য ধরুন। অপেক্ষা করুন। সময় সবকিছু বলে দেবে। আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন।