আল কাফি : আগামী সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে সকল প্রস্তুুতি গ্রহন করার জন্য দলীয় নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পিরোজপুর ০২ আসনের বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ও নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল্ বেরুনী সৈকত। ঈদ পরবর্তী সময়ে দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে মতবিনিময় ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করে তিনি এ আহ্বান জানান। তিনি গত ১১ জুন নেছারাবাদের বলদিয়া ইউনিয়নে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, খেলাধুলা মানুষকে চিত্ত বিনোদন দেয়। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, মাদক ব্যবসা ও সেবনসহ অন্যান্য সমাজ বিরোধী কাজ থেকে দূরে রাখে। তিনি বলেন, খেলাধুলার নামে যারা মারামারি, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে ক্ষতি সাধন করে তারা বিএনপির লোক নহে। তাদের পরিচয় তারা সন্ত্রাসী। এসব সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান বরাবরই জিরো টলারেন্স। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো : নাজিমুল হক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুরের পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ আবু নাসের।
তিনি এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণের সাথে ঈদোত্তর শুভেচ্ছা বিনিময় ও মত বিনিময় করেন। তিনি এলাকাবাসীর সার্বিক খোঁজ খবর নেন। মতবিনিময়ে তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক। আমাদের সকলের একটি নিজ নিজ অবস্থান ও পরিচয় আছে। আমরা একজন চা দোকানীকে প্রতিপক্ষ ভাবলে আমাদের অবস্থান কোথায় নেমে যায় তা ভেবে দেখা উচিৎ। তিনি বলেন আওয়ামী লীগ যা করেছে আমরাও যদি তা করি তাহলে স্বৈরাচারের সাথে আমাদের পার্থক্য কোথায়? তিনি ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের মধ্যে স্বৈরাচারের দোসররা এবং গনহত্যা মামলার আসামী ইতিমধ্যে ঢুকে পড়েছে। কেউ ব্যাক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য তাদেরকে দলে স্থান দিয়ে দলের ক্ষতি করবেন না। এমন প্রমান কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পাওয়া গেলে তার বিষয়ে দলীয়ভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি আরো বলেন, কেউ নতুন করে বিএনপি ও এর অংগ সংগঠনের সাথে যুক্ত হতে চাইলে তার অতীত কর্ম কান্ড সম্পর্কে বিচক্ষণতার সহিত খোঁজ খবর নিন। মনে রাখতে হবে স্বৈরাচারের দোসররা কখনোই আমাদের বন্ধু নয়। তারা আমাদের মধ্যে প্রবেশ করে বিভিন্ন অপকর্ম করে জনগনের কাছে বিএনপিকে অপরাধী করার চেষ্টা করবে। যাতে বিএনপি সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
তিনি নেতাকর্মীদের উপদেশ দিয়ে বলেন, গণমাধ্যমকে প্রতিপক্ষ মনে করা ঠিক নয়। কোনো প্রতিবেদন সম্পর্কে সংক্ষুব্দ হলে সংশ্লিষ্ট মিডিয়ার সাথে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে তার প্রতিবাদ করতে হবে। গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে আপত্তিকর কথা বললে তারাও আমাদের দূর্বলতা খোঁজবে। যা আমাদেরকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিতে পারে। কথা এবং আচার আচরণে আমাদেরকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি বলেন একজন বিএনপি কর্মী হিসাবে কোনো পোস্ট এর কমেন্টস করতে হলে ভাষার শালীনতা বজায় রাখতে হবে। নইলে ঐ কর্মী এবং দল সম্পর্কে মানুষ নেতিবাচক মন্তব্য করবে। তিনি বলেন উপজেলা নেতৃন্দের কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন নেতার অবস্থান চেইন অব কমান্ড লংঘনের শামিল। গনহত্যা মামলার আসামীকে সহচর বানিয়ে ইতিমধ্যে এক ইউনিয়ন বিএনপি নেতা চেইন অব কমান্ড ভংগের দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছে।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এখন আমাদের প্রধান টার্গেট হলো আগামী সংসদ নির্বাচন। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমাদের সংগঠিত থাকতে হবে। আগামী সংসদ নির্বাচন খুব সহজ হবে না। আমাদের বিরুদ্ধে একাধিক শক্ত প্রতিপক্ষ থাকবে। তার উপর পতিত স্বৈর শাসকের দোসররা তো রয়েছেই। মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আতংক সৃষ্টি করে ভোট আদায় করা যাবে না। সাধারণ ভোটারদের সাথে মিশতে হবে। তাদের মধ্যে বিএনপির আদর্শ প্রচার করতে হবে। পতিত স্বৈরাচারের অপকর্ম তুলে ধরতে হবে। কিন্তু স্বৈরাচারের দোসর এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সহচর বানাবেন না। এতে মানুষের মনে আমাদের বিষয়ে খারাপ মনোভাবের সৃষ্টি হবে।
তিনি তার ঈদোত্তর কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গত ১০ জুন ভান্ডারিয়া উপজেলা সফর করেন। এ সময় তিনি পিরোজপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলুর সাথে দলীয় কর্ম কান্ডের অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করেন। এছাড়াও ভান্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।