ইরান আমরা দুঃখিত, প্লিজ যুদ্ধ বন্ধ করো!-৭৬ বছরের অপরাধের ভারে কাঁপছে ইসরায়েল!

নবজাগরণ বিশেষ উপসম্পাদকীয়-
মো:আবু তাহের পাটোয়ারী:

ইতিহাস বড় নির্মম। অনেক বছর অন্যায় করেও একদিন আপন অপকর্মের বোঝা মাথায় এসে চেপে বসে। আজ সেই সময় এসেছে নরপিশাচ রাষ্ট্র ইসরায়েলের জন্য। ৭৬ বছর ধরে যারা শিশু হত্যা, নারী নির্যাতন, ঘরবাড়ি ধ্বংস, ভূমি দখল, জাতিগত নির্মূল অভিযান চালিয়েছে-তারা আজ রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদছে!

“ইরান, আমরা দুঃখিত! আমরা ফিলিস্তিনিদের কাছে ক্ষমা চাই। আমাদের জন্য দয়া করো-যুদ্ধ বন্ধ করো।”
এই মর্মান্তিক আর্তনাদ এখন ইসরায়েলি রাজপথের দৃশ্যপটে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

কিন্তু প্রশ্ন ওঠে-এতদিন কোথায় ছিলেন আপনারা? ফিলিস্তিনের গাজা যখন রক্তাক্ত হচ্ছিল, শিশুদের লাশ যখন পলিথিনে মুড়িয়ে মাটিচাপা দেওয়া হচ্ছিল, তখন কি এই কান্না আপনার হৃদয় ছুঁয়েছিল? কখনো কি চিন্তা করেছিলেন-এই বর্বরতার কোনো দিনশেষ আছে?

৭৬ বছরের পাপের খতিয়ান: ন্যায়বিচার ছাড়া শান্তি নয়

১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ-সায়ানিস্ট ষড়যন্ত্রে জন্ম নেওয়া অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল গঠনের মধ্য দিয়ে যে ইতিহাসের কলঙ্কচিহ্ন আঁকা হয়েছিল, তার রক্তরেখা আজও মুছেনি। ইউরোপের দখলবাজ সভ্যতার বর্বর অংশীদার হয়ে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইউরোপের একাংশ “গণতন্ত্র” আর “নাগরিক অধিকারের” মুখোশ পরে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে এই গণহত্যায় সহযোগী থেকেছে।

এটা কি ভুলে যাবেন যে, ইসরায়েলের পেছনে বরাবর ছিল গ্রেটার ইসরায়েলের স্বপ্ন? যার আওতায় ছিল লেবানন, সিরিয়া, জর্ডান, মিসর, সৌদি আরব এমনকি মক্কা-মদিনা পর্যন্ত?

ইরান বদলে দিয়েছে খেলার নিয়ম: ইতিহাসের পালা ঘুরেছে

আজ সেই দুঃস্বপ্নে আঘাত হেনেছে ইরান। প্রযুক্তি, কৌশল, এবং সাহসিকতার অপূর্ব সমন্বয়ে ইরান এমন এক প্রতিরোধের বার্তা দিয়েছে যা কেবল সামরিক নয়, একটি সভ্যতা-বিরোধী শক্তির গাঁথুনি উড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা।

ড্রোন, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, সাইবার হ্যামার-সব একযোগে ব্যবহার করে ইরান দেখিয়ে দিয়েছে: “তোমাদের রক্তমাখা আধিপত্য আজ আর নিরাপদ নয়।”
তেলআবিব থেকে হাইফা, ডিমোনা থেকে অ্যাশকেলন-সর্বত্রই এখন আতঙ্ক, বাঙ্কারে ভয়ে কাঁপা ইহুদি জনগণ।

ক্ষমা, কিন্তু দেরিতে: আন্তর্জাতিক ভণ্ডামির মুখোশ ছিঁড়ে পড়েছে

আজ যখন ইসরায়েলিরা কাঁদছে-সেটা হয়তো সত্যি কান্না। কিন্তু এ কান্নার পেছনে রয়েছে অস্তিত্ব সংকট, আত্মরক্ষার কৌশল, একরকম “ক্ষমা চাওয়ার অভিনয়”। তারা জানে-ইতিহাসের চাকা ঘুরছে, আর তাদের হিরো-স্মৃতি এখন দানবের মতো কুখ্যাত।

আমরা প্রশ্ন রাখি-এই কান্না কি ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ আনবে?
এই ক্ষমা চাওয়া কি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াবে?

বিপ্লবের জয়গান: পরিণতি সময়ের দাবি

আমরা যুদ্ধ চাই না। কিন্তু ন্যায় ছাড়া শান্তি হয় না!
ইসরায়েলকে তার অপরাধের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। আমেরিকা-বৃটেন-ফ্রান্স-জার্মানি যারা নীরব ছিল এই হত্যাযজ্ঞে, তাদেরও ইতিহাস বিচারের আওতায় আনতে হবে।

ইরানের এই প্রতিরোধ একটিবারের রকেট যুদ্ধ নয়। এটা ভূরাজনীতির মেরুকরণ। এটা এক প্রতিজ্ঞা-“আর নয় আপোষ, এবার ন্যায়ের বিস্ফোরণ।”

নির্বিশেষে শেষ কথা হচ্ছে : ইতিহাস এখন নতুন নাম লেখাচ্ছে

ফিলিস্তিন এখন শুধু একটি জাতি নয়-এটি এখন প্রতিরোধ, আত্মমর্যাদা আর সভ্যতার প্রতীক। আর ইসরায়েল? আজ তারা ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আর্তনাদ করছে।
দেরিতে হলেও এই ক্ষমা চাওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের সামনে এক সত্য আবার স্পষ্ট হলো: অত্যাচারীর অন্তিম পরিণতি ভয়াবহ।
সবাই শেয়ার করুন।
লেখক :সম্পাদক ও প্রকাশক; নবজাগরণ।
অনলাইনে আরো পড়ুন:
www.thenabajagaran.com

📌 নবজাগরণ কলম বাহিনী