ডেস্ক রিপোর্ট : পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সারেংকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির এক অংশের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ এর সাথে রয়েছে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। বিগত স্বৈর শাসনের আমলে তার আওয়ামী প্রীতির চিত্র ভেসে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ বিষয় নিয়ে স্হানীয় বিএনপির মধ্যে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। গত ২৬ মে এবং ১০ জুন সারেংকাঠী ইউনিয়নের করফা বাজারে আবদুল আলিমের চায়ের দোকানে তারই নেপথ্য ইন্ধনে একদল সন্ত্রাসী দুদফা হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। সন্ত্রাসীদের ভয়ে আজও চা দোকানী তাঁর দোকান খুলতে পারছেনা বলে জানা গেছে। তার এসকল অপকর্ম নিয়ে জাতীয় সাপ্তাহিক নবজাগরণ অনলাইন সংস্করণে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ইহাতে সংক্ষুব্দ হয়ে কোনো নিয়মনীতি অনুসরণ না করে ১৪ ই জুন করফা বাজারে খোলামেলা স্থানে ব্যানার টানিয়ে নবজাগরনের বিরুদ্ধে একটি সংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করে। স্থানীয় প্রেস ক্লাব ও মুলধারার সংবাদ কর্মীদের এ বিষয়ে অবহিত করা হয় নি বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে স্থানীয় বিএনপির একটি সূত্র জানায় আসাদের সহচররা অপরিপক্ক এবং তাদেরকে সাথে নিয়ে এ কাজ করে তার অপকর্ম জনসন্মূখে আরও প্রকাশ পেয়েছে। ইহাতে দল হিসাবে আমরা বিব্রত বোধ করছি। তিনি বলেন একজন বিএনপি নেতা পরিচয়দানকারী যদি চা দোকানীকে প্রতিপক্ষ বানায় তাহলে তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।
আসাদের বিগত এবং বর্তমান রাজনৈতিক কর্মকান্ড বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সে বিএনপির ব্যানারে রাজনীতির আড়ালে আওয়ামী লীগের সাথে সখ্যতা বজায় রেখে নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করেছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নেছারাবাদের সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুহিদুল ইসলাম মুহিত, সারেংকাঠী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ সায়েম বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সাথে রয়েছে অনুষ্ঠানে উপস্থিতির তার ঘনিষ্ঠ ছবি। তার বর্তমান সহচরদের মধ্যে রয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র লীগের বরিশাল জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বরিশালের ত্রাস সাদিক আব্দুল্লাহর ক্যাডার রেজবী আহমেদ রাজা রাড়ী। উক্ত রাজা রাড়ী সারেংকাঠী ইউনিয়নের বিষ্ণুকাঠী গ্রামের
বাদশা রাড়ীর পুত্র বলে জানা গেছে। উক্ত রাজা রাড়ী ০৫ আগষ্টের পর বরিশাল ছেড়ে নিজ এলাকায় গিয়ে বিএনপির নাম ধারণ করে আসাদের ছত্র ছায়ায় রয়েছে। আসাদের আরেক দোসর পূর্ব সারেংকাঠীর আওয়ামী ঘরনার রাজ্জাক মোল্লা। তার দোকানই ছিলো একসময় আওয়ামী লীগের আস্তানা। মাফিয়া সম্রাট মহিউদ্দিন মহারাজ ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মুহিদুল ইসলাম মুহিতের দোসর হিসাবে সে পরিচিত। সারেংকাঠী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ সায়েম এবং বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামেরও আস্তানা ছিলো এ রাজ্জাক মোল্লার দোকান। বর্তমানে তার দোকানটি আসাদুজ্জামান আসাদের সকল অপকর্মের পরিকল্পনা তৈরীর আস্তানায় পরিনত হয়েছে এবং রাজ্জাক মোল্লা ভোল পাল্টে আসাদের সহচরে পরিনত হয়েছে।
এলাকাবাসী এবং বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে আসাদ এখন বিএনপি সংগঠিত করতে ব্যাস্ত নয়। সে এখন ব্যাস্ত সারেংকাঠীর ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য। এ উদ্দেশ্যকে হাসিল করার জন্য সে আওয়ামী লীগের দোসর, গনহত্যা মামলার আসামী, ইউপি নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ক্যাডারদের নিয়ে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। বিএনপি সাইনবোর্ডের আড়ালে ইতিমধ্যে এ বাহিনীকে ব্যাবহার করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে জানান দিয়েছে যে, সে এলাকার পরবর্তী চেয়ারম্যান। এলাকাবাসী ইতিমধ্যে মন্তব্য করতে শুরু করেছে ভাব দেখে মনে হয় আসাদ এখই চেয়ারম্যান হয়ে গেছে। এ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির সাবেক ইউনিয়ন সভাপতি মরহুম গোলাম মোস্তফা সরদার ২০১৬ সালে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন। তার ঘনিষ্টজন ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতা বলেন, গোলাম মোস্তফা সরদারের মনোনয়ন দাখিলের সময় উক্ত আসাদ এবং ঘনিষ্ট সহচর জায়েদুল করিম নোমান অনুপস্থিত থাকেন। সূত্রটি আরো জানায় তারা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গোপনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
ইউনিয়ন বিএনপির একটি সূত্র জানায় খুব শীঘ্রই তৃণমূল বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত কাউন্সিলে ইউনিয়ন বিএনপির শীর্ষ পদ ধরে রাখার জন্য আসাদ তার নিজস্ব ব্যাবস্থাপনায় সদস্য সংগ্রহ ফরম পূরণ করান। একাধিক সূত্রে জানা গেছে বিগত সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে তাদেরকে দিয়ে সদস্য ফরম পূরণ করিয়েছে। ঐ সূত্রটি আরও জানায় আগামী বৃহস্পতিবার সদস্য ফরম বাছাই হবে। তার পরই শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে আসাদ আগামী ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচন করার জন্য কতজন আওয়ামী লীগকে বিএনপিতে পূনর্বাসন করেছে। আসাদ সম্পর্কে উপজেলা বিএনপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, উপজেলা পর্যায়ের নেতা এক গনহত্যা মামলার আসামীকে তাদের দলের লোক নয় বলে প্রত্যায়ন দেন। কিন্তু আসাদ উক্ত নেতার বিরুদ্ধে গিয়ে ঐ গনহত্যাসহ একাধিক মামলার আসামীকে তার সহচর বানিয়ে নেয়। যাহা দলীয় শিষ্টাচার ও শৃঙ্খলা লংঘনের শামিল। ( আসাদ ও তার বাহিনীর সদস্যদের অতীত রাজনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে জানতে নবজাগরনের সাথে থাকুন)।