অগ্নিকাণ্ডের ছাই থেকে মানবিকতার দীপ্তি: সৈয়দ হারুন ফাউন্ডেশন যে বার্তা দেয়

নবজাগরণ রিপোর্ট:
সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ৫নং অর্জুনতলা ইউনিয়নের গোরকাটা গ্রামে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড কেবল একটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়নি, পুড়িয়ে দিয়েছে একটি পরিবারের স্বপ্ন, নিরাপত্তা আর মৌলিক অস্তিত্ব। সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া হারুনের পরিবার যখন দিশেহারা, তখনই আশার আলো হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে সৈয়দ হারুন ফাউন্ডেশন।

এই ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা লায়ন সৈয়দ হারুন এমজেএফ, যিনি একাধারে টপস্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এস এফ গ্রুপের চেয়ারম্যান, তাঁর মানবিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছেন এই ঘটনায়। তাঁর অনুপ্রেরণায় ফাউন্ডেশনের সদস্যরা স্বয়ং উপস্থিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে অর্থসহায়তা পৌঁছে দেন।

এই সহায়তা শুধু আর্থিক নয়-এটি এক মানবিক দর্শনের ঘোষণা, একটি সামাজিক চেতনার প্রতিধ্বনি। এই সহযোগিতায় যেমন আছে তীব্র মানবিক বেদনার প্রতি সম্মান, তেমনি আছে এক সংগ্রামী সমাজ নির্মাণের প্রত্যয়।

সমাজের সামনে আয়না ধরলেন সৈয়দ হারুন
আমরা এমন এক সময় পার করছি যখন দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বদলে অনেকে ফেসবুক লাইভে কাঁদতে ব্যস্ত, ক্যামেরার সামনে কান্না দেখানো হয়, কিন্তু ব্যাকপ্যাক ভর্তি হয় না কোনো চাল-ডাল বা ওষুধ। অথচ সৈয়দ হারুনের মতো মানুষরা চুপিচুপি কাজ করেন, প্রচারের মোহে নয়-দায়িত্ববোধের গভীরতা থেকেই।

এই ঘটনার মাধ্যমে তিনি শুধুমাত্র হারুন নামের একজন ব্যক্তিকে সহায়তা দেননি, বরং গোটা সমাজের বিবেককে নাড়া দিয়েছেন। তিনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন-শুধু রাষ্ট্রের উপর ভরসা করে নয়, সমাজের সচেতন নাগরিকদেরও এগিয়ে আসা উচিত।

শিক্ষা, জনকল্যাণ ও সামাজিক দায়বদ্ধতায় তাঁর ভূমিকা অনন্য
সৈয়দ হারুন এমজেএফ-এর অবদান কেবল বিপর্যয়ের মুহূর্তে সীমাবদ্ধ নয়। শিক্ষা বিস্তারে তাঁর আগ্রহ, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি, স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততা তাঁকে ব্যতিক্রমী করে তুলেছে। তিনি বিশ্বাস করেন, একটি জাতিকে জাগাতে হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবিক সহানুভূতি-এই তিনটি অস্ত্রই যথেষ্ট।

অগ্নিকাণ্ডের ছাই থেকে আশার আলো
এই ঘটনার মাধ্যমে নতুন করে প্রমাণিত হলো-একটি সংঘবদ্ধ সমাজ শুধু প্রতিবাদ জানায় না, প্রতিরোধও গড়ে তোলে। সৈয়দ হারুন ফাউন্ডেশন ঠিক সেটাই করছে। তাঁদের হাতে শুধু সাহায্যের খাম নয়, থাকে সাহসের বার্তা। একজন মানুষ বিপদে পড়লে-তাঁকে একা ফেলে রাখা নয়, হাত বাড়িয়ে দেওয়া মানবতার সেরা শিক্ষা।

আহ্বান?
আজ সৈয়দ হারুনদের সংখ্যা যত বাড়বে, ততটাই ভাঙবে সমাজের জড়তা, দুর্বলতা, পুঁজিবাদী আত্মকেন্দ্রিকতা। আমরা চাই-এই মানবিক দৃষ্টান্ত যেন দৃষ্টান্ত হয় প্রশাসনের, বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের, প্রবাসীদের, তরুণ সমাজকর্মীদের জন্য। কারণ, মানবতা আর দায়িত্ববোধ মিলেই রচিত হয় এক নতুন সমাজের বুনিয়াদ।