ঘুণপোকা নয়, তারা মানুষ: ভারত সরকারের বিচারবহির্ভূত মুসলিম বহিষ্কার নীতির বিরুদ্ধে বলার সময় এখনই

নবজাগরণ বিশেষ প্রতিবেদন: ২৭ জুন ২০২৫
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গ্রেফতার ও বহিষ্কারের শিকার মুসলিম অভিবাসীরা
“কোনো ধরনের বিচার ছাড়াই শত শত মানুষকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে ভারত” – এএফপি।
ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা রাজ্যগুলো থেকে সম্প্রতি যে দৃশ্য উঠে এসেছে-তা শুধু ভয়াবহ নয়, এটি স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের দলিল। অসংখ্য নিরপরাধ, বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানকে ভারত সরকার কেবল জাতিগত পরিচয়ের কারণে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে-বিচার, নোটিশ, এমনকি কোনো কাগজপত্র ছাড়াই।

এই ঘটনার নেপথ্যে আছে বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি ও ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ নামের একটি ভয়ংকর বিভাজনমূলক বর্ণবাদী ন্যারেটিভ। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর একক সিদ্ধান্তে বাংলাভাষী মুসলিমদের ধরে নিয়ে আটকাগারে পোরা হচ্ছে, এরপর বহিষ্কার করে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশের দিকে।

বাস্তবতা ও পরিসংখ্যান:
ভারতের ২০ কোটির বেশি মুসলমান এখন নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে আতঙ্কে।

আসাম NRC প্রকল্পে ইতোমধ্যে ১৯ লক্ষ মানুষের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই মুসলিম।

বাংলাদেশ সরকার কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছাড়াই এই ধরনের “গুপ্ত বহিষ্কার” মেনে নিচ্ছে-যা আত্মমর্যাদার চরম অবক্ষয়।

ছবির ভাষায় বলি:
উপরে সংযুক্ত ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে-দলবদ্ধভাবে আটকে রাখা হয়েছে শত শত পুরুষ, নারী ও শিশুদের। কোথাও তারা মাটিতে বসে আছে মাথা নিচু করে, কোথাও সেনা বা পুলিশের নজরদারিতে এক লাইনে বসানো, কোথাও আবার মহিলারা সন্তানদের কোলে নিয়ে নিরুপায় চেহারায় তাকিয়ে আছে বিশ্ব বিবেকের দিকে।

এই দৃশ্যের প্রতিটি ফ্রেম আমাদেরকে প্রশ্ন করে-

আমরা কি একবিংশ শতাব্দীতে এখনও ‘জাতি-ধর্মের ভিত্তিতে নির্বিচার বহিষ্কার’কে সহ্য করবো?
মানবতা ও প্রতিবাদের ডাক:
এই ধরনের বিচারবহির্ভূত বহিষ্কার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, জাতিসংঘের শরণার্থী সনদ ও ভারতীয় সংবিধানকেও লঙ্ঘন করে।

বাংলাদেশ সরকারকে স্পষ্টভাবে জিজ্ঞেস করা দরকার-“আপনি কার সম্মতিতে এদেরকে ঢুকতে দিচ্ছেন?”

আন্তর্জাতিক আদালত, মানবাধিকার সংস্থা ও ওআইসি’র উচিত অবিলম্বে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিন্দা ও পদক্ষেপ গ্রহণ।

❝ঘুণপোকা নয়, তারা মানুষ। এই বর্বরতার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ শুধু প্রতিবাদ নয়, তা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।❞
আপনার চোখে যা কাঁটা, কারো চোখে সে সন্তান।
এখনই সময়, একসাথে বলার-Enough is Enough!