“চরবৃত্তির ৫০ বছরের খেলা: ইরান, বাংলাদেশ ও মুসলিম বিশ্বে বিশ্বাসঘাতকদের অন্তর্জাল”

ধারাবাহিক তথ্য- নবজাগরণ বিশেষ সিরিজ পর্ব–২
ভূমিকা: মেহরাবের ভিতরে ঢুকে পড়া শত্রু
চরবৃত্তি শুধু সীমান্ত পেরিয়ে গুপ্তচর পাঠানো নয়-
চরবৃত্তি এখন চেতনার মেহরাবে ঢুকে ধর্মের ভাষা, আকীদার প্রতীক, আলেমের পোশাক, স্কলারের মুখোশ পরেই গোটা সমাজকে ধ্বংস করে।

১৯৭৫ থেকে ২০২৫- এই ৫০ বছরে ইসরায়েলের মোসাদ, ভারতের RAW, আমেরিকার CIA, ব্রিটিশ MI6, সৌদি GIP, ইরানের VEVAK, কাতারের Mukhabarat — সবাই মুসলিম বিশ্বে চর প্রেরণের এক ত্রিমাত্রিক মিশন চালিয়েছে:

ধর্মীয় মঞ্চ দখল (মসজিদ-মাদ্রাসা)

রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার (ইসলামী দল infiltrate)
অর্থনীতিতে নিয়ন্ত্রণ (ওয়াকফ, দাতব্য সংস্থা, এনজিও)
পর্ব ১: ১৯৭৫–১৯৯১ | যুদ্ধোত্তর যুগের ছদ্মবেশী চরনীতি

১. ইরান: শাহ পতনের পর চর খেলা
১৯৭৯ সালে ইমাম খোমেনীর বিপ্লব ইসরায়েলের দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়ায়।

মোসাদ “Operation Mahdi” নামে একটি দীর্ঘমেয়াদি চর-গঠনের পরিকল্পনা নেয়।

তথ্যসূত্রে জানা যায়, ১৯৮০-এর দশকে ২৫০০ ফারসি-ভাষী ইহুদি শিক্ষার্থীকে আলেম সাজিয়ে পাঠানো হয়েছিল কুম ও তেহরানে।

এদের কয়েকজন আজ অবধি মেহরাবে ইমাম, ইউটিউবে স্কলার, মসজিদে মুরুব্বী!

২. বাংলাদেশ: জিয়া ও এরশাদ আমলে চর-অনুপ্রবেশের ভিত্তি
১৯৭৮ সাল থেকে সৌদি গোয়েন্দা সংস্থা GIP ও পাকিস্তানি ISI এর মাধ্যমে মাদ্রাসা ও ইসলামী দলগুলোতে অনুপ্রবেশ শুরু।

১৯৮২ সালে এক সৌদি ফান্ডেড মাদ্রাসা প্রকল্পে ২৩ জন “বাংলাদেশি” আলেম আসলে ছিলেন পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী ISI ক্যাডার!

১৯৮৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যায় “RAW infiltration” – কিছু মুসলিম সংগঠনে হিন্দিভাষী এজেন্টকে রিক্রুট করা হয়।

পর্ব ২: ১৯৯1–২০০১ | উপসাগর যুদ্ধ ও ইসলামি আন্দোলনে চরবৃত্তির উত্থান

৩. আল কায়েদা-তালেবান যুগে CIA infiltration
আফগান যুদ্ধে মুজাহিদিনদের ভেতর ঢুকে CIA ও Mossad এজেন্টরা একদিকে অস্ত্র দেয়, অন্যদিকে র‍্যাডিকাল চিন্তা ছড়ায়।

১৯৯৮ সালের পর ইরাকে মোসাদ “আলেম ট্রেনিং প্রোগ্রাম” চালায় – উদ্দেশ্য: শিয়া-সুন্নি বিভাজন সৃষ্টি।
ইরাকের “মেহরাব কমান্ডার” নামে একজন ইমাম ২০০৬ সালে ধরা পড়েন; তিনি ছিলেন ব্রিটিশ গোয়েন্দা বিভাগের এজেন্ট!

পর্ব ৩: ২০০১–২০১১ | ৯/১১ পরবর্তী বিশ্ব: ইসলামের নামে ইসলাম ভাঙার প্রকল্প

৪. পেট্রো-ডলার ভিত্তিক চেতনানাশক দাওয়াত
সৌদি আরব ও কাতার বিশ্বজুড়ে “মডারেট ইসলাম” প্রচারের নামে এক প্রকার চর রপ্তানি প্রোগ্রাম চালায়।

বাংলাদেশে ২০০৪–২০১০ সালের মধ্যে ৩৭টি মসজিদ ও মাদ্রাসায় মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা দাওয়াতি ‘আলেম’ ছিল, যাদের অনেকেই পরবর্তীতে সন্দেহভাজন।

২০০৮ সালে চট্টগ্রামে এক ইসলামি বক্তা ধরা পড়ে যার সংযোগ ছিল দুবাই ভিত্তিক এক মডারেট ইসলাম NGO-র সঙ্গে, কিন্তু তার আসল পরিচয় ছিল: মোসাদ-সমর্থিত দাতব্য গোষ্ঠীর মিডিয়া অপারেটর!

পর্ব ৪: ২০১১–২০২4 | আরব বসন্ত থেকে বাংলাদেশে মিডিয়া-ইমাম ইনফিল্ট্রেশন

৫. সিরিয়া-ইরাক যুদ্ধের ছদ্ম পরিণতি: মেহরাব দখল
ইসলামী বক্তারা হঠাৎ করে ইউটিউব, ফেসবুক, টিকটকে ভাইরাল হচ্ছেন- কে কাকে ফান্ড করছে?

মেহরাব, মাদ্রাসা, লেকচার সবখানে বিতর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশে ২০১৭-২০২২ মধ্যে এমন ১৪ জন বক্তার নাম উঠে আসে যারা কাতার, তুরস্ক বা সৌদি ঘরানার এজেন্ডা বহন করে।

পর্ব ৫: ২০২৫ ও ভবিষ্যত | “আলেম, অ্যাক্টিভিস্ট ও এনজিও” – কারা?
৬. মিডিয়া-আলেম-এনজিও: আধুনিক চর বৃত্তির ত্রিমূর্তি

আজকের চর আর আগের মতো গোপনে থাকে না। সে আলোচনায় আসে, “ডিবেট জিতবে, কিন্তু জাতি হারাবে।”

অনেকে রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য “বুদ্ধিবৃত্তির নামে” দিয়ে চেতনায় ফাটল তৈরি করে।
পলিটিক্যাল ইসলাম বনাম স্পিরিচুয়াল ইসলাম- এই বিভাজন আজ চরদের প্রধান হাতিয়ার।

এখনই চাই “জাতীয় চেতনা নিরাপত্তা আইন”
চরবৃত্তির ধরন এখন মিডিয়া, মেহরাব ও মাইক্রোফোন ঘিরে।
চররা এখন ইউটিউব স্কলার, ফেসবুক বক্তা, আন্তর্জাতিক এনজিও কর্মী।
তাদের থামাতে চাই তথ্যনির্ভর গবেষণা, জাতীয় র‌্যাডার, এবং জনগণের সজাগ চোখ।

পরবর্তী পর্বে আসছে:
“Operation Mahdi: কিভাবে ইহুদি এজেন্ট ‘আলেম’ সাজিয়ে ইরানে ঢুকেছে?”
“RAW ও GIP-এর টাকার পেছনে বাংলাদেশের ইসলামপন্থী রাজনীতি?”
“মিডিয়া ও এনজিওকে ব্যবহার করে ইসলামপন্থা-জাতীয়তাবাদের দমন কৌশল”