নবজাগরণ রিপোর্ট: ঢাকা,১০ জুলাই ২০২৫
“সংস্কৃতি হোক মানুষের কণ্ঠস্বর, অনুপ্রেরণা ও জাগরণ”এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে আজ রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হলো গণসংস্কৃতি পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষণা ও এক অনন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গণঅধিকার পরিষদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা এই সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম নতুন এক বিপ্লবী চেতনার বার্তা নিয়ে উঠে এসেছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন দেশের অন্যতম ছাত্র ও নাগরিক আন্দোলনের নেতা গণঅধিকার পরিষদের চেয়ারম্যান ভিপি নুরুল হক নুর। তার দৃপ্ত কণ্ঠে উচ্চারিত কথাগুলো যেন বিদ্যুৎ খেলে দিলো উপস্থিত জনতার হৃদয়ে।
“সংস্কৃতি কেবল বিনোদনের উপকরণ নয়, সংস্কৃতি হচ্ছে সংগ্রামের ধারক ও বাহক। শোষিতের, নিপীড়িতের, বঞ্চিতের কণ্ঠস্বর। আমাদের জাতীয় পুনর্গঠন আন্দোলনের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হবে গণসংস্কৃতি। আজ যারা গান গায়, নাটক করে, কবিতা লেখে-তারা আসলে আগুন নিয়ে খেলে। এ আগুন হবে প্রতিরোধের আগুন।”
নতুন কমিটি,নতুন যাত্রা:
অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হয় গণসংস্কৃতি পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি।উক্ত কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব রফিকুল ইসলাম রফিক, সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তরুণ সংগঠক ও লেখক মাহমুদ শাকিল। কমিটিতে রয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উঠে আসা কবি, শিল্পী, নির্দেশক ও লোকগানের কণ্ঠস্বররা-যারা শহর ও গ্রামের সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে জনগণের প্রাণের কথা বলতে প্রস্তুত।
গান, কবিতা ও নাটকে উঠে এলো জীবনের কথা!
সংস্কৃতিক সন্ধ্যায় পরিবেশিত হয় গণসংগীত, প্রতিরোধ কবিতা ও নাট্যাংশ। লোকসঙ্গীত শিল্পী শ্যামলী সরকার ‘পিঞ্জর ভাঙার গান’গেয়ে মুগ্ধ করেন শ্রোতাদের। নতুন প্রজন্মের কবি তানভীর আহমেদ কবিতা আবৃত্তি করেন“এই যে হাড়ে হাড়ে জমে থাকা ক্ষোভ”-শিরোনামে। আর মঞ্চে অভিনীত হয় ক্ষুদ্র নাট্যাংশ“অভিশপ্ত সনদ”-যেখানে ৭৫-পরবর্তী রাষ্ট্রীয় চক্রান্ত ও সাংস্কৃতিক হত্যার ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়।
ভবিষ্যতের ঘোষণা: শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সাংস্কৃতিক বিপ্লব?
নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে যে, তারা শিগগিরই দেশের ৬৪ জেলায় সাংস্কৃতিক সফর শুরু করবে। পথনাটক,গণসংগীত, কবিতা পাঠ, আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং মুক্ত আলোচনার মধ্য দিয়ে জনতার চিন্তা জাগাতে তারা বদ্ধপরিকর। ভিপি নুর ঘোষণায় বলেন:
“শুধু রাজনীতিতে নয়,সংস্কৃতির মঞ্চেও চাই গণঅধিকার বিপ্লব। শহরে এলিট সংস্কৃতির বদলে জনতার, শ্রমজীবী মানুষের, নারীর,সংখ্যালঘু ও প্রান্তিকের সংস্কৃতিই হবে নতুন রাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক ভিত্তি।”
সংস্কৃতি আর নিরব থাকবে না!
এই অনুষ্ঠান একটি ঘোষণা নয়,এটি এক ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন। সংস্কৃতিকে রাজনীতি থেকে আলাদা করার যে পুরনো ষড়যন্ত্র, তা এখন ভেঙে চুরমার। আজকের অনুষ্ঠান প্রমাণ করলো-সংস্কৃতি আর নিরব থাকবে না। সংস্কৃতি হবে এখন সংগ্রামের হাতিয়ার, মুক্তির অস্ত্র, এবং নতুন রাষ্ট্র নির্মাণের সেতু।
সংযুক্ত ঘোষণা:
আগামী মাসে ঢাকাসহ পাঁচটি বিভাগীয় শহরে‘গণসংস্কৃতি মেলা’আয়োজনের পরিকল্পনার কথাও জানানো হয়েছে। সবাইকে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়,বিশেষ করে তরুণ শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের।
তথ্য সূত্র:যুবঅধিকার নেতা-সাংবাদিক:মো:মুজাহিদুল ইসলাম।