নবজাগরণ ডেস্ক:১৮ জুলাই ২০২৫
যারা ক্ষমতার চাটুকারিতা করে সংগঠন দখল করে, যারা সরকারি লাইসেন্সকে বানিয়ে ফেলে ব্যক্তিগত ধন-সম্পদের উৎস, যারা সাধারণ সদস্যদের অধিকারকে পদদলিত করে সিন্ডিকেটের তাবেদারিতে সংগঠনের নামে ব্যবসা করে-তাদের জন্য এ এক চূড়ান্ত বার্তা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির (Bangladesh Printing Industry Association) পকেট কমিটির বিরুদ্ধে তলোয়ার হাতে নামল-একটি নিরপেক্ষ, প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে নির্বাচিত কমিটি গঠনের মাধ্যমে।
কী ঘটেছে?
১৮ জুলাই ২০২৫-এ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের (বাণিজ্য সংস্থা-২ শাখা) এক অফিস আদেশে স্পষ্ট জানানো হয়-
বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ।
নানা অনিয়ম ও দায়িত্বহীনতার কারণে তারা আর আইনগতভাবে বৈধ নয়।
অতএব, সমিতির সব কার্যক্রম এখন থেকে নিয়ন্ত্রণ করবেন সরকারের মনোনীত একজন সিনিয়র কর্মকর্তা।
১৩১ দিনের মধ্যে এই কর্মকর্তা একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করবেন।
এই ঘোষণা যেন একপ্রকার ‘দুর্নীতিবাজদের মৃত্যুঘণ্টা’।
পকেট কমিটি: কারা ছিল এরা?
বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প খাত হাজার হাজার কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সংবাদপত্র, প্রকাশনা, কর্পোরেট কোম্পানি – সবাই নির্ভর করে এই খাতের উপর। অথচ এই বিশাল খাতের নেতৃত্ব গত কয়েক বছর ধরে ছিল:
অদৃশ্য সিন্ডিকেটের হাতে,
ভুয়া সদস্য ও ঘনিষ্ঠ লোক দিয়ে সাজানো কমিটিতে,
ক্ষমতার মদদে সৃষ্ট ‘ক্যাবল গ্যাং’-এর নিয়ন্ত্রণে।
এই পকেট কমিটি দীর্ঘদিন ধরে:
নির্বাচনের নামে নাটক করেছে,
ভুয়া সদস্য বানিয়ে আসল উদ্যোক্তাদের বাদ দিয়েছে,
সংগঠনের নাম ব্যবহার করে ঘুষ, নিয়োগ বানিজ্য, প্রকল্প আত্মসাৎ করেছে।
রাষ্ট্র নিজেই ‘বিপ্লব’ ঘটাল
বহুদিন ধরে শিল্প উদ্যোক্তারা গলা শুকিয়ে চিৎকার করেছেন-তাদের কেউ শোনেনি।
কিন্তু এবার রাষ্ট্র নিজেই ঘুষখোরদের আসন উল্টে দিলো। সরকারপক্ষ থেকে একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা (মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, যুগ্মসচিব) নিয়োগ দিয়ে গণতান্ত্রিক পুনরুত্থানের সিঁড়ি তৈরি করল।
এটি শুধু একটি সমিতির বিচার নয়-এটি সেই সমস্ত ‘পেশাদার সংগঠন দখলদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা।
কী চাই আমরা? নির্বাচনের আগেই সকল ভুয়া সদস্য তালিকা বাতিল করতে হবে। প্রতিটি আসল প্রিন্টিং প্রতিষ্ঠানের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।দুর্নীতির সাথে যুক্ত আগের কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ মুদ্রণ শিল্প সংগঠন গঠন করতে হবে।