অদৃশ্য শক্তি প্রকাশ্য রুপ নিচ্ছে, ফাঁদে পা দেয়া যাবে না – আবদুল্লাহ আল্ বেরুনী সৈকত

বিশেষ প্রতিনিধি : বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করার জন্য অদৃশ্য শক্তি এখন প্রকাশ্য রুপে আবির্ভুত হচ্ছে। তাদের ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য বিএনপির নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পিরোজপুর ০২ আসনের বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ও নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল্ বেরুনী সৈকত। তিনি বিএনপি দলীয় নেতা কর্মী তথা পিরোজপুর ০২ আসনের সাধারণ জনগণের প্রতি ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে ঠিকই। শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ নেতাদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। অনেকেই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। কিন্তু তাদের দোসররা এদেশের ভিতরে প্রকাশ্যে এবং আত্মগোপনে থেকে বিএনপি যেন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে না পারে তার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এতদিন আওয়ামী লীগকেই বিএনপির প্রতিপক্ষ হিসেবে ভাবা হত। কিন্তু অতি সম্প্রতি এর সাথে যুক্ত হয়েছে আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল। যারা পূর্বে নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছে কিন্তু তারা এখন ঘোষণা দিয়ে একতাবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছে। তারা আগামী সংসদ নির্বাচনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। জুলাই – আগস্টের হাজারো শহীদের রক্তের সাথে তারা বেইমানী করতে শুরু করেছে। গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথকে তারা বাধাগ্রস্ত করছে। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন হলে বিএনপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করবে। এটা নিশ্চিত জেনে ঐ গোষ্ঠীটি বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছে।

তিনি পিরোজপুর ০২ নির্বাচনী এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি বর্ননা করতে গিয়ে বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমাদের কর্মসূচী চলমান। ইতিমধ্যে এ আসনের একমাত্র কাউখালী উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ৫ টি ইউনিয়ন ও উপজেলা কাউন্সিল সম্পন্ন হয়। তিনি বলেন ভান্ডারিয়া উপজেলার সর্বত্র কাউন্সিল নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যার পিছনেও জেপি ও মহারাজ লীগের অনুপ্রবেশ কারীদের ভুমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের দলীয় কতিপয় নেতার মহারাজ লীগ ও জেপি’র প্রতি দূর্বলতার কারণে এ বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে নেছারাবাদ উপজেলার স্বরুপকাঠী পৌরসভার কাউন্সিল নিয়ে এক উত্তপ্ত ও মারমুখী পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নিজেদের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে সংবাদ সন্মেলন করে নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেছে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে পূনর্বাসনের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন কর্মসূচীতে স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহনের ছবিও তুলে ধরা হয়। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

নেছারাবাদ উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির সদস্য ফরম যাছাই বাছাই মাঝ পথে বন্ধ হয়ে যায়। বাছাই চলাকালীন এ উপজেলার শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতাদের আওয়ামী লীগের সাথে ছবি উপস্থাপন করা শুরু হলে ফরম যাছাই বাছাই স্থগিত করেন দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়াও নিজ কর্মী সমর্থকদের দল ভারী করতে আওয়ামী সংশ্লিষ্টদেরও বিএনপি দলীয় সদস্য ফরম পূরণ করানোর অভিযোগ ওঠে অনেক নেতার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল্ বেরুনী সৈকত বলেন, আওয়ামী লীগের দোসরদের সাথে যার ছবি রয়েছে তাকে কোনো কমিটিতে স্থান না দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। এ নির্দেশের বেড়াজালে যদি কেউ আটকে যায় তবে ধরে নিতে হবে এটা তার পাওনা ছিল। যারা বিএনপির সাইনবোর্ড ব্যাবহার করে আওয়ামী লীগের নিকট থেকে স্বার্থ আদায় করেছে। কোনো রুপ হামলা মামলার শিকার না হয়ে নিরাপদ জীবন যাপন করেছে। তাদেরকে দলীয় শাস্তির আওতায় আনা উচিৎ। তিনি আরও বলেন, ঐ সব নেতারা শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী বিশ্বাস করেছিল ২০৪১ সালের আগে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার পরিবর্তন হবে না। তাই তারা আওয়ামী লীগকে তাদের বন্ধু বানিয়ে নিয়েছিল। তিনি বলেন, আমাকে আওয়ামী লীগ তাদের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়ার দুঃসাহসও দেখায়নি কখনো।

এলাকায় চাঁদাবাজি সহ সন্ত্রাসী কর্ম কান্ডে বিএনপি কর্মী সমর্থকদের জড়িত থাকার অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান বরাবরই জিরো টলারেন্স। আমার কোনো অনুসারীর বিরুদ্ধে এরকম কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় নি। তিনি বলেন, আমাদের দল সরকারে নেই। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যাবস্থা নেয়ার দায়িত্ব সরকার ও প্রশাসনের। তারা যদি কোনো পদক্ষেপ না নেয় এটা তাদের ব্যার্থতা।
তিনি এলাকার নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোড়া ছুড়ি করলে সুবিধা ভোগীরা সুযোগ নিবে। তাই আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। ঐক্যের কোনো বিকল্প নাই।