নবজাগরণ-সেনবাগ থেকে বিশেষ প্রতিনিধি:
বাংলা ক্যালেন্ডারের ইতিহাসে জুলাই মাস যেন এক বিপ্লবী আত্মদানের মাস। এ মাসে কতজন তরুণ তাদের বুকের রক্তে রাঙিয়ে দিয়েছিল জাতীয় চেতনাকে, জাগিয়ে তুলেছিল মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্রের দাবিকে। সেই মহান শহীদদের স্মরণে, তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের আহ্বানে আজ শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫ নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা’র অংশ হিসেবে ‘প্রতীকী ম্যারাথন’।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন-এর সুচিন্তিত পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায়, অদম্য উদ্যোগ এবং দেশপ্রেমবোধ থেকেই এই প্রতীকী ম্যারাথনের আয়োজন বাস্তবায়ন হয়। তাঁর নেতৃত্বে সেনবাগবাসী পেয়ে যাচ্ছে এক নবচেতনাসমৃদ্ধ প্রশাসনিক দিকনির্দেশনা, যা শুধু আনুষ্ঠানিকতার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়-বরং গণচেতনা সৃষ্টির একটি শক্তিশালী মাধ্যম।
উপস্থিত সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ:অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ;সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাবেদ মাহমুদ;উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ কামরুল হাসান;বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী নুরুল ইসলাম;সেনবাগ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল খায়ের;উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট সমাজসেবক মোঃ আনোয়ার হোসেন;ছাত্র সমন্বয়করা।এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ,স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা, সাংস্কৃতিক কর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
এই বিশাল উপস্থিতি প্রমাণ করে-সেনবাগ আজ জেগেছে, তারুণ্য আজ ইতিহাসকে ধারণ করে ভবিষ্যতের জন্য শপথ নিচ্ছে।
প্রতীকী ম্যারাথনের রাজনীতি ও প্রতিরোধ
এই আয়োজন শুধু একটি খেলাধুলার অনুষ্ঠান নয়-এ এক সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের রূপ। একদিকে শাসকগোষ্ঠী তরুণদের উদ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, অন্যদিকে এমন আয়োজন তরুণদের ইতিহাস, চেতনা ও সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত করে দেয়। এখানেই এর বিপ্লবী তাৎপর্য।
এমন আয়োজনে রাষ্ট্র যদি চেতনাকে ধারণ করে, তবে তা প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু একইসাথে প্রশ্নও উঠতে বাধ্য-এই চেতনা কি শুধুই স্মরণে সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি তা বাস্তবায়নের রাজনৈতিক অঙ্গীকারে রূপ নেবে?
নবজাগরণ চাই: প্রতীক নয়, বাস্তব পরিবর্তন
‘প্রতীকী ম্যারাথন’ হোক একটি ঘোষণা-আমরা থামবো না, আমরা ফিরবো না। এ পথ চলা যেন থেমে না যায় এক দিনের আয়োজনের মধ্যেই। সেনবাগের মানুষ আজ দেখিয়ে দিয়েছে-পল্লী শহরগুলোতেও চেতনা জেগে উঠছে, প্রতিবাদের ভাষা তৈরি হচ্ছে।
এখন সময় এসেছে জাতীয় পর্যায়ে এই চেতনাকে রূপান্তরের রাজনীতিতে পরিণত করার। মুক্তিযুদ্ধের, গণতন্ত্রের, সংবিধানের প্রতিটি ভুল প্রয়োগের বিরুদ্ধে নতুন প্রজন্মের এ হাঁটা যেন স্লোগানে পরিণত হয়-
“জুলাই শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না।”
“আমরাও শপথ নিই-একটি নতুন বাংলাদেশ গড়বো!”
সেনবাগের প্রতীকী ম্যারাথন একটি সূচনা, একটি হুঁশিয়ারি, এবং একটি আশা। শহরের প্রতিটি রাস্তা জুড়ে প্রতিধ্বনিত হোক সেই পায়ের শব্দ-
“জেগে ওঠো বাংলাদেশ, নতুন সূর্যোদয়ের জন্য!”