নবজাগরণ রিপোর্ট:
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেসরকারি ভাবে চিকিৎসক এর চেম্বারে যাওয়া মানেই অনেক টাকা ভিজিট সাথে থাকে রোগ নির্ণয়ের জন্য নানা রকম টেস্ট বা ইনভেস্টিগেশন আর অষুধ।
কিন্তু এই দৃশ্যের ভিন্ন দিকও আছে।এমন অনেক চিকিৎসক আছে যারা তাদের ব্যাক্তিগত বেসরকারি চেম্বারে রোগীদের প্রতি সহনশীল আচরণ করে।
তেমনই একজন চিকিৎসক ডাঃ মোঃ দিদারুল আলম।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করার পরে তিনি একসময় বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক হিসেবে চাকরি করেছেন।
বর্তমানে তিনি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ইসিবি চত্ত্বর মাটিকাটা তে -” হেলথ এইড ডক্টরস কনসালটেশন সেন্টার ” নামে একটি প্রতিষ্ঠান দিয়েছেন।
উক্ত প্রতিষ্ঠানে তিনি ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন রোগের চিকিৎসক চেম্বার করছে।
কিন্তু আর দশটা বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সাথে এই প্রতিষ্ঠানের পার্থক্য হলো মানবিকতায়।
প্রতি শুক্রবার উক্ত প্রতিষ্ঠানের সকল চিকিৎসকগন
এলাকার আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল রুগীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিনামূল্যে অষুধও প্রদান করেন।
এই ব্যাপারে ডাঃ মোঃ দিদারুল আলম কে আমাদের প্রতিনিধি প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দেন-” বেশিরভাগ সময় দেখা যায় আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল রুগীরা বেসরকারি হাসপাতালে বা ডায়গনস্টিকে ডাক্তার দেখাতে যেতে ভয়/অনিহা প্রকাশ করে চিকিৎসকের ভিজিট এবং নানা রকম ইনভেস্টিগেশন/টেস্ট করাতে হবে সেই কারণে।আবার সরকারি হাসপাতালেও যেতে অনিহা বোধ করে কারণ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লাগবে সেইজন্য।
একারণে প্রায়ই দেখা যায় এসব রুগীরা সামান্য জ্বর-সর্দি-কাশি হোক আর জটিল কোনো অসুস্থতা যেটাই হোক তারা প্রথমে যায় অষুধের দোকানদার এর নিকট!আর এসব অষুধের দোকানদার বা মেডিকেল এসিস্ট্যান্টরা কোনো কিছু বিবেচনা না করেই রুগীকে ধরিয়ে দেয় নানা রকম
এন্টিবায়োটিক,যেটা হয়তো সেই রুগীর প্রয়োজনই নেই।
আর এভাবেই দেশে তৈরি হচ্ছে এন্টিবায়োটিকের উপর রেজিস্ট্যান্ট যা কিনা ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে বর্তমানে।
আর তাই আমি আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল রুগীদের জন্য এই উদ্যোগ টা নিয়েছি আমার এখানে অন্যান্য চিকিৎসকদের সাথে নিয়ে যাতে টাকার অভাবে কোনো রুগী রেজিস্টার্ড চিকিৎসক এর পরামর্শ পেতে অসুবিধা না হয়।”
এছাড়াও ডাঃ মোঃ দিদারুল আলম জানান-“শুধু শুক্রবার না,অসুস্থতা বা অসুখ তো শুক্রবার কে কেন্দ্র করেই হবে ব্যাপার টা সেরকম না,আমরা প্রতিদিনই
আমাদের প্রতিষ্ঠানে আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল রুগীদের সেবা প্রদান করি যতটা সম্ভব।এছাড়াও দেখা যায় অনেকেই এরকম ফ্রী হেলথ ক্যাম্প করে যার পেছনে কাজ করে বিনামূল্যে রুগী দেখে অন্যদিকে ইনভেস্টিগেশন/টেস্ট বানিজ্য করা!
আমি আমার বেশিরভাগ রুগীকে ঢাকা সিএমএইচের প্যাথলজি তে পাঠাই যেখানে সবরকম টেস্ট/ইনভেস্টিগেশন এর খরচ অনেক কম।
সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ঢাকা সিএমএইচে যে সিভিল রোগীদেরও টেস্ট/ইনভেস্টিগেশন হয় এটাও অনেক জনগণই জানেনা।
দেশের প্রতিটি এলাকায় এরকম উদ্যোগ নিলে আমাদের দেশের জনগণ কোয়াক/স্যাকমো/অষুধের দোকানদার এদের থেকে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসার শিকার হতো না।
পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসকদের সংখ্যা বাড়ালে সাধারণ জনগণ আরও উপকৃত হতো।
রিপোর্ট: সৈয়দা রিমি কবিতা।