চট্টগ্রাম ২৯ জুলাই ২০২৫ নবজাগরণ প্রতিবেদন:
চট্টগ্রামের রাজনীতির পরিচ্ছন্ন, মার্জিত ও সম্মানিত একজন প্রবীণ নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার আজ নিজ এলাকাতেই রাজনৈতিক হিংসার শিকার হয়ে রক্তাক্ত হয়েছেন।
তাঁর গায়ে লেগে থাকা রক্ত শুধু ব্যক্তিগত আঘাত নয়-এটি একটি রাজনৈতিক দলের ভেতরে গড়ে ওঠা বিশৃঙ্খলা, সংকীর্ণতা ও দুর্বৃত্তায়নের লালচে ছাপ।
একটি ভিডিও,এক ভয়ংকর প্রশ্ন
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়-বয়সের ভারে নত, অভিজাত পোশাক পরা, রক্তাক্ত এক মানুষ দৌড়ে পালাচ্ছেন। তাকে ধাওয়া করছে একদল উত্তেজিত মানুষ।
এই দৃশ্য কোনো প্রতিপক্ষ দলের হামলার নয়-এটি বিএনপির ভেতরকার গ্রুপিং ও আধিপত্য বিস্তারের জঘন্য ফল।
যিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দমন-পীড়নের মাঝেও রাজনীতিতে মাথা নত করেননি,সেই মানুষটিকে আজ নিজ দলের লোকেরাই রক্তাক্ত করলো।
রাজনীতির নামেই কি এই অপসংস্কৃতি চলবে?
গোলাম আকবর খন্দকার কোনো বিতর্কিত নেতা নন।
তিনি একজন দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য
দীর্ঘকালীন কূটনীতিক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত
বিএনপির চট্টগ্রাম অঞ্চলের নেতৃত্বে অবিচল থাকা রাজনীতির ক্লিন ইমেজের প্রতীক
তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি নেই, ক্ষমতার অপব্যবহার নেই। তবু কেন তাঁর ওপর হামলা?
একটাই কারণ:দলের ভেতরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব,পদ-পদবীর লোভ, রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার বহিঃপ্রকাশ।
যে দল নিজের সিনিয়র নেতাকেই সম্মান দিতে পারে না, সে কীভাবে জনগণের রাষ্ট্র চালাবে? সত্যি বলতে কি-এই ঘটনা শুধু গোলাম আকবর খন্দকারকে অপমান করেনি,এটি রাজনৈতিক নেতৃত্বের পুরো নৈতিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
যারা নিজের দলের প্রবীণ নেতাকেও এলাকায় আসতে দেয় না,যারা রক্ত ঝরায় দলের ভেতরে পদ বণ্টনের জন্য,
যারা ক্ষমতা পাওয়ার আগেই একে অপরকে ধ্বংস করতে উদগ্রীব-তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে কী করবে? এই প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষকেও ভাবাচ্ছে।
রাজনীতিতে ভিন্নমত মানে কি রক্তপাত?
একই দলের মধ্যে ভিন্নমত থাকা অস্বাভাবিক নয়-
কিন্তু ভিন্নমতকে মেনে না নিয়ে যদি মারধর,হেনস্তা ও প্রাণনাশের হুমকিতে পরিণত করা হয়, তবে সেটা রাজনীতি নয়-গ্যাং কালচার।
আজ যে ব্যক্তি দলীয় সভায় অংশ নিতে গিয়ে রক্তাক্ত হচ্ছেন,কাল হয়তো দলের অন্য কেউ ‘নেতার অনুসারী না’ হওয়ায় জীবন হারাবেন।
এর পরিণতি কী হতে পারে?
এই ঘটনাগুলো-তরুণদের রাজনীতি বিমুখ করে তুলবে ভদ্র, শিক্ষিত, মার্জিত মানুষগুলোকে রাজনীতি থেকে দূরে ঠেলে দেবে
রাজনীতির মাঠ কেবল চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও দখলদারদের দখলে চলে যাবে
এটাই কি চেয়েছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান,বেগম খালেদা জিয়া কিংবা তারেক রহমান?
একটা দল যখন নিজের অভ্যন্তরেই দানব সৃষ্টি করে, তখন বাইরের শত্রুর প্রয়োজন হয় না।
জনগণের প্রশ্ন:বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা কী এই ঘটনার নিন্দা করবেন?গোলাম আকবর খন্দকারের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি? আগামীতে এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে?
একজন প্রবীণ নেতার শরীর থেকে ঝরেছে রক্ত-কিন্তু কলঙ্ক লেগেছে গোটা রাজনীতির শরীরে।
এই কলঙ্ক যদি দলীয়ভাবে মুছা না হয়,
তাহলে ইতিহাস কখনো এই রক্তের ঋণ মাফ করবে না।
নবজাগরণ-বিশেষ প্রতিবেদক
রাউজান, চট্টগ্রাম