৩০ জুলাই ২০২৫, ফেনী নবজাগরণ প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন-এমন মন্তব্য করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন জোরালো আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।
বুধবার (৩০ জুলাই) ফেনী শহরের একটি মিলনায়তনে ‘বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিন্টু বলেন,“আমরা বিশ্বাস করি নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই হবে। এমনও হতে পারে জানুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়,তবে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাতে অংশগ্রহণ করবেন।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারে আস্থা এবং সুপ্রিম কোর্টের ডেট
মিন্টু জানান, কেয়ারটেকার সরকার সংক্রান্ত একটি মামলা সুপ্রিম কোর্টে এখনো বিচারাধীন রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রবর্তন হলে সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরে ভোটের দিন নির্ধারিত হতে পারে, এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি সম্পূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করবে।”
গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতার প্রশ্নে স্পষ্ট অবস্থান
আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “যদি একটি দেশে নির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন না থাকে, তাহলে জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বা জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় না। সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া কোনো রাষ্ট্রে দায়বদ্ধ সরকার গড়ে ওঠে না।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন,বাংলাদেশে বর্তমানে “একটি নির্বাচনবিহীন স্বৈরাচারী পরিবেশ বিদ্যমান,যা জনগণের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত করে না।”
১৯ বছরের আন্দোলন ও লন্ডন-ঢাকা সংযোগ
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা স্মরণ করিয়ে দেন যে, ২০০৬ সাল থেকে তারা ধারাবাহিকভাবে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। তিনি বলেন, “১৯ বছর ধরে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন, নিরপেক্ষ সরকার, এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি।”
মিন্টু জানান,তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান লন্ডন থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছেন। “প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন-আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে,”-বলেন তিনি।
বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন কিনা-এটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জল্পনা চলছিল। মিন্টুর এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে একদিকে যেমন নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলছে, অন্যদিকে ভোটার ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মনেও প্রশ্ন জাগিয়েছে: সত্যিই কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল হতে যাচ্ছে?
বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নির্বাচনে লড়তে পারবেন?
১৯ বছরের আন্দোলনের শেষ ধাপে এসে বিএনপি কীভাবে নির্বাচনী রাজনীতিতে ফিরে আসবে?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর সময়ই দেবে। তবে মিন্টুর বক্তব্য স্পষ্টতই একটি রাজনৈতিক বার্তা-বিএনপি আর নির্বাচন বর্জনের পথে নেই।এবার তারা মাঠে নামতে চায়,ভোটের লড়াইয়ে ফিরতে চায়।
প্রতিবেদক:মো:আবু তাহের পাটোয়ারী :