সেনবাগ বিএনপি:পেশিশক্তিমুক্ত রাজনীতির নতুন আলোর সন্ধানে

নবজাগরণ ডেস্ক:
সেনবাগ-নোয়াখালীর রাজনৈতিক ইতিহাস এক উজ্জ্বল অধ্যায়। বিএনপির এই ঘাঁটি একসময় ছিল ত্যাগ, আদর্শ ও সংগ্রামের প্রতীক। কিন্তু আজ? আজ সেই সংগঠন চাটুকারিতা,অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর পেশিশক্তির ভয়াবহ দুর্বৃত্তায়নে ক্রমাগত দুর্বল,বিভক্ত,এবং তৃণমূল বিচ্ছিন্ন।

নেতৃত্বের চর্চা আজ ঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ-ড্রইংরুমে হয় সিদ্ধান্ত,আর বেডরুম থেকে উঠে আসে নেতৃত্ব!মাঠের রাজনীতির সৈনিকরা আজ উপেক্ষিত। তাদের ত্যাগ,রক্ত ও ঘামের বিনিময়ে গড়া সংগঠনটি এখন কিছু‘পয়সাওয়ালা ভাগ্নে’আর‘রাজনৈতিক বডিগার্ডদের হাতে বন্দি।

আজ প্রশ্ন একটাই-আর কতদিন এই অপহৃত রাজনীতি চলবে? ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেয়-
সেনবাগ বিএনপির ইতিহাস মানেই গণমানুষের ইতিহাস। মরহুম আবদুল ওহাব ভুঁইয়া,অ্যাডভোকেট মান্নান উকিল,মেয়র শাহ আলম চৌধুরী,শেখ সালামত উল্লাহ চেয়ারম্যান-এই নামগুলো কেবল ব্যক্তিনাম নয়,তারা আদর্শ ও সংগ্রামের চেতনার নাম। তাঁরা ছিলেন গণতন্ত্রের প্রহরী,আন্দোলনের মাটি-মানুষের সৈনিক।

আজ সেই উত্তরাধিকার ধারণ করতে এগিয়ে এসেছে এক নতুন প্রজন্ম-যারা রাজনীতি করতে চায় স্বাধীনভাবে, গণতান্ত্রিকভাবে ও পেশিশক্তিমুক্তভাবে।

আবুল কালাম আজাদ:গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বের জীবন্ত প্রতীক
এই দুর্যোগের সময়ে সেনবাগ উপজেলা বিএনপির নেতৃত্ব পুনর্গঠনে তৃণমূল থেকে যে নামটি সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে,তিনি হলেন:
বীর মুক্তিযোদ্ধা,সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান,প্রবীণ ও অভিজ্ঞ সংগঠক-আবুল কালাম আজাদ।

তাঁর জীবনপথ মেধা,সাহস,সংগ্রাম ও নিষ্ঠার উজ্জ্বল দলিল। তৃণমূলের কাছে তিনি একজন অভিভাবক,একজন পরীক্ষিত সংগঠক,একজন বটবৃক্ষ। যখনই তিনি উপজেলা বিএনপির দায়িত্বে ছিলেন,সংগঠন ছিল সুসংগঠিত,ঐক্যবদ্ধ এবং সম্মানিত।

তাঁর বিরুদ্ধে কোনো‘গডফাদারির’অভিযোগ নেই,নেই কোনো দুর্নীতির কলঙ্ক। রয়েছে কেবল ত্যাগ, নির্যাতন,প্রতিরোধ ও ধারাবাহিক সংগঠকত্বের অজস্র উদাহরণ।
শত প্রতিকূলতা,তবু একচুলও নড়েননি
আবুল কালাম আজাদের রাজনৈতিক জীবন শুধুই নেতৃত্বের নয়,তা এক বর্ণাঢ্য ও অবিস্মরণীয় সংগ্রামের ইতিহাস।

২০১৫ সালে সেবারহাটে ছাত্রলীগের সম্মেলনের সময় তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়।
এরপর ভিপি আবু নাসের দুলালের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় দুইবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয় তাঁকে।
২০১৭ সালে সামরিক হস্তক্ষেপে বরখাস্ত হন, কিন্তু প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়ে ফেরেন চেয়ারম্যানের চেয়ারে।

২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর সেনবাগ বিএনপি অফিসে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হামলায় আবুল কালাম আজাদ রক্তাক্ত হন-এমনকি তাঁর অফিস তিনবার তালা মেরে অচল করার চেষ্টা করা হয়।

কিন্তু তিনি কখনো বিএনপি ছাড়েননি, কখনো আপস করেননি।মোরশেদ আলম এমপির সাথেও কোন আপস করেননি।

এই সময়ের মধ্যে একদিকে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন,অন্যদিকে দমনপীড়নের ভেতরেও বিএনপির নেতাকর্মীদের সংগঠিত রাখেন,সাহস ও স্থিতিশীলতা দিয়ে ধরে রাখেন দলকে।

সময় এসেছে তাঁর ত্যাগ ও সাহসিকতার যথার্থ মূল্যায়নের-
সেনবাগ বিএনপি আজ একটি মোড়ে দাঁড়িয়ে-যেখানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে,আজকের বিএনপি কি গডফাদার-নির্ভর সুবিধাবাদী রাজনীতির কাছে নত হবে,নাকি মাটি ও মানুষের পরীক্ষিত সৈনিকদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেবো?

সময় এসেছে,ভুয়া নেতার গ্ল্যামার নয়-প্রয়োজন মাঠের প্রমাণিত নেতৃত্ব। সময় এসেছে,আবুল কালাম আজাদের মতো নেতাদের মূল্যায়নের।

আমাদের দাবি স্পষ্ট:গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গঠিত কমিটি
অভিজ্ঞ,ত্যাগী ও জনভিত্তিসম্পন্ন নেতৃত্ব চাটুকার ও দখলবাজমুক্ত সংগঠন পেশিশক্তিমুক্ত,আদর্শভিত্তিক রাজনীতি।

সেনবাগ থেকেই হোক বিএনপির পুনর্জন্ম
নোয়াখালী জেলা বিএনপির দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের কাছে নেতাকর্মীদের আবেদন-দয়া করে সেনবাগ বিএনপির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আন্তরিকতা,দৃষ্টিভঙ্গি ও দায়িত্ববোধের সঙ্গে পদক্ষেপ নিন।
আবুল কালাম আজাদই হোন নতুন যাত্রার কান্ডারী, পেশিশক্তিমুক্ত বিএনপির প্রতীক।