খাল-নদী দখলদারদের জন্য আগাম সতর্কবার্তা:সম্মান বাঁচান, নইলে ধ্বংস নিশ্চিত

নবজাগরণ রিপোর্ট :
দশকের পর দশক ধরে লোভে অন্ধ কিছু মানুষ সরকারি খাল, নদী, খাসজমি, এমনকি পানি সরবরাহের চ্যানেল পর্যন্ত গিলে খেয়ে ফেলেছে। দোকান, মার্কেট, পাকা দালান তুলেছে-মনে করেছে চিরদিনের মতো নিজের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে। কিন্তু ভুলবেন না-রাষ্ট্রের জমি চিরকাল দখলে রাখা যায় না। সেই সময় এসে গেছে, যখন আপনার এই অবৈধ সাম্রাজ্যের বালির প্রাসাদ এক ঝড়েই ভেঙে যাবে।

সেনবাগ উপজেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন হাত গুটিয়ে বসে নেই।নোয়াখালীর সব উপজেলা এবং সেনবাগের হাট বাজার; নদী খাল, ছমিরমুন্সিরহাট, ৩০০ ফিট, হাজিরহাট, সেবারহাট-এক এক করে খালের মুখে বসানো আপনার লোভের বাঁধগুলো ভাঙছে। মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের সেবার হাট পশ্চিম বাজারে যেভাবে শেরে বাংলা হাই স্কুল মার্কেটের পাশের খালের উপর গজিয়ে ওঠা রাস্তা ও স্থাপনা চূর্ণবিচূর্ণ করে দেওয়া হলো-এটা কেবল শুরু।

পর্যায়ক্রমে কানকিরহাট, ছাতারপাইয়া, এবং তালিকাভুক্ত প্রতিটি জায়গা দখলমুক্ত হবে। আপনার অবৈধ দালানের লোহা-কাঠ ভেঙে, ইট-পাথর ধুলোয় মিশে যাবে। আর যদি স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেন-তাহলে অন্তত নিজের সামাজিক সম্মানটা বাঁচাতে পারবেন।

যারা ভাবছেন-“এটা আমার জায়গা, আমার দালান, কেউ কিছু করতে পারবে না”-তাদের জন্য আগাম ঘোষণা:
রাষ্ট্র যখন উচ্ছেদে নামে, তখন আপনার দালানের ইট গুনে দেখার সময় নেই। সোজা বুলডোজারের চাকা গড়াবে, সেনাবাহিনীর লোহার হাতুড়ি পড়বে, পুলিশের সশস্ত্র পাহারা থাকবে। অবৈধ দখলের জন্য জেল, জরিমানা, আর জনসম্মুখে অপমান-সব একসাথে আপনার ভাগ্যে লেখা হবে।

আজ যেটা আপনার ব্যবসার জায়গা-কাল সেটা হবে কেবল এক টুকরো ধ্বংসস্তূপ।
যেটা একসময় ভাড়ায় আয় দিত-সেটা কাল হবে অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের কেস নম্বর।
আপনার নাম উঠে যাবে “সরকারি জমি দখলদারদের কালো তালিকায়”, আর সেই কলঙ্ক আপনার পরিবার পর্যন্ত বহন করবে।

এটাই শেষ সতর্কবার্তা-সম্মান বাঁচাতে চান, স্বেচ্ছায় ছাড়ুন। না হলে, যে গর্জন এখন সেনবাগের বিভিন্ন জায়গায় শোনা যাচ্ছে, কাল সেই গর্জন আপনার দরজায় কড়া নাড়ছে।

খাল-নদী দখলদারদের জন্য রক্তশীতল সতর্কবার্তা: সময় ফুরিয়ে আসছে…

আজ আর কাগজে লেখা সতর্কতা নয়-আজ মাঠে নেমে পড়েছে রাষ্ট্রের লৌহমুষ্টি।
সেনবাগ উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের সেবারহাট পশ্চিম বাজার-শেরে বাংলা হাই স্কুল মার্কেটের পশ্চিম পাশে খালের উপর দাঁড়িয়ে থাকা অবৈধ দালান ও চলাচলের রাস্তা-যা বছরের পর বছর পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছিল-আজ দুপুরেই মাটির সাথে মিশে গেছে।

আকাশ মেঘলা, বাতাসে ধুলো উড়ছে। দূরে গর্জন করছে সেনাবাহিনীর বুলডোজার, আর সাথে তাল মিলিয়ে ধাতব হাতুড়ির আঘাতের টান টান উত্তেজনার শব্দ। এক পাশে দাঁড়িয়ে আছেন সেনবাগ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম-চোখে দৃঢ়তা, কণ্ঠে নির্দেশনার আগুন। পাশে আর্মি অফিসার ক্যাপ্টেন পারভেজ, তার সশস্ত্র দল নিয়ে বুলডোজারের নিরাপত্তা বলয় গড়ে রেখেছেন। আরও দূরে ওসি এস.এম. মিজানুর রহমান এবং তার টিম ভিড় সামলাচ্ছেন।

দেখা যায়-একজন দখলদার দূর থেকে দৌড়ে এসে কাকুতি-মিনতি করছে-“স্যার, একটু সময় দেন…”
কিন্তু সময় শেষ।
রাষ্ট্রের ঘড়ি একবার বাজলে থামানো যায় না।
মুহূর্তেই লোহার দাঁত খালের উপর গড়ে ওঠা দোকানের দেয়ালে বসে যায়। ইটগুলো ভেঙে গুঁড়ো, টিনের চাল উড়ে গিয়ে রাস্তার ধারে ছিটকে পড়ে। পানি আটকে রাখা বাঁধ ছিঁড়ে খাল গর্জন করে বইতে শুরু করে-মনে হয় যেন প্রকৃতিও প্রতিশোধ নিচ্ছে।

এটা কেবল সেবারহাটের গল্প নয়।পুরো জেলার গল্পই একই রকম। এর আগেই সেনবাগ বাজার, ছমিরমুন্সিরহাট, ৩০০ ফিট, হাজিরহাট দখলমুক্ত হয়েছে। তালিকায় আছে কানকিরহাট, ছাতারপাইয়া-সোনাইমুড়ী আরও ডজনখানেক জায়গা। প্রতিটি জায়গায় একই পরিণতি-দালান ধ্বংস, নাম কালো তালিকায়, আর জনসম্মুখে লাঞ্ছনা।

যারা এখনো ভাবছেন-“এটা আমার জমি, আমার দোকান, কেউ কিছু করতে পারবে না”-নেতা শক্তি তাদের জন্য ভয়ংকর ভবিষ্যদৃশ্য:

আপনার দোকানের শাটার ভাঙা অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়ে আছে
ভাড়াটিয়ারা হাহাকার করছে
জায়গা বাজেয়াপ্ত হয়ে সরকারি তালিকায় গেছে
পুলিশ আপনার নামে মামলা দিচ্ছে

বাজারে ফিসফাস-“ওই যে, দখলদার”

এখনও সময় আছে-স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিন, নইলে রাষ্ট্রের বুলডোজার আপনার দরজায় পৌঁছাতে আর বেশি সময় লাগবে না।
মনে রাখবেন-যেদিন অভিযান আসবে, সেদিন প্রতিবেশীর ঘরের ধুলোও আপনার শ্বাস বন্ধ করে দেবে, কিন্তু আপনাকে রক্ষা করার মতো কেউ থাকবে না।