নবজাগরণ প্রতিবেদন:
সিলেটের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ভোলাগঞ্জের‘সাদা পাথর’ এলাকায় চলছে প্রকাশ্য খনিজ সম্পদ লুটপাট।ধলাই নদীর তীরবর্তী এই অঞ্চলে অবৈধভাবে পাথর ও বালু উত্তোলন এখন রীতিমতো মহোৎসবে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, মাত্র ১০ মাসে প্রায় ২০০–২৫০ কোটি টাকার পাথর এবং শতকোটি টাকার বালু পাচার হয়ে গেছে।
অভিযোগের তীর রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের দিকে
স্থানীয় সূত্র, পরিবেশকর্মী এবং একাধিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, অবৈধ উত্তোলনের নেপথ্যে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক সিন্ডিকেট সক্রিয়। বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ও তাদের সহযোগীরা এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিজিবির চারটি ক্যাম্প এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও অবৈধ কার্যক্রম থামানো যাচ্ছে না। অভিযুক্তরা অভিযোগ অস্বীকার করলেও,এখনো পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পর্যটন ও পরিবেশে ভয়াবহ প্রভাব
পাথর উত্তোলনের ফলে ধলাই নদীর তীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। যেখানে একসময় নদীজুড়ে ঝলমলে সাদা পাথর দেখা যেত, এখন সেখানে দেখা যাচ্ছে বিশাল গর্ত ও ধ্বংসস্তূপ। পরিবেশবিদদের মতে, এই অবৈধ খনন নদীর স্রোতপথ পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্যের ক্ষয় এবং স্থানীয়দের দীর্ঘমেয়াদি জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রশাসনিক উদাসীনতা
প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হলেও, তা অপ্রতুল এবং সাময়িক। কোনো ধরনের লাইসেন্স রেকর্ড, বিক্রয় তথ্য বা খননের অনুমতিপত্র প্রকাশ না করায় প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ যাচাই সম্ভব হচ্ছে না।
তথ্য যাচাইয়ের সীমাবদ্ধতা
ক্ষতির আর্থিক হিসাব মূলত স্থানীয়দের পর্যবেক্ষণ ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে তৈরি। সরকারি তথ্য প্রকাশ না হওয়ায় এই পরিসংখ্যান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রমাণিত নয়।
প্রস্তাবনা
১.তথ্য প্রকাশ: জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছ থেকে লাইসেন্স, উত্তোলন ও বিক্রয়ের হিসাব প্রকাশ।
২.স্বতন্ত্র তদন্ত: বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাধীন তদন্ত।
৩.আইনি ব্যবস্থা: অভিযুক্ত ব্যক্তি ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ।
৪.দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা: পর্যটন পুনর্গঠন ও পরিবেশবান্ধব সম্পদ ব্যবস্থাপনা।