নোয়াখালীর গৌরব শহীদুল্লাহ প্রিন্স:সংস্কৃতির আলোকবর্তিকা ও নয়া দিগন্তের অগ্রদূত

নবজাগরণ প্রতিবেদন:
নোয়াখালীর ইতিহাস মানেই সংগ্রাম,ঐতিহ্য আর আত্মত্যাগের দীর্ঘ কাহিনি। ঢাকায় বসবাসরত নোয়াখালীবাসীদের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন নোয়াখালী জেলা সমিতি, ঢাকা-এটি কেবল একটি সংগঠন নয়, বরং প্রবাসী নোয়াখালীবাসীর প্রাণশক্তি, সাংস্কৃতিক চেতনার আশ্রয়স্থল এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলমান বন্ধনের অক্ষয় প্রতীক। আর সেই সংগঠনের ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে বিজয় অর্জন করেছেন এক কৃতি সন্তান, একজন শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও সংস্কৃতি অঙ্গনের নিবেদিতপ্রাণ মানুষ-মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রিন্স।

এই বিজয় শুধুমাত্র একটি ব্যক্তিগত সাফল্য নয়;এটি নোয়াখালীবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন,সংস্কৃতির জয়ধ্বনি এবং নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন।

শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব-একই মানুষে তিন রূপ-শহীদুল্লাহ প্রিন্সের জীবন কেবল একটি পরিচয়ে সীমাবদ্ধ নয়। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করার দায়িত্ব তিনি নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করে আসছেন বহু বছর ধরে।
কিন্তু এখানেই থেমে নেই তার যাত্রা। তিনি একই সঙ্গে একজন অভিজ্ঞ সিনিয়র সাংবাদিক। সমাজের অসঙ্গতি, অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে তার কলম ছিল শক্তিশালী অস্ত্র। দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার মাধ্যমে তিনি পাঠকের আস্থা অর্জন করেছেন এবং গণমাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এক নির্ভরযোগ্য নাম হিসেবে।

আরো একটি শক্তিশালী পরিচয় রয়েছে তার সঙ্গে যুক্ত-তিনি একজন সাংস্কৃতিক সংগঠক। নাটক, সংগীত, সাহিত্য ও লোকজ ঐতিহ্যের প্রচার-প্রসারে তার ভূমিকা অপরিসীম। সংস্কৃতিকে তিনি কেবল বিনোদন নয়, সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে দেখেন।

সংস্কৃতি: তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ-
নোয়াখালীর লোকসংস্কৃতি, পালাগান, ভাওয়াইয়া, মলুয়ার গান কিংবা নাট্যচর্চা-এসবকে তিনি সবসময়ই নিজের পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। প্রিন্স বিশ্বাস করেন, সংস্কৃতি মানেই জীবনের ধারা, জাতির আত্মপরিচয়।
তাই সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে তার বিজয় মানে শুধু দায়িত্বের স্বীকৃতি নয়, বরং নোয়াখালীর সংস্কৃতিকে ঢাকায় নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত করার সুবর্ণ সুযোগ। তিনি তরুণ প্রজন্মকে ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত করতে চান, একই সঙ্গে আধুনিকতার ছোঁয়ায় সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে চান।

বেলাল-দুলাল পরিষদে আস্থা ও বিজয়-
এবারের নোয়াখালী জেলা সমিতির নির্বাচন ছিল উত্তেজনাপূর্ণ ও ঐতিহাসিক। এম এ খান বেলাল ও আবদুল মাবুদ দুলাল পরিষদ জনগণের আস্থা অর্জন করে বিশাল বিজয় অর্জন করেছে। এই পরিষদের প্রতি ভোটারদের আস্থা প্রমাণ করে-নোয়াখালীবাসী পরিবর্তন চায়, বৈষম্য চায় না, চায় যোগ্য নেতৃত্ব। সেই যোগ্য নেতৃত্বেরই অংশ হয়ে শহীদুল্লাহ প্রিন্স বিজয়ী হয়েছেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে। তার বিজয় আসলে সংস্কৃতির বিজয়, জ্ঞানের বিজয় এবং দায়িত্বশীল প্রজন্মের জয়।

তরুণদের প্রতি তার দৃষ্টি-
শহীদুল্লাহ প্রিন্সের সবচেয়ে বড় শক্তি তার তরুণপ্রেম। তিনি বিশ্বাস করেন, তরুণদের সৃজনশীল শক্তিকে কাজে লাগানো ছাড়া কোনো জাতির অগ্রগতি সম্ভব নয়।
তিনি পরিকল্পনা করছেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে তরুণদের নিয়ে আয়োজন করবেন নানাবিধ কর্মশালা, নাট্যোৎসব, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও সাহিত্য আড্ডা। তিনি চান নোয়াখালীর তরুণরা শুধু ঢাকায় নয়,জাতীয় পর্যায়েও নিজেদের প্রতিভা প্রমাণ করুক।

বিজয়ের তাৎপর্য-
প্রিন্সের এই বিজয় আমাদের বলে দেয়-আদর্শ,নিষ্ঠা ও প্রজ্ঞা কখনো বিফল হয় না। নোয়াখালীবাসী তার ওপর যে আস্থা রেখেছে, তা তার অতীত কাজের স্বীকৃতি, আবার ভবিষ্যতের দায়িত্বও বটে। তিনি কেবল সাংস্কৃতিক সম্পাদক নন, তিনি আমাদের স্বপ্নের বাহক, ঐতিহ্যের রক্ষক এবং নবপ্রজন্মের প্রেরণাদূত।

নবজাগরণের শুভেচ্ছা-
সাপ্তাহিক নবজাগরণ পরিবার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছে জনাব মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রিন্সকে। আমরা গর্বিত, তার মতো কৃতিসন্তান আজ নোয়াখালী জেলা সমিতির সাংস্কৃতিক সম্পাদক।
আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তার নেতৃত্বে নোয়াখালীর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। নোয়াখালীর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুনভাবে উপস্থাপন করবেন।
আমাদের প্রার্থনা, তিনি যেন সুস্থ থাকেন, দৃঢ় মনোবল নিয়ে কাজ করেন এবং নোয়াখালীবাসীর সংস্কৃতির আলোকবর্তিকা হয়ে পথ দেখান প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

শুভেচ্ছান্তে,
মোঃ আবু তাহের পাটোয়ারী
সম্পাদক, সাপ্তাহিক নবজাগরণ
অনলাইনে পড়তে:www.thenabajagaran.com