নোয়াখালী ব্যুরো-
নবজাগরণ প্রতিবেদক:
নোয়াখালীতে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে অভিনব কৌশল ব্যবহার করেও শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ল চট্টগ্রামের এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। পাকস্থলীর ভেতর লুকিয়ে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারের চেষ্টা করছিল সে।
ঘটনাস্থল ও অভিযান: রবিবার (৬ অক্টোবর ২০২৫) রাত ৭টা ৩০ মিনিটে নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ্ আল-ফারুক এর সার্বিক দিকনির্দেশনা এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম এর নেতৃত্বে সুধারাম মডেল থানা পুলিশ নোয়াখালী জেলা স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে গ্রেফতার করা হয় চট্টগ্রামের চন্দ্রনাইশ থানার দোহাজারি এলাকার বাসিন্দা মো. মতিউর রহমান (৪৫)-কে।
পাকস্থলীতে ইয়াবা পাচারের অভিনব কৌশল
জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানায়, সে চট্টগ্রামের দোহাজারি এলাকা থেকে বিশেষ কৌশলে নিজের পাকস্থলীর ভেতর ইয়াবা ভর্তি করে নোয়াখালীতে পাচারের উদ্দেশ্যে আসে।
পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে দ্রুত নোয়াখালী মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে এক্স-রে করানো হয়।সেখানে চিকিৎসকরা পাকস্থলীর ভেতরে ডিম্বাকার একাধিক বস্তুর অস্তিত্ব পান।
৩২০০ ইয়াবা উদ্ধার:চিকিৎসকদের সহায়তায় তাকে মলত্যাগ করানো হলে ৬৪টি ডিম্বাকার প্যাকেট উদ্ধার হয়। প্রতিটি প্যাকেটে ছিল ৫০ পিস করে মোট ৩,২০০ ইয়াবা ট্যাবলেট। পুলিশ জানায়, প্রতিটি প্যাকেট প্লাস্টিক ও ল্যাটেক্স দিয়ে মোড়ানো ছিল যাতে পাকস্থলীর অ্যাসিডে নষ্ট না হয়।
পূর্বের অপরাধ ও আইনি ব্যবস্থা:পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার বিভিন্ন থানায় পাঁচটি মাদক মামলা রয়েছে।সে মূলত ময়মনসিংহ জেলার বাসিন্দা, তবে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের চন্দ্রনাইশ এলাকায় বসবাস করে আসছিল।এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সুধারাম মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য:নোয়াখালী জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা নবজাগরণকে বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। যেভাবেই পাচারের চেষ্টা হোক না কেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা রুখে দেবে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় আবারও প্রমাণ হলো-অভিনব কৌশল যতই সূক্ষ্ম হোক না কেন, অপরাধ ঢেকে রাখা যায় না। মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার লড়াইয়ে পুলিশের এই সফল অভিযান সমাজে নতুন বার্তা দিয়েছে।