নোয়াখালী ব্যুরো রিপোর্ট:
নোয়াখালীর সেনবাগে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা দমনে বিশেষ অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ দুই কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে আটক দুইজনকে পুলিশ স্কটের মাধ্যমে নোয়াখালীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর ২০২৫) সন্ধ্যায় সেনবাগ থানার কাবিলপুর ইউনিয়নের দিলদার মার্কেট এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় কিছু বখাটে কিশোর মোটরসাইকেল গ্যাং গড়ে তুলেছে, যারা প্রায়ই বাজারে ভয়ভীতি, চাঁদাবাজি ও মারামারিতে জড়াচ্ছে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেনবাগ থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় জনতার সহায়তায় দুইজনকে হাতেনাতে আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি চাইনিজ কুড়াল ও দুটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো:শাহাদাত হোসেন (১৮), পিতা: মো: সাইফুল, মাতা: নাসরীন আক্তার;মো:বাবলু (২০), পিতা: মৃত আবুল কাশেম, মাতা: শেফালী বেগম
– উভয়ের বাড়ি পশ্চিম লালপুর (দই বেপারী বাড়ি), ৬নং কাবিলপুর ইউনিয়ন, সেনবাগ, নোয়াখালী।
ঘটনার পর তাদের বিরুদ্ধে Arms Act, 1878 (ধারা ১৯-এ) অনুযায়ী মামলা নং–০৩, তারিখ: ০৮/১০/২০২৫ দায়ের করা হয়েছে। সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মিজানুর রহমান বলেন,“কিশোর গ্যাং ও বখাটে চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে। সেনবাগে সামাজিক শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা কোনো ছাড় দেব না।”
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেনবাগসহ নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি উদ্বেগজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। ইন্টারনেট, টিকটক ও মোটরসাইকেল সংস্কৃতির অপব্যবহারে তরুণদের একাংশ সহজেই অপরাধপ্রবণতায় জড়িয়ে পড়ছে। এই কিশোর গ্যাংগুলো এলাকাভিত্তিক প্রভাব বিস্তার, মাদক ব্যবসার সহায়তা এবং সামাজিক অশান্তির মূল উৎসে পরিণত হচ্ছে।
স্থানীয় সমাজকর্মী ও শিক্ষকরা বলছেন-পরিবার, স্কুল ও সমাজের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এ প্রবণতা রোধ করা সম্ভব নয়। অভিভাবকদের দায়িত্বশীলতা, নিয়মিত নজরদারি এবং তরুণদের জন্য বিকল্প ইতিবাচক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
সেনবাগ পুলিশের এ সফল অভিযান এলাকায় স্বস্তির বাতাস বইয়ে দিয়েছে। তবে শুধু অভিযান নয়, দরকার ধারাবাহিক সামাজিক প্রতিরোধ-যাতে কোনো কিশোর আবার অন্ধকারের পথে না যায়।