নবজাগরণ ডেস্ক:নোয়াখালী ১৫ অক্টোবর ২০২৫
নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে আজ দুপুরে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে “সাংবাদিক সমাজ”-এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত হয় এক ঐতিহাসিক মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচি।
বক্তারা এক কণ্ঠে বলেন, “নোয়াখালী বিভাগের দাবি কোনো রাজনৈতিক দলের নয়-এটি বৃহত্তর নোয়াখালীর কোটি মানুষের প্রশাসনিক ন্যায়বিচার ও মর্যাদার দাবি।”
মানববন্ধন শেষে সাংবাদিক প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। সেখানে বলা হয়-অবিলম্বে নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরকে একত্র করে ‘নোয়াখালী বিভাগ’ ঘোষণা করা হোক। কারণ এ অঞ্চল বহু দশক ধরে প্রশাসনিক বঞ্চনা, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার।
আন্দোলনের বিস্তার: আনাচে কানাচে, দেশজুড়ে ও প্রবাসে
নোয়াখালী বিভাগের দাবি এখন শহরের সীমানা ছাড়িয়ে গ্রাম, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড থেকে প্রবাস পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে অভূতপূর্ব সাড়া-হ্যাশট্যাগে প্রতিদিন হাজারো মানুষ জানাচ্ছেন সংহতি।
ইতালি, দুবাই, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য ও কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রবাসী নোয়াখালীবাসী ভার্চুয়াল মানববন্ধন ও ভিডিও বার্তা দিয়ে আন্দোলনে সংহতি জানাচ্ছেন। তাদের বক্তব্যে এক সুরে উচ্চারিত- “যে নোয়াখালী বাংলাদেশের ইতিহাস, বাণিজ্য ও সংস্কৃতিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে, সেই অঞ্চল আজ অবহেলিত-এটা আর মেনে নেয়া যায় না।”
সরকারের নীরবতা: গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ?
বক্তারা প্রশ্ন তোলেন- “যে দাবি প্রশাসনিকভাবে বাস্তবসম্মত, অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক এবং গণসমর্থনে অভূতপূর্ব-সেই দাবিতে সরকার এখনো নীরব কেন?”
এই নীরবতা এখন জনমনে গভীর প্রশাসনিক ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা জাগিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে দাবিটি দীর্ঘায়িত করছে, যাতে জনচাপ দুর্বল হয়। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো-আন্দোলন দিন দিন আরও শক্তিশালী, সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে।
এক সিনিয়র সাংবাদিকের ভাষায়,“নোয়াখালী বিভাগের দাবি এখন বঞ্চিত মানুষের আত্মমর্যাদার প্রতীক। সরকার যদি সাড়া না দেয়, মানুষ শান্তিপূর্ণভাবেই রাস্তায় নেমে তাদের অধিকার আদায় করবে।”
আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ:নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদ ঘোষণা দিয়েছে-৩১ অক্টোবরের মধ্যে বিভাগ ঘোষণা না হলে তারা ‘জেলা থেকে বিভাগে পদযাত্রা’ ও প্রশাসনিক অবরোধ কর্মসূচি দেবে।একইসঙ্গে প্রবাসী সংগঠনগুলোও ১ নভেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনলাইন ক্যাম্পেইন শুরু করবে।
কেন নোয়াখালী বিভাগের দাবি যুক্তিসঙ্গত
ভৌগোলিকভাবে: নোয়াখালী দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের কেন্দ্রবিন্দু; চট্টগ্রাম বিভাগের দূরত্বে প্রশাসনিক সেবা ব্যাহত হয়।অর্থনৈতিকভাবে: বাণিজ্য, কৃষি ও প্রবাসী আয়ে সমৃদ্ধ অঞ্চল-নিজস্ব বিভাগ হলে উন্নয়ন গতি বহুগুণে বাড়বে।
ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে: নোয়াখালী একটি স্বতন্ত্র পরিচয়ের অঞ্চল; নিজস্ব বিভাগ গঠন সেই ঐতিহাসিক মর্যাদার পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
আজকের সাংবাদিকদের মানববন্ধন প্রমাণ করেছে-নোয়াখালী বিভাগের আন্দোলন এখন এক অবিসংবাদিত জনদাবি।সরকার যতই নীরব থাকুক, জনগণের ঐক্য আজ অপ্রতিরোধ্য।“বঞ্চনার শেষ চাই, নোয়াখালী বিভাগ চাই”-এই শ্লোগান এখন প্রতিটি নোয়াখালীবাসীর কণ্ঠে কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত।
উপস্থিতি ও সংহতি:স্মারকলিপি গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ।এ সময় উপস্থিত ছিলেন-মোহনা টিভির এম এ আউয়াল, নিউজ টুয়েন্টি ফোর ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের আকবর হোসেন সোহাগ, বৈশাখী টিভির অধ্যাপক লিয়াকত আলী খান, যমুনা টিভির সবুজ, এবং অন্যান্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।ঘোষণা দেওয়া হয়েছে-আগামীকাল (১৬ অক্টোবর) নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।
অনলাইনে পড়ুন:www.thenabajagaran.com
#নোয়াখালীবিভাগচাই #NoakhaliDivision #Nabajagaran #AdministrativeJustice #JournalistsMovement #YunusGovt #BangladeshReform #PeoplePower #RegionalEquity