১১টায় মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি-জনতার কণ্ঠে একটাই স্লোগান,“নোয়াখালী বিভাগ চাই,এখনই চাই!”
নবজাগরণ প্রতিবেদন:নোয়াখালী,২১ অক্টোবর ২০২৫
আজ সকাল ১১টায় নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী বাইপাস চত্বরে “নোয়াখালী বিভাগ চাই” দাবিতে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে এক ঐতিহাসিক মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।গরম সূর্যের তাপেও থামেনি জনতার ঢল। ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, কৃষক, নারী, শ্রমিক-সব শ্রেণি-পেশার মানুষ একক কণ্ঠে ঘোষণা দেন:“বঞ্চনার অবসান চাই, নোয়াখালী বিভাগ চাই!”
নোয়াখালীর জনগণের দীর্ঘ বঞ্চনার ইতিহাস
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই নোয়াখালী অঞ্চল প্রশাসনিকভাবে পিছিয়ে পড়েছে। বন্দর, কৃষি, শিক্ষা, শিল্প-সবক্ষেত্রেই সম্ভাবনা থাকলেও অবকাঠামো ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এই অঞ্চল বারবার বঞ্চিত হয়েছে।
বরিশাল, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা-সব জায়গা বিভাগ পেলেও, নোয়াখালীর মানুষের প্রাপ্য বিভাগ এখনো কেবল কাগজে বন্দী স্বপ্ন।বক্তারা বলেন,“আমরা বিদ্রোহী হয়েছি বঞ্চনার বিরুদ্ধে।এই নোয়াখালী বিভাগ হবে ন্যায়ের প্রতীক-যেখানে নদী, সমুদ্র, চর, মানুষ-সব একসাথে রাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান পাবে।”
আন্দোলনের মূল দাবি
নোয়াখালী বিভাগ অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে।
হাতিয়াকে সম্পূর্ণ জেলা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার মধ্যে পড়ে থাকা নোয়াখালীর উন্নয়ন বঞ্চনা দূর করতে বিশেষ বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে।
চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী উপকূলীয় রোড উন্নয়ন প্রকল্প ত্বরান্বিত করতে হবে।
জনতার কণ্ঠে কেবল রাজনৈতিক দাবি নয়-এ ছিল অস্তিত্বের প্রশ্ন, সম্মানের লড়াই।
বিপ্লবী বিশ্লেষণ-নোয়াখালী বিভাগের দাবির ভেতরে রাষ্ট্রের নতুন মানচিত্রের ইঙ্গিত নোয়াখালীর আন্দোলন শুধু প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস নয়-এটি রাষ্ট্রীয় ভারসাম্যের নতুন অধ্যায়।এই দাবির পেছনে আছে-অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা: চরাঞ্চল, নদী, সমুদ্রবন্দর ও কৃষি সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলকে অর্থনৈতিক কেন্দ্র করার সুযোগ।
রাজনৈতিক ন্যায়বিচার: প্রশাসনিক ও উন্নয়ন নীতিতে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা প্রতিরোধ।সামাজিক একতা: নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, হাতিয়া-সব অঞ্চলের মানুষ এক প্ল্যাটফর্মে এসে একতাবদ্ধ হয়েছেন।একজন তরুণ বক্তা বলেন,“যে রাষ্ট্রে বারবার আমরা ভুলে যাই, এবার সেই রাষ্ট্রকে মনে করিয়ে দিতে এসেছি-আমরা আছি,আমরা বঞ্চিত নই আর।”
মাঠে ছিল বিপ্লবের আবহ
বাইপাস চত্বরে ঝলমল করছিল ব্যানার-প্ল্যাকার্ড:
“চরফকিরা থেকে হাতিয়া পর্যন্ত একটাই দাবি-নোয়াখালী বিভাগ চাই।”“ঢাকা শোনো, চট্টগ্রাম শোনো, এবার নোয়াখালীর সময়।”“আমরা উন্নয়ন চাই, মর্যাদা চাই, ন্যায্য অধিকার চাই!”নারীরা শাড়ির পাড়ে লাল ফিতে বেঁধে, তরুণরা মাথায় ব্যানানা হেডব্যান্ড পরে, শিশুদের হাতে লিফলেট-এক দৃশ্য যেন নতুন বাংলাদেশের আগমনের বার্তা।
নবজাগরণ বিশ্লেষণ:নোয়াখালীর এই দাবিকে অনেকেই “উপকূলীয় জাগরণের সূচনা” বলছেন।এটি কেবল একটি প্রশাসনিক দাবি নয়; এটি কেন্দ্র-প্রান্তের বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের প্রতীক। আজ সোনাইমুড়ী থেকে যে আগুন জ্বলে উঠেছে, তা প্রশাসনিক মানচিত্রের সীমা ছাড়িয়ে গেছে-এটি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জনতার স্লোগানেই বার্তা“নোয়াখালী বিভাগ চাই-বঞ্চনার অবসান চাই!”“নোয়াখালী উঠেছে-এবার রাষ্ট্র জাগবে!”
অনলাইনে পড়ুন:www.thenabajagaran.com
#নোয়াখালী_বিভাগ_চাই