প্রতিবেদন:মোঃ আবু তাহের পাটোয়ারী:নবজাগরণ ডেস্ক, ২২ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশ আজ এক নতুন ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে।
হেফাজতে থাকা ১৫ অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাকে আজ সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে, এবং আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কাস্টডিতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।কিন্তু এর মধ্য দিয়ে দেশ এখন প্রবেশ করেছে এক জটিল ও অস্থির বাস্তবতায়-সেনাবাহিনী ও আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল এখন সরাসরি মুখোমুখি অবস্থানে।
“আজই আদালতে তোলা হোক, নতুবা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের বিজ্ঞাপন”-তাজুল ইসলাম
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আজ সাংবাদিকদের বলেন,“যারা সেনার হেফাজতে আছে, তাদের আজই আদালতে হাজির করা হোক। না হলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দিয়ে তাদের স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হবে।”
এই ঘোষণার পরই সেনা সদর দপ্তর ও ট্রাইব্যুনালের মধ্যে প্রশাসনিক টানাপোড়েন দেখা দেয়। দুপুরের পর আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত ১৫ কর্মকর্তাকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে হাজির করা হয়।এই বিলাসবহুল ভ্যান দেখে সাংবাদিক ও জনমনে প্রশ্ন-“গুম-খুনে অভিযুক্তদের জন্য এমন আরামদায়ক পরিবহন কেন?”“বিচারে কি এবার আইনও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়বে?”
আদালতের নির্দেশ ও সরকারের ভূমিকা
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ১৫ জনকে কারা কর্তৃপক্ষের হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।তাদের কোন কারাগারে বা সাব-জেলে রাখা হবে, সেটি এখন সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “আদালতের কাজ হলো অভিযুক্তদের কাস্টডিতে পাঠানো। কোথায় রাখা হবে সেটা কারা অধিদপ্তর বা সরকার নির্ধারণ করবে।”অর্থাৎ, আদালতের এখতিয়ার শেষ হয়েছে কাস্টডি পর্যন্ত-এখন সরকারের ওপর নির্ভর করছে তারা এই উচ্চপদস্থ অভিযুক্তদের কোথায় রাখবে, কেমন আচরণ করবে।
রাজনৈতিক নীরবতা ও জাতির ক্ষোভ
এই ঐতিহাসিক বিচারের মুহূর্তে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো-বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত জোট-নিরব।
তারা এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
রাজনীতিকদের মূল আগ্রহ এখন ক্ষমতা দখলে, বিচারে নয়।একজন বিশ্লেষক বলেন, “তারা ক্ষমতায় গেলে আবার এই অপরাধীদের সাথেই সমঝোতা করবে। যারা নির্যাতিত হয়েছে, নিহত হয়েছে, তাদের কোনো হিসাব তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের তালিকা (১৫ জন)
১.ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম
২️. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার
৩️.ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান
৪️.ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম
৫. ব্রিগেডিয়ার কে. এম. আজাদ
৬️.কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন
৭️.কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে)
৮️.লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান (র্যাব গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক)
৯️.লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন
১০. লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম
১১️. লে. কর্নেল মো. রেদোয়ানুল ইসলাম
১২️. মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম (বিজিবি)
১৩️. মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন (ডিজিএফআই সাবেক পরিচালক)
১৪️. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী
১৫️. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী
এই তিন মামলায় মোট আসামি ৩২ জন, যাদের মধ্যে ২৫ জনই সেনা কর্মকর্তা।অনেকেই এখনো পলাতক এবং তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে।
জাতির প্রশ্ন:এই অভিযুক্তদের রাখা হবে কোথায়-ঢাকা, চট্টগ্রাম নাকি কোনো গোপন সাব-জেলে?সেনা বাহিনী কি তাদের রক্ষা করতে চাইছে?সরকার কি এবার সত্যিই নিরপেক্ষ থাকবে, নাকি রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে?এই মামলাগুলোর বিচার প্রমাণ করবে-বাংলাদেশে আইন সবার জন্য সমান, নাকি ইউনিফর্মধারীদের জন্য এখনও আলাদা ব্যবস্থা আছে!
অনলাইনে পড়ুন:www.thenabajagaran.com
#আন্তর্জাতিক_ট্রাইব্যুনাল #সেনা_বিচার #মানবতাবিরোধী_অপরাধ #বাংলাদেশ #JusticeForBangladesh #Nabajagaran #আবু_তাহের_পাটোয়ারী




