পুলিশে বঞ্চিতরা বঞ্চিতই রয়ে গেল!

নবজাগরণ রিপোর্ট:
বাংলাদেশ পুলিশের পদোন্নতি ও পদায়ন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বৈষম্যের রাহু যেন কাটছেই না। বছরের পর বছর ধরে ডিআইজি পদে পদোন্নতির ফাইল ঝুলে থাকা এখন যেন একটি নিয়মে পরিণত হয়েছে। এতে বহু যোগ্য কর্মকর্তা পদোন্নতির ন্যায্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছেন-বঞ্চিতরাই বঞ্চিত রয়ে গেছেন।

সূত্র জানায়,উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) গ্রেড-৩-এর শূন্য পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া বহুদিন ধরেই স্থবির। ২০২২ সালের ১১ মে তারিখে ২০তম বিসিএসের ১৬ জন অফিসারকে ডিআইজি পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়,কিন্তু একই ব্যাচের অনেক কর্মকর্তা আজও সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত।

তথ্য অনুযায়ী,গত ২৯ মে পর্যন্ত ২৯টি ডিআইজি পদ শূন্য রয়েছে বলে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে লিখিতভাবে জানানো হয়। পরবর্তীতে ১১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১০১ জন কর্মকর্তার সারসংক্ষেপ ও প্রাসঙ্গিক নথি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠায়।

এছাড়া,গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন ও যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হওয়ার পরও পদোন্নতির বিষয়টি ফাইলবন্দি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে অনেক কর্মকর্তার মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে,আর এ অচলাবস্থার কারণে পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে।

অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা মনে করছেন,সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও রহস্যজনকভাবে পুলিশ ক্যাডারের পদোন্নতি ইস্যু আলোচনা থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছে। এতে প্রশাসনিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে এবং দক্ষ কর্মকর্তারা উৎসাহ হারাচ্ছেন।

জনমনে দীর্ঘদিন ধরেই পুলিশের ভাবমূর্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে চৌকস,সৎ ও মেধাবী কর্মকর্তাদের যথাসময়ে পদোন্নতি দেওয়া এবং সেবা-বান্ধব পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।

স্বচ্ছতা,যোগ্যতা ও ন্যায়ভিত্তিক পদোন্নতির মাধ্যমে পুলিশের অভ্যন্তরীণ সংকট নিরসনই হতে পারে একটি আধুনিক, জবাবদিহিমূলক ও জনগণের আস্থাভাজন পুলিশ বাহিনীর পথচলার নতুন সূচনা।