নবজাগরণ ডেস্ক-৪ জুলাই ২০২৫
যখন পুরনো রাজনৈতিক জোকাররা নীলব্লক ছেড়ে রাজপথে আসার সাহস পায় না, তখন একদল তরুণ তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত পায়ে হেঁটে প্রশ্ন তোলে—এই দেশ কার? এই গণতন্ত্রের মালিক কারা?
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’ এখন আর কোনো সাধারণ প্রচারাভিযান নয়। এটা হয়ে উঠেছে নতুন রাষ্ট্রচিন্তার একটি জীবন্ত আন্দোলন। আর এই বাস্তবতাকে সাহসিকতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তাঁর মতে, এটা “এক নতুন রাজনৈতিক ভোরের সূচনা”।
এক বছরের মধ্যে কীভাবে ছাত্ররা ইতিহাসের চাকা ঘুরিয়ে দিল?
এক বছর আগেও যারা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বারান্দায়, মিছিলের অগ্রভাগে, নিরাপত্তাবাহিনীর গুলির সামনে—তারা আজ কাঁধে ব্যাগ, হাতে পতাকা, কণ্ঠে স্লোগান নিয়ে হাঁটছে প্রান্ত থেকে প্রান্তে। শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে এই পদযাত্রা শুরু করে এনসিপি। সেই ছাত্র শহীদ, যে রাষ্ট্রের বৈষম্য-সৃষ্ট ভীত কাঁপিয়ে দিয়ে গিয়েছিল সাহসের অগ্নিবাণী।
শফিকুল আলমের ভাষায়, “এই সফর কেবল প্রচারণা নয়—এটি হয়ে উঠছে এক নতুন রাজনৈতিক ভোরের সূচনা, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যতের গতিপথ পাল্টে দিতে পারে।”
শহর থেকে গ্রাম, মোড় থেকে মাঠ—তরুণরা জেগে উঠেছে!
এই পদযাত্রা দেখিয়েছে, দেশের তৃণমূল আজো ন্যায়ের আশায় বুক বাঁধে। মোড়ের চায়ের দোকানে, কৃষকের মাঠে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের বারান্দায় একটাই আলোচনা—“নতুন কিছু কি সম্ভব?”
এ প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে এনসিপি’র পদযাত্রা—হ্যাঁ, সম্ভব। তবে তরুণদের হাতে, সততার রাজনীতির মাধ্যমে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তারা কি পারবে টিকে থাকা? পারবে কি রাজনীতির মাফিয়াদের ভাঙতে?
শফিকুলের নিজের প্রশ্ন:
“তারা কি পারবে সত্যিই টক্কর দিতে বিএনপি বা জামায়াতের মতো পুরনো দলের শক্তির বিরুদ্ধে?”
আমরা বলি—হ্যাঁ, যদি এই তরুণদের পাশে দাঁড়ায় সচেতন সাংবাদিক সমাজ, যদি তৃণমূলের শ্রমজীবী মানুষেরা তাদের চেতনার সঙ্গী হয়।
এক সাংবাদিক হিসেবে আজই সময় মাঠে নামার?
শফিকুল আলম সরাসরি সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, “এটা শুধুই খবর নয়—এটা ইতিহাস নির্মাণের অংশ।”
আজ যারা ক্যামেরা হাতে এই পদযাত্রার গল্প বলছে, কাল তারা জাতির ভবিষ্যৎ ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিলের স্রষ্টা হতে পারে।
ফেসবুক, এক্স, ইউটিউব—যা-ই হোক, এই রূপান্তরকালে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণই সাংবাদিকতার প্রকৃত দায়িত্ব।
পুরনো রাজনীতির খোলস ভেঙে নতুন সংবিধান চাই
জুলাই পদযাত্রা কেবল একটি দলের সমর্থন নয়। এটা একটি আদর্শের যাত্রা—যেখানে জনগণের ওপর রাষ্ট্রের দাসত্ব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
এটা সেই মঞ্চ, যেখান থেকে উঠে আসছে নতুন সংবিধানের দাবি। নতুন রাজনৈতিক শৃঙ্খলা, অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, শিক্ষার বৈপ্লবিক রূপান্তর এবং সর্বোপরি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মৌলিক পুনর্গঠন।
জাগ্রত ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আনা স্বাধীনতা, এবার নতুন চুক্তির ডাক
যারা ভেবেছিল বাংলাদেশের তরুণরা নিঃশেষ হয়ে গেছে, তাদের জন্য ‘জুলাই পদযাত্রা’ এক নবজাগরণের সাইরেন। এই সাইরেন এখন কেবল এনসিপি’র নয়—এটা সমগ্র তরুণ প্রজন্মের নতুন রাষ্ট্রচুক্তির সংকেত।
তাই, সাংবাদিক হোন বা পাঠক, রাজনীতিক হোন বা রিকশাচালক—এই যাত্রা আপনাকে ডাকে।
আপনি কী প্রস্তুত ইতিহাসের সঙ্গী হতে?
ট্যাগস: জাতীয় নাগরিক পার্টি, এনসিপি, জুলাই পদযাত্রা, তরুণ রাজনীতি, ছাত্র আন্দোলন, ইতিহাস নির্মাণ, শফিকুল আলম।