নোয়াখালীর জলাবদ্ধতা, দুর্যোগ ও সম্ভাবনার গল্প

নবজাগরণ ডেস্ক:
নোয়াখালী আজ এক ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি। অতিবৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মানুষের জীবন। প্রতি বছরকার মতো এবারও জলাবদ্ধতা, খাল দখল, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ, ও প্রশাসনিক অবহেলা-সব মিলিয়ে জনজীবন রুদ্ধ।

❝এই সংকট প্রাকৃতিক যতটা না, মানবসৃষ্ট তার চেয়েও বেশি❞-এই অভিযোগ বারবার উঠে আসছে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের কণ্ঠে।

নোয়াখালীর খাল, নদী ও প্রাকৃতিক নালা গুলো পরিকল্পিতভাবে দখল হয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক পথগুলো বন্ধ হয়ে আছে। ফলে একটুখানি বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতা, ফসলের ক্ষতি, বাড়িঘর প্লাবিত, রাস্তাঘাট চলাচলের অনুপযোগী।

অথচ, এই নোয়াখালী শুধু দুর্যোগের গল্প নয়-এটি সম্ভাবনার ভূখণ্ড।

শিল্পের বিকাশ:
নোয়াখালীর অসংখ্য উদ্যমী শিল্প উদ্যোক্তা দেশীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। গড়ে তুলেছেন ছোট বড় ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান।

রপ্তানি ও কর্মসংস্থান:
স্থানীয় শিল্প থেকে তৈরি পণ্য রপ্তানি হচ্ছে দেশের বাইরেও। সৃষ্টি হয়েছে হাজারো কর্মসংস্থান।

শিক্ষা ও উদ্ভাবন:
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই অঞ্চলের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

ব্যবসা ও কৃষি:
বহু পরিবার এখন কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে স্থানীয় ও জাতীয় বাজারে সরবরাহ করছে।

আমরা বলছি-নোয়াখালীকে বাঁচান, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিন!
এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা, জলাবদ্ধতা, নদী ভাঙন-সবই প্রতিরোধযোগ্য, যদি সরকার আন্তরিক হয়, যদি স্থানীয় প্রশাসন জবাবদিহিতার মধ্যে আসে, যদি দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করা যায় জলপথ ও খালগুলো।

দাবি ও প্রস্তাবনা
১. অবিলম্বে খাল দখলমুক্ত করে পানিপ্রবাহ পুনরুদ্ধার
২. আধুনিক ও টেকসই ড্রেনেজ ব্যবস্থা
৩. জরুরি ত্রাণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা
৪. স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা
৫. নোয়াখালীর জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নদী ও জলাভূমি রক্ষা নীতিমালা

“যেখানে জল থেমে থাকে, সেখানেই জীবন থেমে যায়। আর যেখানে মানুষের শক্তি জেগে ওঠে, সেখানেই জন্ম নেয় সম্ভাবনার নতুন নকশা।”
নোয়াখালীকে জাগিয়ে তুলুন, দেশ জাগবে।
“নোয়াখালীর জলপথে কাঁদে মাটি”

— নবজাগরণ কবিতা

খালের বুকে দখলের ছায়া,
জল বয়ে না, থমকে যায়।
বৃষ্টির কণা নামে অশ্রু হয়ে,
ঘরদুয়ার ডোবে, প্রাণ কাঁদে চুয়ে চুয়ে।

মাটির বুক ফাটে আর্তনাদে,
ধানের ক্ষেতে আজ হাহাকার।
জলাবদ্ধ সেই নোয়াখালী
কবে পাবে মুক্তির দ্বার?

দোষ কার, প্রশ্ন জাগে-
অবহেলা, লোভ, নাকি খাল খেকো ভাগে?
শুধু ভোট এলে দেখে তারা
বাকিটা সময়-ঘুমের খাচায় সারা।

তবু এ মাটি হারে না কভু,
শ্রমজীবী স্বপ্ন গড়ে খুঁটিনাটিতে।
শিল্পে, রপ্তানিতে, শিক্ষার জোয়ারে-
উঠছে নোয়াখালী নতুন আলোয়ারে।

যত বাধা আসুক, যত দুঃখ দিক,
এই মাটির সন্তান-অদম্য, সাহসিক।
আমরা বলি, বাঁচাও খাল, ফেরাও পথ,
তবে জাগবে দেশ, পাবে নতুন রথ।