লড়াই করেই স্বৈরাচার হটিয়েছি কারো সাথে আপোষ করিনি – আবদুল্লাহ্ আল বেরুনী সৈকত

কে.এ.সাদাতঃ দীর্ঘদিন রাজপথে সংগ্রাম ও লড়াই করে জনগণকে সাথে নিয়ে স্বৈরাচার হটিয়েছি কিন্তু বিরোধীদের সাথে কখনো আপোষ করিনি। এ কথা বলেছেন পিরোজপুর ০২ সংসদীয় আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেসারাবাদ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুল্লাহ্ আল বেরুনী সৈকত। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি স্বরুপকাঠী কলেজিয়েট একাডেমীর ৪ দিন ব্যাপী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্ভোধন উপলক্ষে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। তিনি আরো বলেন দেশ আজ দানবীয় স্বৈরাচারী দুঃশাসন থেকে মুক্ত হয়েছে বলে আজ এই মনোরম পরিবেশে সকলে সম্মিলিভাবে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পেরেছি। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলু, স্বরুপকাঠী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব কাজী মো. কামাল হোসেন প্রমূখ। উল্লেখ্য আবদুল্লাহ্ আল বেরুনী সৈকত স্বরুপকাঠী কলেজিয়েট একাডেমির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার পিতা স্বরুপকাঠী উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী অধ্যক্ষ এম এ হাকিম উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ দিন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। পিতার যোগ্য উত্তরসূরী হিসাবে তিনি রাজনৈতিক অংগন সহ সর্বত্র যোগ্যতার প্রমান রেখে চলেছেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারী পিরোজপুর জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে নেসারাবাদ উপজেলা বিএনপির শত শত নেতাকর্মীকে নেতৃত্ব দিয়ে সমাবেশে অংশ গ্রহন করেন। উক্ত সমাবেশে নেসারাবাদ উপজেলা বিএনপির সমালোচিত নেতাদের দেখা মেলেনি। নেসারাবাদ উপজেলা বিএনপিতে তার ক্লিন ইমেজের কারণে তার নেতৃত্বের প্রতি রয়েছে দলের নেতা কর্মীদের নিরংকুশ সমর্থন।

এ প্রতিবেদকের সাথে দেয়া এক স্বাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আদর্শ লালন করে চলেছি। বিগত আওয়ামী স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে নেতা কর্মীদের নিয়ে রাজপথে থেকেছি। নিজের গা বাঁচানোর জন্য কখনো আওয়ামী লীগের দালালী করেনি । আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রীদের সাথে একই স্টেজে অবস্থান করে তাদের গুনগানে মত্ত হইনি। নেসারাবাদ উপজেলার অনেক নেতা কর্মীকে বিগত স্বৈরশাসকের জমানায় জেল জুলুম, হামলা মামলার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমাকেও পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হতে হয়েছে।
আপনাদের উপজেলা পর্যায়ের কোনো কোনো শীর্ষ নেতাকে বিগত স্বৈরাচারী দলের এমপি, মন্ত্রী ও স্হানীয় নেতাদের সাথে এমন ভাবে দহরম মহরম দেখা গেছে এবং শেখ হাসিনার উন্নয়ন নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করতে দেখা গেছে তাতে মনে হয়েছে তারা আওয়ামী লীগেরই নেতা। এ প্রশ্নের জবাবে আব্দুল্লাহ্ আল বেরুনী সৈকত বলেন, এরা সুবিধাভোগী এবং রাজনৈতিক ব্যাবসয়ী। তারা রাজনীতিকে পুঁজি করে ঘরে বাইরে দুদিক থেকেই ব্যাবসা করছে এবং নিজেকে সবসময় নিরাপদ রাখছে। কিন্তু রাজনীতির মাঠে এখন তারা কোনঠাসা অবস্থায় রয়েছে।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের আপনাদের উপর ক্ষোভ রয়েছে যে, আপনারা ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করে আওয়ামী লীগের দোসর ও হাইব্রিডদের দিয়ে দল চালানোর চেষ্টা করছেন। মন্তব্যে তিনি বলেন, কোনো কোনো নেতার ব্যাপারে বিষয়টির সত্যতা আছে কিন্তু আমার নীতি ভিন্ন। দুর্দীনের সহযোদ্ধারাই আমার নিকট দামী। তাদেরকে মূল্যায়ন না করা আওয়ামী লীগকে মূল্যায়ন করার শামিল।
আপনাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন করার অভিযোগ রয়েছে তা কি আপনাদের জন্য আত্মঘাতী হবে না? উত্তরে তিনি বলেন, উপজেলা বিএনপি কোনো আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছে না। যদি কোনো অভিযোগ উঠে তা দলের নয় ব্যাক্তির। যারা বিগত স্বৈরাচারীদের সাথে আঁতাত করে চলেছে তারা কৃতজ্ঞতা স্বরুপ আওয়ামী লীগকে পূনর্বাসনের চেষ্টা করছে। এটা হবে ব্যাক্তির জন্য আত্মঘাতী। দলের জন্য নয়।
সাবেক সাংসদ সৈয়দ শহিদুল হক জামাল এর এপিএস ফকির নাসির উদ্দীন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সে বিএনপির কোনো নেতা বা কর্মী নয়। সে কোন দলে আছে তা আমার জানা নাই।
সবশেষে তিনি বলেন, দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল হিসেবে আপাতত দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। এখন ভোটের অধিকারের মাধ্যমে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য।